নতুন এক প্রকল্প চালু করে দেশের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেবলমাত্র ভারতের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হলেই এবং ১৮ বছরের উর্ধ্বে বয়স হলেই যে কোনো দরিদ্র শ্রেণীর দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে মাসিক ৫,০০০ টাকা করে ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এমনকি এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতারও প্রয়োজন নেই। শিক্ষিত অশিক্ষিত সকল যোগ্যতার মানুষেরাই এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ লাভ করার পর থেকেই আমাদের দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের জনগণের মঙ্গলার্থে একাধিক প্রকল্প চালু করেছেন যেগুলির অবদান প্রতিটি ভারতবাসীর জীবনে সত্যিই অনস্বীকার্য। দেশের প্রতিটি জনগণকে ব্যাঙ্কমুখী করে তোলার জন্য আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিছু বছর আগেই জনধন যোজনা প্রকল্পের মাধ্যমে জিরো ব্যালেন্সে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন। কন্যা সন্তান নিয়ে বাবা মায়ের ভাবনা দূর করতে ‘সু-কন্যা সমৃদ্ধি যোজনা’ চালু করেছেন। দেশের দরিদ্র কৃষক শ্রেনীর মানুষদের মঙ্গলার্থে তিনি চালু করেছেন মানধন যোজনা ও কৃষক সন্মান নিধি। দেশের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের মঙ্গলার্থে চালু করেছেন বিভিন্ন ধরনের ন্যাশানাল স্কলারশিপ। দেশের বেকার যুবক যুবতীদের মঙ্গলার্থে চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা নামক কর্মমুখী প্রশিক্ষণ এবং রোজগার মেলা। এছাড়াও দেশের শিক্ষিত ও অশিক্ষিত প্রতিটি বেকার মহিলাদের মঙ্গলার্থে তাদেরকে ফ্রি তে একটি করে সেলাই মেশিন দেওয়া চালু করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্প গুলির আওতায় এসে আমাদের দেশের বহু জনগন ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রকম ভাবে উপকৃত হয়েছেন।
আর আজ আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা যে প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করব তার নাম হল “অটল পেনশন যোজনা”। এই প্রকল্প নতুন নয়। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার পরই ২০১৫ সালে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের দরিদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মঙ্গলার্থে চালু করেছেন অটল পেনশন যোজনা। এই যোজনার মাধ্যমে প্রতিটি দরিদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ৬০ বছর বয়সের পর যখন তারা আর খেটে রোজগার করার মতন অবস্থায় থাকেন না তখন তাদের বার্ধক্য জীবনে অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসার খরচ চালাতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া হয়। যেহেতু এই প্রকল্পটি নতুন নয় অনেক বছর আগেই এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে তাই এই প্রকল্পের বিষয়ে আশা করি আপনারা সকলেই জানেন এবং ইতিমধ্যেই অনেকে হয়তো এই প্রকল্পের সুবিধাও ভোগ করছেন। তবুও যদি এমন হয় যে কেউ এই প্রকল্পের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত অবগত নন বা জানলেও সেভাবে বিশদে কিছু জানেন না বিশেষ করে তাদের জন্যই আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। নীচে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
“অটল পেনশন যোজনা” এর জন্য আবেদন করার শর্তাবলী?
এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্তাবলী রয়েছে। সেগুলি হল-
১) এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮-৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
২) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
৩) আবেদনকারীর নিজের আধার কার্ড থাকতে হবে।
৪) আবেদনকারীর বার্ষিক আয় খুবই কম হতে হবে।
৫) এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করার পর আবেদনকারীকে প্রতি মাসে ১৪৫৪ টাকা করে জমা রাখতে হবে। তবেই যখন তার ৬০ বছর বয়স হবে তখন থেকে তিনি প্রতি মাসে ১০০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত পেনশন পাবেন।
৬) এই প্রকল্পের আওতায় টাকা বিনিয়োগ করতে হলে বিনিয়োগকারীকে অন্তত পক্ষে ২০ বছরের জন্য টাকা বিনিয়োগ করতেই হবে। তবেই তিনি ৬০ বছর বয়সের পর পেনশন পাবেন। নচেৎ নয়।
“অটল পেনশন যোজনা” এর মাধ্যমে কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
এই যোজনার আওতায় ১৮-৪০ বছর বয়সের মধ্যের কোনো দরিদ্র শ্রেণীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যদি নিজের নাম নথিভুক্ত করে প্রতি মাসে মাসে অন্তত পক্ষে ১৪৫৪ টাকা করে জমা রাখেন তাহলে তার যখন ৬০ বছর বয়স হবে তখন থেকে তিনি প্রতি মাসে মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ১০০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত পেনশন পাবেন। এই প্রকল্পের আওতায় যত বেশি পরিমাণ টাকা জমা রাখা যাবে তত বেশি পরিমাণ টাকা পেনশন হিসেবে পাওয়া যাবে।
এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে?
প্রধানমন্ত্রী “অটল পেনশন যোজনা” প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনাকে আপনার নিকটবর্তী যে কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে গিয়ে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে সবকিছু জেনে তারপর সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়ে এই প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করে প্রতি মাসে মাসে টাকা জমা রাখতে হবে।
কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি বর্তমানে দেশের সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিস গুলিতে ই চলছে। এবং এর কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। তাই আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী শনিবার ও রবিবার বাদে যেদিন খুশি আবেদন করতে পারবেন।