নতুন এক প্রকল্প চালু করে রাজ্যের প্রতিটি দরিদ্র কৃষক পরিবারকে ৬০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। যার ফলে রাজ্যের বেশ কিছু সংখ্যক দরিদ্র কৃষক পরিবার ভীষণ ভাবে উপকৃত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। ভারতের প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে আর্থিক সাহায্য দানের উদ্দেশ্যে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বেশ কয়েক বছর আগেই “কৃষক সন্মান নিধি” বলে এক প্রকল্প চালু করেছেন। যার মাধ্যমে ভারতের প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়। আর এবারে এই “কৃষক সন্মান নিধি” এর অনুকরণেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও সেই রাজ্যের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর কৃষককে চাষ বাসের ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য দানের উদ্দেশ্যে চালু করা হল একটি বিশেষ প্রকল্প। যার মাধ্যমে সেই রাজ্যের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর কৃষককে বার্ষিক ৬,০০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করবে রাজ্য সরকার। সুতরাং এরফলে এবার থেকে “কৃষক সন্মান নিধি” এর দরুন ৬,০০০ টাকা এবং এই নতুন প্রকল্পের দরুন ৬,০০০ টাকা। সব মিলিয়ে বছরে মোট ১২,০০০ টাকা করে সরকারি ভাতা পাবেন রাজ্যের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর কৃষক।
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের এই দেশ ভারতবর্ষ। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই ভারতবর্ষ হল একটি কৃষি নির্ভর দেশ। আর এই কথা আমাদের কারোরই অজানা নয়। বছরের পর বছর যুগের পর যুগ ধরে এই কৃষি শিল্পই ভারতীয় অর্থনীতির বুনিয়াদ কে ক্রমশ শক্তিশালী করে তুলছে। ভারতে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে ভারত প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণ অর্থ লাভ করে যা ভারতীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলার মূল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। আর সেই কারণেই ব্রিটিশ সরকার টানা ১০০ বছর আমাদের দেশে রাজত্ব চালিয়েছিল।
কিন্তু এই যে ভারতে উৎপাদিত কৃষিজ সম্পদ বিদেশে রপ্তানি করে ভারত প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে সেই সব কৃষিজ সম্পদ গুলি তো আর নিজে নিজে উৎপাদিত হতে পারে না। কাউকে না কাউকে কষ্ট করে এগুলি উৎপাদন করতে হবে। আর তাই বছরের পর বছর যুগের পর যুগ ধরে রোদে পুড়ে জলে ভিজে ভারতের কৃষক সমাজই
এই সব কৃষিজ সম্পদ উৎপাদন করে চলেছেন আর সেগুলি দেশে বিদেশে বিক্রি করে ভারতীয় অর্থনীতি দিনে দিনে ক্রমশ আরও বেশি চাঙ্গা হয়ে উঠছে। আর তাই কৃষিজ সম্পদকে ভারতীয় অর্থনীতির মূল স্তম্ভ করে তোলার পিছনে সম্পূর্ণ অবদান যে ভারতীয় কৃষক সম্প্রদায়ের তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে যে মানুষ গুলো ভারতের কৃষি শিল্পকে ভারতীয় অর্থনীতির শ্রেষ্ঠ বুনিয়াদ বানাল সেই কৃষক সমাজের দুঃখ দুর্দশা নিয়ে আমরা কেউ কি কোনো দিনও বিন্দু মাত্র চিন্তা করেছি? করিনি। সেই সৃষ্টির আদিকাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ভারতীয় কৃষক সমাজের প্রতিটি মানুষ একই রকম ভাবে প্রতিনিয়ত আর্থিক দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। আজ পর্যন্ত তাদের আর্থিক অবস্থার একটুকুও উন্নতি হয়নি। অর্থাৎ তারা যে তিমিরে পড়ে ছিলেন এখনকার দিনে দাঁড়িয়ে ও সেই তিমিরেই পড়ে আছেন। কিন্তু এভাবে তো আর বেশিদিন চলতে দেওয়া যায় না। তাই ভারতীয় কৃষক সমাজকে আর্থিক দিক দিয়ে কিছুটা হলেও স্বচ্ছল করে তোলার জন্য আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই কৃষক সন্মান নিধি বলে একটি প্রকল্প চালু করেছেন। যার মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিটি কৃষককে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়। এছাড়াও যাতে তাদের চাষ বাসের কাজে কোনো টাকা পয়সার অভাব না হয় সেই জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেশের প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে অত্যন্ত স্বল্প সুদে কৃষি ভিত্তিক ঋন দানেরও ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
তবে শুধুমাত্র এতটুকু করেই আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী থেমে থাকেননি। তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে ভারতীয় কৃষক সমাজের জন্য এক সুনিশ্চিত ভবিষ্যত গড়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে তাদের ৬০ বছর বয়স হওয়া মাত্রই প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে পেনশন বা ভাতা দেওয়া শুরু করেছেন। এই ভাতা তিনি এই কারনেই দেওয়া শুরু করেছেন যাতে করে ৬০ বছর বয়সের পর যখন দরিদ্র কৃষকেরা আর পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না তখন যাতে এই পেনশনের টাকায় তারা তাদের বৃদ্ধ বয়সের জীবন অতিবাহিত করতে পারেন। এর পাশাপাশি আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ২০২১ সালের জুন মাস নাগাদ “কৃষক বন্ধু” নামক এক জনমুখি প্রকল্প চালু করেছেন যার আওতায় রাজ্যের প্রান্তিক চাষি ভাইদের কৃষি কাজের সুবিধার্থে নগদ ২০০০ টাকা থেকে ৫০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এই প্রকল্পের টাকায় রাজ্যের কৃষকরা তাদের চাষের কাজের সার ,বীজ, কীটনাশক থেকে শুরু করে যাবতীয় আনুসাঙ্গিক জিনিস পত্র সহজেই কিনতে পারেন।
আর এবারে মহারাষ্ট্র সরকার আরও এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে ওই রাজ্যের দরিদ্র শ্রেণীর কৃষকদের চাষ বাসের ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য দানের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক প্রচলিত “কৃষক সন্মান নিধি” এর অনুকরণে এক নতুন প্রকল্প কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর কৃষককে চাষ বাসের জিনিস পত্র কেনার জন্য আর্থিক সাহায্য দানের উদ্দেশ্যে বার্ষিক ৬,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক জানানো হয়েছে যে এই নতুন প্রকল্প কার্যকর হলে মহারাষ্ট্রের মোট ১.৫ কোটির বেশি কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করবেন। অর্থাৎ এই প্রকল্প চালু হলে মহারাষ্ট্রের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর কৃষক প্রধানমন্ত্রী “কৃষক সন্মান নিধি” এর দরুন ৬,০০০ টাকা এবং এই নতুন প্রকল্পের দরুন ৬,০০০ টাকা সব মিলিয়ে বছরে মোট ১২,০০০ টাকা করে সরকারি ভাতা পেতে চলেছেন।
MORE JOB NEWS: CLICK HERE
চাকরির সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL: CLICK HERE