পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটি স্কুলে স্কুলে গ্রুপ-ডি ও দারোয়ান পদে কর্মী নিয়োগ, অষ্টম শ্রেণী পাস হলেই চাকরি | WB School Group-D Recruitment

পশ্চিমবঙ্গের বেকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বিরাট নিয়োগের সুখবর। রাজ্য জু্ড়ে বিপুল সংখ্যক শূন্যপদে গ্ৰুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগের  সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। যত শীঘ্র সম্ভব স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে রাজ্যের ৯০০০ এরও অধিক সরকারি স্কুল গুলিতে গ্ৰুপ ‘ডি’ অর্থাৎ দারোয়ান পদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে চায় রাজ্য সরকার। বহু বছর আগে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলিতে অন্যান্য বাকি সব পদ গুলিতে কর্মী নিয়োগের সাথে সাথে দারোয়ান পদেও কর্মী নিয়োগ করা হতো। তবে বেশ কয়েক বছর যাবত পশ্চিমবঙ্গে চলা নিয়োগ দুর্নীতির কারণে গ্ৰুপ ‘সি’ ও গ্ৰুপ ‘ডি’ পদের বহু চাকরি বাতিল করা হয়েছে। সেই কারণে বেশ কয়েক বছর হল স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলিতে গ্ৰুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগের জন্য কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি। তবে এবারে সেই কাজ সম্পন্ন করতে চায় রাজ্য সরকার। 

    এই মাত্র ২ দিন আগেই অর্থাৎ গত বুধবার নবান্নে সংঘটিত এক অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বৈঠকে এই নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সারা রাজ্য জুড়ে গড়ে ওঠা ৯০০০ এরও বেশি সংখ্যক সরকারি স্কুলে কি উপায়ে দারোয়ান নিয়োগ করা যায় সেটাই ছিল ওইদিন ওই বৈঠকের মূল ও একমাত্র আলোচ্য বিষয়। ওইদিন ওই অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বৈঠকে রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলিতে দারোয়ান নিয়োগের  বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করার পর মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছেন যে, সত্যি সত্যিই এবারে রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলিতে দারোয়ান পদে স্থায়ী সরকারি কর্মী নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করাটা অত্যন্ত জরুরি। 

     ১৯৮০ সাল পর্যন্ত সরকারি স্কুলে দারোয়ান পদে স্থায়ী সরকারি কর্মী নিয়োগের নিয়ম ছিল। তবে পরবর্তীকালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে এই দারোয়ান পদটি তুলে দেওয়া হয়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আগে যেসব কর্মীদের এই পদে নিয়োগ করা হয়েছিল তাদের রিটায়ারমেন্ট এর পর সেই পদ গুলি খালি পড়ে রয়েছে। আগে তাও গ্ৰুপ ‘ডি’ পদের জন্য নিযুক্ত কর্মীদেরকে ই এই দারোয়ান পদে নিয়োগ করা যেত। কিন্তু কিছু বছর হল স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে গ্ৰুপ ‘ডি’ পদে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়ায় এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে স্কুল গুলিতে নিরাপত্তার অভাব দেখা দিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে ৩ বছর আগে একবার স্কুল গুলিতে দারোয়ান পদে কর্মী নিয়োগের জন্য আর্জি জানিয়ে রাজ্য সরকারকে দরখাস্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন রাজ্য সরকার এই বিষয়টির উপর কোনো গুরুত্ব দেয়নি। 

     তবে সম্প্রতি রাজ্যের পুরনো মালদা জেলার এক সরকারি স্কুলে নিরাপত্তা রক্ষীরা অভাবে যে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেল তার ফলে এই দারোয়ান নিয়োগের বিষয়ে টনক নড়েছে রাজ্য সরকারের। রাজ্যের গ্ৰামীন এলাকা গুলিতে গড়ে ওঠা সরকারি স্কুল গুলির প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকারা সরকারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন যে  বর্তমান প্রায়শই তাদের স্কুলের অফিস রুম থেকে একাধিক প্রয়োজনীয় নথীপত্র চুরি হতে দেখা যায়। শহর এলাকায় গড়ে ওঠা সরকারি স্কুলগুলিতে CCTV লাগানো থাকে তাই এই ধরনের ঘটনা সেখানে ঘটে না। কিন্তু গ্ৰামে গঞ্জে তা না থাকায় হামেশাই এই নথীপত্র চুরির ঘটনা ঘটে। আর CCTV লাগানো না থাকার কারণে কিভাবে চুরি হচ্ছে তা জানারও কোনো উপায় থাকে না।

       গ্ৰামাঞ্চলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের করা এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী দুটি উপায় বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে দরকার হলে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিয়েও এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। এছাড়াও প্রাইভেট স্কুল গুলিতে যেমন আইডি কার্ড দেখিয়ে স্কুলের ভিতরে ঢোকা ও বেরোনোর নিয়ম করা হয়েছে সরকারি স্কুল গুলির ক্ষেত্রেও ওই নিয়ম চালু করা যেতে পারে। তার ফলে ছাত্র ছাত্রীরা, শিক্ষক শিক্ষিকারা সহ স্কুলের অন্যান্য স্টাফেরা যদি নিজ নিজ আইডি কার্ড দেখিয়ে স্কুলের ভিতরে প্রবেশ করে ও বেরোয় তাহলে কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটার কোনো সম্ভবনা থাকবে না। 

      মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের উত্তরে রাজ্যের সরকারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা জানিয়েছেন যে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলিতে দারোয়ান পদে স্থায়ী সরকারি কর্মী নিয়োগ করা হতো। তবে তার পর থেকে স্কুল  সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে স্কুলে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে দারোয়ান ও সুইপার পদ দুটি তুলে দেওয়া হয়। তবে কোনো কোনো সরকারি স্কুল নিজেদের স্কুল ফান্ডের তরফ থেকে এই পদ দুটির কাজ করার জন্য কর্মী নিয়োগ করলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই সব কর্মীদেরকে প্রতি মাসে ঠিক ঠাক ভাবে বেতন দেওয়া সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। তাই নিরাপত্তা রক্ষীর অভাবে বিভিন্ন ধরনের বিপদের সন্মুখীন হতে হয় স্কুল গুলিকে। তাই যত শীঘ্র সম্ভব রাজ্য সরকারের কাছে এই দারোয়ান পদে স্থায়ী সরকারি কর্মী নিয়োগের জন্য আর্জি জানিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। রাজ্য সরকারও অবশ্য তাদের কথা মেনে নিয়ে এই নিয়োগের বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা শুরু করে দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে সেই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে রাজ্য সরকারের তরফে অনুমতি মিললেই খুব শীঘ্রই স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


SOURCE: News18bangla

MORE JOB NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment