পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী নাম সই যোগ্যতা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত প্রতিটি বেকার চাকরিপ্রার্থীর জন্য বিরাট সুখবর। এবার রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে হবে চাকরি আর কেউ থাকবে না বেকার। এমনটাই জানাল রাজ্য সরকার। মাত্র দিন দুই তিনেক আগেই রাজ্য সরকারের ২০২২-২৩ এর বাজেট পেশ হয়েছে। আর সেই বাজেট পেশ অনুষ্ঠানেই স্বয়ং আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্যের ১০ লক্ষ বেকার যুবক যুবতীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে আমাদের রাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী এমন ২ লক্ষ বেকার যুবক যুবতী যারা ব্যাবসা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান তাদের প্রত্যেককে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে অনুদান প্রদান করা হবে। এছাড়াও যে ১০ লক্ষ বেকার যুবক যুবতীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে তারাও প্রত্যেকে আবার ১০০ জন করে বেকারকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে।
দীর্ঘ দু-বছর যাবৎ করোনা মহামারী চলাকালীন দেশ তথা রাজ্য জুড়ে সমস্ত সরকারি দপ্তর গুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার কারণে বেকারত্বের হার ক্রমশ উর্ধ্বগামী হচ্ছিল। আর তা নিয়ে আমাদের রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার উভয়েই খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। তাই ২০২২ সাল এর প্রথম দিক থেকেই পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসার পর এক এক করে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ বিভিন্ন ছোটো বড়ো দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রায় প্রত্যেক দিনই কিছু না কিছু নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হচ্ছে।
তবে সেগুলির মাধ্যমে বেকারত্ব কিছুটা পরিমাণে দূর হলেও সম্পূর্ণ রুপে নির্মূল করা তো আর সম্ভব নয়। তাই যত শীঘ্র সম্ভব সম্পূর্ণ ভাবে পশ্চিমবঙ্গের বেকারত্ব দূরীকরণ করতে আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনো কম্পিটিটিভ পরীক্ষা ছাড়াই ১০ লক্ষ শূন্যপদে নাম সই যোগ্যতা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত সকল বেকার চাকরিপ্রার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে আগামী ৫ বছরের মধ্যে রাজ্যের ১০ লক্ষ বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবেন তিনি। তিনি এও জানিয়েছেন যে এ বছর পাঁচ কোটির করলাম দিবস তৈরি করা হয়েছে এবং আগামী বছর আট কোটি টাকার কর্ম দিবস তৈরি করা হবে।
সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলায় অনুষ্ঠিত এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী এই ১০ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার ঘোষণা করার পাশাপাশি এও বলেছেন যে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের যে ইউনিফর্ম দেওয়া হয় তা বর্তমানে বাইরে থেকে আসে। কিন্তু এবার থেকে এইসব পোষাক আমাদের রাজ্যেরই সেলফ হেল্প গ্ৰুপের সদস্যদের দিয়ে বানানো হবে আর তাতে করে তাদেরও কর্মসংস্থানের দিশা মিলবে। এতো কিছু করা সত্ত্বেও বিরোধী পক্ষের দলনেতারা রাজ্য সরকারের এইসব প্রচেষ্টাকে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল সরকারের গদি পুনরায় টিকিয়ে রাখার নিছক এক ফাঁদ বলে কটাক্ষ করেছেন। যদিও রাজ্য সরকার সেই সব কথার পরোয়া না করেই নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী রাজ্যের বেকারত্ব দূরীকরণ করার জন্য প্রানপনে চেষ্টা করে চলেছেন। তবে এই ১০ লক্ষ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের জন্য কবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে এখন শুধু সেই সময়েরই অপেক্ষা।