আমাদের রাজ্যের দরিদ্র শ্রেণীর পড়ুয়াদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে সাহায্য করার জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু করা হল আরও একটি বিশেষ প্রকল্প। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে এই প্রকল্পের আওতায় যে সব ছাত্র ছাত্রীরা নাম নথিভুক্ত করবে তাদের প্রত্যেককে বছর বছর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্কলারশিপ হিসেবে দেওয়া হবে যাতে অর্থের অভাবে আমাদের রাজ্যের যে সব পড়ুয়ারা লেখাপড়ার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তারা যাতে এই স্কলারশিপের অর্থ দিয়ে নিজেদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারে। রাজ্যের দরিদ্র শ্রেণীর পড়ুয়াদের লেখাপড়ার বিষয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর এই বিশেষ উদ্যোগ। তবে হ্যাঁ এক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২০১১ সালে প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীর সার্বিক কল্যাণের জন্য একের পর এক নতুন নতুন প্রকল্প চালু করে চলেছেন। সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তার উদ্যোগে চালু হওয়া মোট জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সংখ্যা হল ১০০ টির ও বেশি। তার মধ্যে রাজ্যের মহিলাদের জন্য চালু করা প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প, রাজ্যের পড়ুয়া ছাত্রীদের জন্য চালু করা প্রকল্প হল কন্যাশ্রী প্রকল্প, রাজ্যের বিবাহ যোগ্যা যুবতীদের জন্য চালু করা প্রকল্প হল রূপশ্রী প্রকল্প, রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের উদ্দ্যেশ্যে চালু করা প্রকল্প গুলি হল কর্মদিশা, কর্মতীর্থ, গতিধারা ইত্যাদি, রাজ্যের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ার সাহায্যার্থে চালু করা প্রকল্প হল স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড, সকল সাধারণ মানুষের কল্যানার্থে চালু করা প্রকল্প গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী ইত্যাদি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্প গুলির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যের বহু নাগরিক বিভিন্ন রকম ভাবে উপকৃত হয়েছেন।
আর আজ আমরা তার উদ্যোগে চালু হওয়া যে নতুন প্রকল্পটির বিষয়ে আপনাদেরকে জানাতে চলেছি সেটি তিনি একান্ত ভাবেই আমাদের রাজ্যের পিছিয়ে পড়া শ্রেনী অর্থাৎ তপশিলি জাতি এবং উপজাতি পড়ুয়াদের লেখাপড়ার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে চালু করেছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের তপশিলি জাতি এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠরত পড়ুয়াদের প্রত্যেককে বার্ষিক ৮০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে স্কলারশিপ হিসেবে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই বিশেষ প্রকল্পের নাম হল “শিক্ষাশ্রী প্রকল্প”। বেশ কিছু বছর আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগে এরাজ্যের সংরক্ষিত শ্রেনীর ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে সাহায্য করার জন্য এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের আওতায় এসে আমাদের রাজ্যের বহু তপশিলি জাতি এবং উপজাতির পড়ুয়ারা বিশেষ ভাবে উপকৃত হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও আরও বহু পড়ুয়া উপকৃত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক। নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
“শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে” আবেদন করার শর্তাবলী:-
“শিক্ষাশ্রী প্রকল্প” এর আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকতে হবে তবেই তিনি এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন নচেৎ নয়। এবং সেই যোগ্যতা গুলি হল-
১) আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২) আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীকে অবশ্যই তপশিলি জাতি এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।
৩) আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত যে কোনো একটিতে পাঠরত অবস্থায় থাকতে হবে।
৪) এক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকার নীচে হতে হবে।
৫) এই ধরনেরই অন্য কোনো প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছে এমন কোনো ছাত্র বা ছাত্রী এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য যোগ্য নন।
৬) আবেদনকারী পড়ুয়ার নিজের নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
৭) এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য ইচ্ছুক পড়ুয়াকে সে যেই স্কুলে বর্তমানে পাঠরত অবস্থায় রয়েছে সেই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
“শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে” আবেদন করার নিয়মাবলী:-
এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারী পড়ুয়াকে google search box এ Shikshasree বলে search করতে হবে। এরপর ওয়েবসাইট খুললে সেখানে গিয়ে একের পর এক নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
প্রয়োজনীয় প্রমান পত্র:-
“শিক্ষাশ্রী প্রকল্প” এর জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে সেগুলি হল-
১) আধার কার্ড স্ক্যান করা।
২) BDO অফিসারের দেওয়া স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৩) ইনকাম সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৪) কাস্ট সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৫) রিসেন্ট তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
৬) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রথম পাতা স্ক্যান করা।
আবেদনের সময়সীমা:-
এই প্রকল্পের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা নেওয়া বর্তমানে চলছে এবং এর জন্য কোনো রকম শেষ সময়সীমা ধার্য্য করা হয়নি। পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর মধ্যে যে কোনো একটিতে পাঠরত সংরক্ষিত শ্রেনীর ছাত্র ছাত্রীরা যেদিন খুশি আবেদন করতে পারবেন।