সমগ্ৰ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি কর্মহীন বেকার যুবক যুবতীদের জন্য সুখবর। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আরও এক নতুন ও বিশেষ প্রকল্প চালু করে রাজ্যের প্রতিটি বেকার যুবক যুবতীকে ৫০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের জন্য চালু করা এই প্রকল্পে আবেদন করার কিছু দিনের মধ্যেই আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এই প্রকল্পের টাকা ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে বলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হলেই রাজ্যের যে কোনো জেলা থেকে সকল যোগ্যতার বেকার যুবক যুবতীরা এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই প্রকল্পের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ জেনে নেওয়া যাক।
২০১১ সালে প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীর সার্বিক কল্যাণের জন্য একের পর এক নতুন নতুন প্রকল্প চালু করে চলেছেন। সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তার উদ্যোগে চালু হওয়া মোট জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সংখ্যা হল ১০০ টির ও বেশি। রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের উদ্দ্যেশ্যে চালু করা প্রকল্প গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কর্মদিশা, কর্মতীর্থ, গতিধারা ইত্যাদি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্প গুলির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যের বহু বেকার যুবক যুবতী নিজেদের কর্মসংস্থানের দিশা খুঁজে পেয়েছেন।
আর ঠিক সেই ভাবেই আবারও রাজ্যের সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করার জন্য রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু করা হল একটি বিশেষ প্রকল্প। সমগ্ৰ রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের মৎস্য চাষের মাধ্যমে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করার জন্যই নতুন এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই নতুন প্রকল্প যে শুধুমাত্র রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের জন্যই চালু করা হয়েছে এমনটা নয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের পাশাপাশি উপকৃত হতে চলেছেন সমগ্ৰ রাজ্যের মৎস্যজীবীরা ও। রাজ্য সরকারের এই নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের ৯ হাজার মৎস্যজীবী উপকৃত হতে চলেছেন বলে সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে।
কারা কারা এই প্রকল্পে আবেদন করার যোগ্য?
এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য যারা যারা আবেদন করতে পারবেন তারা হলেন-
যে সমস্ত মৎস্যজীবীরা নিজেরা ছোটো মাছের চারা কিনে অন্য কারোর পুকুরে সেগুলিকে বড়ো করে বাজারে বিক্রি করেন মূলত এই প্রকল্পের মাধ্যমে তাদেরকেই ৫০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।
এই প্রকল্পের শর্তগুলি কি কি?
মৎস্য চাষের মাধ্যমে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা এই প্রকল্পের বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এই প্রকল্পের শর্তগুলি হল-
১) এই প্রকল্পে আবেদন করার পর যাদেরকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০০০ টাকা করে দেওয়ার জন্য যোগ্য বলে মনে করা হবে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথমে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১০০০ টাকা করে ট্রান্সফার করা হবে।
২) তারপর সেই টাকা দিয়ে ছোটো মাছের চারা কিনে সেগুলিকে চাষ করে বড়ো করে বাজারে বিক্রি করে কত টাকা আয় হয়েছে সেটা জানালে অর্থাৎ এই ১০০০ টাকার ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
৩) এই সার্টিফিকেট জমা পড়ার পর সব কিছু বিচার করে দেখে যাদেরকে বাকি টাকা দেওয়ার জন্য যোগ্য বলে মনে করা হবে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দ্বিতীয় ধাপের ১০০০ টাকা ট্রান্সফার করা হবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার কতজন মৎস্যজীবি সরকারের তরফ থেকে এই অনুদান পাবেন তার তালিকাও ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। এবং সেই তালিকা অনুযায়ী জানা গিয়েছে হুগলি, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে মোট ৬৫৭ জন করে মৎস্যজীবী, বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলা থেকে ৫৪৮ জন করে মৎস্যজীবী এই প্রকল্পের আওতায় অনুদান পাবেন বলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা নতুন এই প্রকল্পের খবর পেয়ে রাজ্যের প্রতিটি জেলার বেকার যুবক যুবতী থেকে শুরু করে মৎস্য চাষীরাও যে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর একটি সঠিক উপায় খুঁজে পাবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।