প্রত্যেক পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে ১০ লক্ষ টাকা, আবেদন করলেই টাকা | Sukanya Samriddhi yojana

 

আপনি কি ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক? আপনার কি কন্যা সন্তান রয়েছে? মাসিক ইনকামের পরিমাণ কম হওয়ার কারণে এই অগ্নিমূল্যের বাজারে সংসার চালিয়ে সেই কন্যা সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করতে পারছেন না? তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আর চিন্তা করবেন না? কারন পরিবারে কন্যা সন্তান থাকলেই বিশেষ এক প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এই প্রকল্পের বেশ কিছু শর্ত রয়েছে সেগুলি ঠিকঠাক মতো পালন করতে পারলে ১০ লক্ষের জায়গায় আপনি ৬৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে লাভ করতে পারবেন। 

        আমাদের দেশে এমন বহু দরিদ্র পরিবার রয়েছে যাদের পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মানোর সাথে সাথেই তাদের পিতা মাতারা তাদের  উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার খরচ ও বিয়ের খরচ জোগানো নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। এইসব দরিদ্র পরিবারের পিতা মাতা দের চিন্তা থেকে মুক্তি দিতেই ২০১৫ সালে কেন্দ্রের মোদি সরকার “বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও” প্রকল্পের অধীনে “সুকন্যা সমৃদ্ধি” যোজনা চালু করেছিলেন। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই  “সুকন্যা সমৃদ্ধি” যোজনার নিয়মে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। আর সেগুলির বিষয়ে আপনাদের বিস্তারিত ভাবে জানাতেই আমরা আজ এই প্রতিবেদনটি নিয়ে হাজির হয়েছি। তাহলে চলুন এবারে জেনে নেওয়া যাক যে এই যোজনার ক্ষেত্রে কি কি পরিবর্তন আনা হয়েছে। 

সুকন্যা সমৃদ্ধি” যোজনার নিয়মে কি কি পরিবর্তন আনা হয়েছে?

এই যোজনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে যে যে পরিবর্তন গুলি আনা হয়েছে সেগুলি হল-

১) আগে কেবলমাত্র ভারতের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায়, পোস্ট অফিসে ও HDFC ব্যাঙ্কে এই যোজনার সুবিধা পাওয়া যেত। কিন্তু এবার থেকে কেবলমাত্র স্টেট ব্যাঙ্কে নয় আপনারা দেশের যে কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে এই যোজনার অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।

২) এতদিন পর্যন্ত এই যোজনার আওতায় জমা রাখা অর্থের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ৭.৬০ শতাংশ হারে সুদ দেওয়া হতো। কিন্তু এবার থেকে সেই সুদের হার বাড়িয়ে পুরোপুরি ৮ শতাংশ করা হয়েছে। এবং এই যোজনার বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যেই চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকেই সেই বর্ধিত সুদ পাচ্ছেন। 

“সুকন্যা সমৃদ্ধি” যোজনার শর্তগুলি কি কি?

এই যোজনা প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হবে সেগুলি হল-

১) এই যোজনার অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে কন্যা সন্তানের বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের মধ্যে। এক্ষেত্রে কন্যা সন্তানের বয়স যদি ১০ বছরের বেশি হয়ে যায় তাহলে তার পিতা মাতা এই যোজনার অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না। তাই এই যোজনার সুবিধা পেতে হলে আপনার সন্তানের বয়স ১ বছর হলেই আপনি এই যোজনার অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাবস্থা করবেন। 

২) একজন অভিভাবক কেবলমাত্র তার প্রথম দুই কন্যা সন্তানের নামে এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে কোন ক্ষেত্রে যদি প্রথম একটি কন্যা সন্তানের পর দ্বিতীয়বার যমজ কন্যা সন্তান হয় তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি প্রথম কন্যা সন্তান ও দ্বিতীয়বারের যমজ কন্যা সন্তান মোট তিন জনের নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।

৩) এই যোজনার আওতায় মাসিক প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার পরিমাণ হল সর্বনিম্ন ২৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১২,৫০০ পর্যন্ত। বিনিয়োগকারীকে তার সন্তানের ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে মাসে প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে। তারপর সেই সন্তানের যখন ২১ বছর বয়স হবে তখন সে তার মোট জমাকৃত টাকা তুলে নিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে তিনি সন্তানের লেখাপড়ার জন্য তার ১৮ বছর বয়স হলে এই যোজনায় জমানো টাকার থেকে কিছুটা পরিমাণ টাকা তুলতে পারবেন।

৪) এক্ষেত্রে কন্যা সন্তানকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। এবং একমাত্র তার আইনি পিতা মাতাই এই যোজনার সুবিধা লাভ করতে পারবেন।

৫) এই যোজনার অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ১০০০ টাকা জমা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। এবং অ্যাকাউন্ট খোলার সময় সন্তানের বার্থ সার্টিফিকেট ও অভিভাবকের KYC জমা দিতে হয়।

“সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা” প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা গুলি কি কি?

এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করলে যে যে সুবিধা গুলি পাওয়া যাবে তা হল-

১) এই যোজনার আওতায় আপনি যদি প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে প্রিমিয়াম জমা দেন তাহলে মেয়াদ শেষ হলে আপনি ৫ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা পাবেন। যদি আপনি প্রতি মাসে ২০০০ টাকা করে জরিমানা জমা রাখেন তাহলে মেয়াদ শেষে ১০ লক্ষ টাকা পাবেন। আর যদি প্রতি মাসে ১২,৫০০ টাকা করে জমা রাখেন তাহলে মেয়াদ শেষে ৬৩ লক্ষ টাকা পাবেন।

২) এই যোজনার আওতায় রাখা অর্থের উপর আপনি বার্ষিক ৮ শতাংশ হারে সুদ পাবেন।

৩) এই যোজনার প্রিমিয়াম জমা দেওয়াকালীন যদি কোনো পিতা মাতা মারা যান তাহলে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার বাকি প্রিমিয়ামের টাকা পূরন করে সমস্ত রকম সুবিধে প্রদান করবে সেই কন্যা সন্তানকে।

৪) আবার যদি কোন ক্ষেত্রে এই প্রিমিয়াম জমা দেওয়াকালীন কন্যা সন্তানের মৃত্যু হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ সেই অভিভাবক তার জমানো টাকা সুদ সমেত ফেরত পেয়ে যাবেন। বা যদি কন্যা সন্তানের কোনো কঠিন অসুখে আক্রান্ত হয় তাহলে সেক্ষেত্রে সেই অভিভাবক প্রিমিয়াম জমা দেওয়া বন্ধ করে দিতে পারেন।

কিভাবে আবেদন করতে হবে?

এই যোজনার আওতায় টাকা রাখার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে যে কন্যা সন্তানের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হবে তার বার্থ সার্টিফিকেট এবং আবেদনকারীর নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও ঠিকানার প্রমান পত্র সঙ্গে করে নিয়ে নিকটবর্তী যে কোনো পোস্ট অফিসে বা স্টেট ব্যাঙ্ক সহ অন্য যে কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে গিয়ে এই যোজনার বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে সমস্ত ডকুমেন্টস জমা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তারপর বিনিয়োগ করতে হবে।

কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?

এই যোজনা আওতায় অ্যাকাউন্ট খোলা বর্তমানে চলছে এবং এর জন্য কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। আপনারা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী যেদিন খুশি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।

MORE NEWS: CLICK HERE

এই সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment