আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হল আরও একটি নতুন প্রকল্প। কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, শিক্ষাশ্রী, লক্ষীর ভান্ডারের মতো এটি ও মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত সাধের ও স্বপ্নের একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্তকারী দের প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ভাতা প্রদান করা হবে। এছাড়াও তার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বাড়তি সুযোগ সুবিধাও দেওয়া হবে। চলুন তাহলে আর অপেক্ষা না করে এই প্রকল্পের বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ হল শিল্প কলায় সমৃদ্ধ একটি রাজ্য। আর এই সমৃদ্ধিকে ধরে রেখেছেন এই রাজ্যের শিল্পীরাই। বিশেষ করে লোকশিল্প। বাংলার লোকশিল্প এখন দেশ ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীতে বাংলার শিল্প সংস্কৃতির সুনাম অর্জন করেছে। তাই সেইসব লোকশিল্পীদের শিল্প সত্ত্বাকে সন্মানিত করতে এবং তাদেরকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে এই বিশেষ প্রকল্পটি। তবে এই প্রকল্পে সকলেই আবেদন করতে পারবেন এবং সকলেই এই প্রকল্পের টাকা পেতে পারেন । যার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের তরফ থেকে বাংলার প্রত্যেকটি লোক শিল্পীকে মাসিক ১০০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্প চালু করার মুখ্য উদ্দেশ্য হল দুটি। একটি হল এর মাধ্যমে বাংলার লোকশিল্পীদের শিল্পরীতি কে বংশপরম্পরায় ধরে রেখে তাদের আর্থিক সংস্থানের পথ প্রশস্ত করা। আর অন্যটি হল তাদেরকে দিয়ে ঢাক ঢোল পিটিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া বাকি অন্যান্য জনমুখী প্রকল্প গুলির প্রচার কার্য চালানো। অনেকেই এই প্রকল্পের টাকা পেয়ে থাকেন এবং নতুন করে আবারো আবেদন চলছে যেখানে আবারও অনেকেই নতুন করে আবেদন করে এই প্রকল্পের টাকা পেয়ে যাবেন।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বাংলার লোকশিল্পীদের কল্যানার্থে চালু হওয়া এই প্রকল্পের নাম হল “লোক প্রসার প্রকল্প”। ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যের ১ লক্ষ ৯৪ হাজার লোকশিল্পী এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। এবং এই প্রকল্পের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা লাভ করছেন। এই প্রকল্প চালু হওয়ায় একদিকে যেমন বাংলার লোকশিল্পীরা আর্থিক ভাবে বেশ কিছুটা উপকৃত হয়েছেন তেমনি রাজ্য সরকারের অন্যান্য সব জনকল্যাণমূলক প্রকল্প গুলির প্রচারকার্যেও এইসব লোকশিল্পীরা অংশগ্রহণ করছেন। তাহলে এবারে আর কথা না বাড়িয়ে আসল প্রসঙ্গে আসা যাক। অর্থাৎ এই প্রকল্পে আবেদন করার যোগ্যতা, প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা, আবেদন পদ্ধতি ইত্যাদির বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
“লোক প্রসার প্রকল্পে” আবেদনের জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?
এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকতে হবে। যেমন-
১) আবেদনকারীকে অবশ্যই একজন লোকশিল্পী হয়ে থাকতে হব। আর তা না হলেও অন্তত পক্ষে বাংলার লোকশিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকতে হবে।
২) আবেদনকারী লোকশিল্পীকে অতি অবশ্যই এ রাজ্যের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
৩) আবেদনকারী শিল্পীর বয়স অবশ্যই সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকতে হবে ।
৪) আবেদনকারীর নিজের নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
“লোক প্রসার প্রকল্পের’ মাধ্যমে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্তকারী লোকশিল্পীদেরকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে যে সুবিধা গুলি প্রদান করা হয়ে থাকে সেগুলি হল-
১) প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়।
২) এছাড়াও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাদেরকে একটি করে আইডেন্টি কার্ডও দেওয়া হয়ে থাকে।
৩) এছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় থাকা লোকশিল্পীরা রাজ্য সরকারের যেসব অনুষ্ঠান গুলি হয় সেগুলিতে অংশগ্রহণ করে সেখান থেকেও অর্থ উপার্জন করার সুবিধা পেয়ে থাকেন।
৪) এই প্রকল্পের আওতায় নাম লেখালে সর্বপরি যে সুবিধাটি পাওয়া যায় তা হল ৬০ বছর বয়সের পর থেকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পেনশন পাওয়া যায়।
কিভাবে আবেদন জানাতে হবে?
এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে হলে অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তবে তার জন্য সবার আগে লোক প্রসার প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://wb.gov.in/government-schemes-details-lokprasar.aspx এ যেতে হবে। তারপর সেখান থেকে Contact Us অপশনে গিয়ে Districts এ ক্লিক করতে হবে। তারপর আবেদনকারী শিল্পী যে জেলার বাসিন্দা সেই জেলাকে বেছে নিতে হবে। তারপর সেখান থেকেই এই লোক প্রসার প্রকল্পের রেজিস্ট্রেশন কোন জায়গায় চলছে সেই জায়গার ঠিকানা পেয়ে যাবেন। তারপর সেই জায়গায় গিয়ে আবেদন পত্র সংগ্রহ করবেন। এবং সেটিকে সঠিক তথ্য দিয়ে ভালোভাবে পূরণ করে তার সঙ্গে যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়ে এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হবে।
কোন কোন ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া ঠিকানায় গিয়ে যোগাযোগ করে আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি জমা দিতে হবে সেগুলি হল-
১) আধার কার্ডের জেরক্স।
২) রেশন কার্ড বের জেরক্স।
৩) ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতার জেরক্স।
৪) কাস্ট সার্টিফিকেট।
৫) রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
এক্ষেত্রে যে কোনো সময়তেই আবেদন করা যায়। আবেদন করার জন্য কোনো রকম সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। লোকশিল্পীরা নিজেদের সময় সুযোগ অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন ।