সমগ্ৰ ভারতের বেকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে দুর্দান্ত নিয়োগের সুখবর। বর্তমানে ভারতীয় রেল বিভাগের অধীনে মোট গ্ৰুপ ‘সি’ পদের সংখ্যা হল প্রায় ১৪ লক্ষেরও বেশি। যার মধ্যে ট্র্যাকপার্সন, পয়েন্টসম্যান, বিদ্যুৎকর্মী, সিগনাল এবং টেলিফোন অপারেটিং, ইঞ্জিনিয়ার, টেকনিশিয়ান্স, করণিক, গার্ড বা ট্রেন ম্যানেজার, স্টেশন মাস্টার, টিকিট কালেক্টর এইসব পদগুলি মিলিয়ে বর্তমানে মোট ৩ লক্ষ শূন্যপদ খালি পড়ে রয়েছে। আর সেই কারণেই পর্যাপ্ত পরিমাণ কর্মীর অভাবে এইসব পদের কাজকর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতি মূহুর্তে বিঘ্নিত হচ্ছে রেল পরিষেবা। তাই যত শীঘ্র সম্ভব এই ৩ লক্ষ শূন্যপদ পূরনের জন্য ভারতীয় রেল বিভাগের তরফ থেকে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য তোড়জোড় চলছে। সুতরাং একসঙ্গে এই ৩ লক্ষ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে যে ভারতের ক্রমশ উর্ধ্বগামী বেকারত্বের সংখ্যা একেবারেই অনেকটা হ্রাস পাবে তা বলাই বাহুল্য।
দীর্ঘ দু-বছর যাবৎ করোনা মহামারীর কারনে অন্যান্য সব সরকারি দপ্তর গুলির মতো ভারতীয় রেল বিভাগেও কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোপুরি ভাবে বন্ধ ছিল। তার ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই ৩ লক্ষ শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। তবে বছর খানেক হল করোনা মহামারীর কবল থেকে আমাদের দেশ আগের তুলনায় বেশ অনেকটাই মুক্ত। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এই শূন্যপদ গুলি পূরনের জন্য কোনো রকম কোনো তাগিদ দেখা যাচ্ছে না। উল্টে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে নতুন করে “বন্দে ভারত” সহ আরও কয়েকটি বুলেট ট্রেন চালু করা হয়েছে। একের পর এক নতুন নতুন ট্রেন চালু করা হচ্ছে কিন্তু কর্মীর সংখ্যা বিন্দুমাত্র বাড়ানোর নাম নেই। ভারতীয় রেলের অধীনে কর্মীর সংখ্যা আগে যা ছিল এখনও তাই আছে। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই রেল বিভাগে কর্মরত কর্মীদের উপর কাজের চাপ দিনে দিনে ক্রমশ বেড়েই চলেছে। তারা ডবল সিফ্টে কাজ করেও কুল কিনারা পাচ্ছেন না
এই বিষয়ে ভারতীয় রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারীক জানিয়েছেন যে এই কর্মী সমস্যার বিষয়টি ভারতীয় রেলমন্ত্রী অস্বিনী বৈষ্ণব থেকে শুরু করে অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানলেও তাতে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ ই নেই। উল্টে তারা ভারতীয় রেলকে বেসরকারি করনের পথ হাঁটাতে শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় রেলকে কেন্দ্র করে “বন্দে ভারত” সহ একাধিক বুলেট ট্রেন চালু করে ভারতীয় রেলকে আরও বেশি বিলাসবহুল করার স্বপ্ন পূরণের পথে হেঁটে চলেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এইসব কার্যকলাপ এর বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষের দলনেতারা কটাক্ষ করে এই রুপ মন্তব্য ই প্রকাশ করেছেন যে এই সবই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ভোট কেনার ফাঁদ। তবে বিরোধী পক্ষ যাই মন্তব্য প্রকাশ করুক না কেন ভারতীয় রেলে এই ৩ লক্ষ শূন্যপদের কারনে যে চরম কর্মী সংকটের সৃষ্টি হয়েছে অবিলম্বে যে তার সমাধান করা উচিত তা মেনে নিয়েছেন রেলমন্ত্রী অস্বিনী বৈষ্ণব। সম্প্রতি রাজসভায় অনুষ্ঠিত এক অধিবেশনে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে অতি দ্রুত যেন ভারতীয় রেল বিভাগের অধীনে নিরাপত্তা এবং টেকনিক্যাল শাখায় যে শূন্যপদ গুলি তৈরি হয়েছে সেগুলি পূরণ করা হয়। তবে ঠিক কতদিনের মধ্যে এই ৩ লক্ষ শূন্যপদ পূরণের জন্য ভারতীয় রেল বিভাগের তরফ থেকে অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদন পত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে খুব শীঘ্রই এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে আশা করা হচ্ছে।
MORE JOB NEWS: CLICK HERE