পশ্চিমবঙ্গের ন্যুনতম অষ্টম শ্রেণী পাস থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত প্রতিটি কর্মহীন বেকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য দুর্দান্ত সুখবর। এখন থেকে প্রত্যেক ঘরে ঘরে হবে কর্মসংস্থান আর কেউ থাকবে না বেকার। রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু করা হল আরও একটি নতুন কর্মমুখী প্রকল্প। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি বেকার যুবক যুবতীকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
আমাদের রাজ্য তথা দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের গ্ৰাফকে যত শীঘ্র সম্ভব নিয়ন্ত্রনে আনতে ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে একাধিক কর্মমুখী প্রকল্প চালু করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য চালু করা প্রকল্প গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল উৎকর্ষ বাংলা, কর্মতীর্থ, গতিধারা ইত্যাদি। এই প্রকল্প গুলির মধ্যে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের মাধ্যমিক পাস বেকার যুবক যুবতীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে চাকরিতে নিয়োগ করার ব্যাবস্থাও করে দেয় রাজ্য সরকার। এবং কর্মতীর্থ ও গতিধারা প্রকল্প দুটির মাধ্যমে আমাদের রাজ্যের নাম সই যোগ্যতা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত সকল যোগ্যতার বেকার যুবক যুবতীদের খুবই স্বল্প পরিমাণ সুদে মোটা অংকের টাকা ঋণ প্রদান করা হয়। যাতে সেই টাকা দিয়ে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী কোনো ব্যাবসা করে আমাদের রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীরা নিজেদের কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে পারে। আর এই প্রকল্প গুলির আওতায় এসে ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যের বহু বেকার যুবক যুবতী নিজেদের কর্মসংস্থানের দিশা খুঁজে পেয়েছেন।
আর আজ আমরা মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হওয়া যে প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করতে চলেছি তার নাম হল “কর্মসাথী”। এই প্রকল্প নতুন নয়। ২০২০ সালে এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ন্যুনতম অষ্টম শ্রেণী পাস থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার ১৮-৫০ বছর পর্যন্ত বেকার যুবক যুবতীদের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋন প্রদান করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় এসে ইতিমধ্যেই আমাদের দেশের যুব সম্প্রদায়ের একটা বড়ো অংশ নিজেদের ইচ্ছামত ব্যাবসা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন। এবং খুব শীঘ্রই রাজ্যের আরও ১ লক্ষ বেকার যুবক যুবতীকে এই প্রকল্পের আওতায় ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋন দেওয়া হবে বলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই “কর্মসাথী” প্রকল্পের বিষয়ে বিশদে সবকিছু জেনে নেওয়া যাক। নীচে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
“কর্মসাথী” প্রকল্পের মাধ্যমে কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
পশ্চিমবঙ্গের যে সব ১৮-৫০ বছরের মধ্যে কর্মহীন বেকার নারী ও পুরুষেরা “কর্মসাথী” প্রকল্পের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করবেন তাদেরকে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খুবই স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান করা হবে।
“কর্মসাথী” প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?
এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে যা যা যোগ্যতা থাকা দরকার সেগুলি হল-
১) আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২) আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮-৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
৩) এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই ন্যুনতম অষ্টম শ্রেণী পাস করে থাকতে হবে। তবেই সে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন নচেৎ নয়।
কিভাবে আবেদন করতে হবে?
“কর্মসাথী” প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য এই প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://karmasathi.wb.gov.in এ গিয়ে সেখানে নির্দিষ্ট স্থান অনুযায়ী নিজের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ও যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে।
কি কি ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?
আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি জমা করতে হবে সেগুলি হল-
১) আধার কার্ড স্ক্যান করা।
২) ভোটার কার্ড স্ক্যান করা।
৩) অষ্টম শ্রেণী পাসের মার্কসীট সহ আরও যদি কোনো উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে তাহলে সেই সব কিছুর মার্কসীট ও সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৪) পঞ্চায়েত প্রদত্ত স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৫) রিসেন্ট তোলা এক কপি রঙ্গিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
কিভাবে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হবে?
অনলাইন আবেদন পত্র জমা পড়ার পর সেগুলি খতিয়ে দেখে যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদেরকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত যাবতীয় সুবিধা প্রদান করা হবে।
কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
“কর্মসাথী” প্রকল্পের অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই আবেদন প্রক্রিয়ার কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। তাই আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী যেদিন খুশি আবেদন করতে পারবেন।