অবশেষে যারা লক্ষ্মী ভান্ডারের টাকা পাচ্ছেন তাদের জন্য বিরাট বড় দুঃসংবাদ । দীর্ঘদিন লক্ষী ভান্ডারের টাকা ঢোকার পর অবশেষে বন্ধ হতে চলেছে এই প্রকল্পে টাকা ঢোকা। আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হয়ে থাকেন এবং আপনি বা আপনার পরিবারের যদি কারো লক্ষী ভান্ডারের টাকা ঢুকে থাকে তাহলে আজই সতর্ক হয়ে যান। জেনে নিন বিস্তারিত খবরটি তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন কি করতে হবে।
আপনি কি লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় থাকা একজন মহিলা? প্রতি মাসে মাসে সঠিক সময় মতো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই প্রকল্পের টাকা এসে ঢুকে যাচ্ছে তাই নিশ্চিন্তে রয়েছেন? তাহলে আজই সতর্ক হয়ে যান। কারন সম্প্রতি নবান্নের পক্ষ থেকে বিশেষ কয়েকটি ব্যাঙ্কের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আর সেইসঙ্গে জানানো হয়েছে যে এইসব ব্যাঙ্ক গুলির মধ্যে যে কোনো একটি ব্যাঙ্কে যদি লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের উপভোক্তাকারী কোনো মহিলার অ্যাকাউন্ট থাকে এবং সেই অ্যাকাউন্টেই যদি এতদিন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাওনা টাকা ঢুকে থাকে তাহলে এই জুন মাস থেকেই তিনি আর লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাবেন না। কিন্তু হঠাৎ করে এমন কি ঘটল যে নবান্নের তরফ থেকে এই ধরনের একটি ঘোষণা করা হল? কোন কোন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাবেন না? সব কিছু পরিস্কার ভাবে জানতে পারবেন। তবে তার জন্য শেষ পর্যন্ত এই প্রতিবেদনটি মনযোগ সহকারে পড়তে হবে।
তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসার পর ২০২১ এর সেপ্টেম্বরে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গে চালু হয় লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প। রাজ্যের প্রতিটি ২৫ উর্ধ্ব বেকার মহিলাকে আর্থিক সহায়তা দিতেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ মহিলা এই প্রকল্পের আওতায় মাসিক ভাতা পাচ্ছেন। এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মহিলাদের মধ্যে সাধারণ শ্রেনীর মহিলারা বছরে ৬,০০০ টাকা করে ও তপশিলী জাতি ও উপজাতির মহিলারা বছরে ১২,০০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ভাতা পান।
পঞ্চায়েত ভোটের আগেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে, পশ্চিমবঙ্গের যে সকল মহিলারা বিধবা ভাতা পান এবার থেকে তারাও লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ এবার থেকে তারা বিধবা ভাতার টাকা ও লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা দুটো একসাথে পাবেন। অন্যদিকে আবার কিছুদিন ধরে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পকে ঘিরে কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে। সরকারের কাছে খবর পৌঁছেছে যে, অনেক মহিলার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তারা প্রতি মাসে মাসে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন। আর এই খবর সরকারের কানে পৌঁছতেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই প্রকল্পের নিয়মে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাহলে চলুন এবারে জেনে নেওয়া যাক কোন কোন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাবেন না এবং কেন পাবেন না।
কোন কোন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাওয়া যাবে না?
সরকার সূত্রে খবর মিলেছে যে, পাঞ্জাব ন্যাশানাল ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, ইন্দাসল্যান্ড ব্যাঙ্ক, কানাড়া ব্যাঙ্ক এই ব্যাঙ্ক গুলির মধ্যে যে কোনো একটি ব্যাঙ্কে যদি কোনো মহিলার অ্যাকাউন্ট থাকে আর তিনি যদি সরকারের নির্ধারন করা বিশেষ কয়েকটি নিয়ম মেনে না চলেন তাহলে এই জুন মাস থেকে তাদের অ্যাকাউন্টে আর লক্ষীর ভান্ডারের টাকা ঢুকবে না।
উপরিউক্ত ব্যাঙ্ক গুলিতে অ্যাকাউন্ট থাকলে কেন লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাওয়া যাবে না?
উপরিউক্ত ব্যাঙ্ক গুলিতে অ্যাকাউন্ট থাকা যে সকল মহিলারা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পান তাদের উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নিম্নলিখিত নির্দেশ গুলি জারি করা হয়েছে। যেমন-
১) যে সব মহিলাদের এখনো পর্যন্ত নিজের নামে কোনো সিঙ্গেল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই মে মাস পর্যন্ত জয়েন্ট অ্যাকাউন্টেই টাকা ঢুকছিল তারা যদি অবিলম্বে নিজের নামে আলাদা করে অ্যাকাউন্ট খুলে সেই অ্যাকাউন্ট নম্বর দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে বা ব্লক অফিসে গিয়ে জমা না দেন তাহলে এই মাস থেকে অর্থাৎ জুন মাস থেকে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে।
২) এছাড়াও তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যদি আধার নম্বর লিঙ্ক করা না থাকে তাহলেও তারা এই মাস থেকে আর লক্ষীর ভান্ডারের টাকা পাবেন না।
৩) উপরে আমরা যে ব্যাঙ্ক গুলির নাম উল্লেখ করেছি কয়েক বছর আগে এই ব্যাঙ্ক গুলি দুটি করে একসাথে যুক্ত হয়েছে। যার ফলে তাদের IFSC কোডও স্বাভাবিক ভাবেই পাল্টে গিয়েছে। ফলে এইসব ব্যাঙ্কের পুরনো অ্যাকাউন্ট হোল্ডার মহিলারা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের আবেদন পত্রে দুটি ব্যাঙ্ক একসাথে হওয়ার আগের IFSC কোডটি লিখেই আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পরে দুটি ব্যাঙ্ক একসাথে হয়ে যাওয়ার কারনে IFSC কোড পাল্টে যাওয়ার কারণে অ্যাকাউন্টে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা ঢোকায় সমস্যা হতে পারে।
তাই যে সকল মহিলাদের এই ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা নতুন IFSC কোড লেখা পাস বুকের এক কপি করে জেরক্স দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে বা ব্লক অফিসে গিয়ে জমা দেবেন। তবেই অ্যাকাউন্টে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা ঢোকা চালু থাকবে তা না হলে বন্ধ হয়ে যাবে।
MORE NEWS: CLICK HERE