বেকার যুবক যুবতীদের ১০ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, বিস্তারিত জানুন | PM Govt New Scheme

স্বল্প শিক্ষিত হোক বা উচ্চশিক্ষিত দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে কর্মহীন বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ে এসেছে এক দুর্দান্ত স্কিম। যার মাধ্যমে প্রত্যেক আবেদনকারী বেকার যুবক যুবতীকে ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। এই  স্কিমের আওতায় আবেদন করার মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই সরাসরি আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই স্কিমের মাধ্যমে দেওয়া টাকা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সবচাইতে বড় বৈশিষ্ট্য হল এই যে, এই স্কিমের সুবিধা পেতে হলে কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হলেই আর ১৮ বছরের উর্ধ্বে বয়স হলেই যে কোনো বেকার যুবক যুবতী এই স্কিমের সুবিধা লাভ করতে পারবেন। সুতরাং আপনি যদি একজন বেকার যুবক বা যুবতী হয়ে থাকেন এবং এই স্কিমের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পেতে আগ্ৰহী থাকেন তাহলে এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

      সাম্প্রতিককালে সরকারি হোক বা বেসরকারি দুই ক্ষেত্রেই চাকরির যা বাজার তাতে করে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু চাকরি না পেলেও বেঁচে থাকার জন্য তো প্রতিটি মানুষেরই কোনো না কোনো জীবিকার প্রয়োজন। বেকার থেকে তো আর সারা জীবন চলতে পারে না। তাই অনেকেই চাকরির বিকল্প হিসেবে ব্যাবসাকেই নিজেদের জীবিকা নির্বাহের পথ হিসেবে বেছে নিতে চান। কিন্তু শুধু ব্যাবসা করার কথা ভাবলেই তো আর চলবে না। তার জন্য সবার আগে যা দরকার তা হল মূলধন বা পুঁজি। কিন্তু সবার কাছে তো আর এই মূলধন থাকে না। তাই মূলধনের অভাবে অনেক বেকার যুবক যুবতী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ব্যাবসার পথে অগ্ৰসর হতে পারেন না। আর সেই কারণেই আমাদের দেশের সেইসব বেকার যুবক যুবতীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদেরকে কর্মসংস্থানের দিশা দেখিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে একটি বিশেষ স্কিম। যার নাম হল “প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা”। 

      তবে এই স্কিম নতুন নয়। বেশ কয়েক বছর আগেই আমাদের দেশের বেকার যুবক যুবতীদের কল্যানার্থে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে চালু করা হয়েছিল এই স্কিম। সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই স্কিম সফল ভাবে চলে আসছে। এই স্কিমের মাধ্যমে বেকার যুবক যুবতীদের ব্যাবসা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋন প্রদান করা হয়। যাতে এই ঋন নিয়ে ব্যাবসা করে তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হন। এই স্কিমের বিষয়ে হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন এবং অনেকেই হয়তো ইতিমধ্যেই এই স্কিমের সুবিধাও লাভ করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে এমন অনেক বেকার যুবক যুবতী আছেন যারা এই স্কিমের  ব্যাপারে সেভাবে কিছু জানেন না। আর সেই কারণেই এর মাধ্যমে সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে তাদেরকে এই স্কিমের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানাতেই আমরা আজ এই প্রতিবেদন নিয়ে হাজির হয়েছি। নীচে এই স্কিমের বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য আলোচনা করা হল।

“প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার” আওতায় কাদেরকে ঋন দেওয়া হয়?

এই যোজনার আওতায় সেই সব ব্যাক্তি যারা নতুন ব্যাবসা শুরু করতে চান বা তারা ইতিমধ্যেই কোনো ব্যাবসা করছেন এবং সেই ব্যাবসা আরও বড়ো করতে চাইছেন তাদেরকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ঋন প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে তার জন্য সেই ব্যাক্তি ঠিক কোন ব্যাবসা করতে চান তার ঠিকঠাক প্ল্যানিং করে সেইমতো প্রমান পত্র বানিয়ে সঠিক ভাবে সঠিক জায়গায় জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে। এবং তারপর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেই আবেদন করার ১০ দিনের মধ্যেই আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা জমা হয়ে যাবে। এই স্কিমের একটি বড়ো বৈশিষ্ট্য হল এর আওতায় ঋন নেওয়ার জন্য কোনো প্রসেসিং ফি দিতে হয় না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ঋন নেওয়া যায়।

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা” এর আওতায় ঋন নিতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

এই যোজনার আওতায় ঋন নেওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর যে যে যোগ্যতা গুলি থাকতে হবে সেগুলি হল-

১) আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে।

২) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।

কোন কোন ধরনের ব্যাবসা করার জন্য ঋন দেওয়া হয়?

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে যে সব ব্যাবসা করার জন্য ঋন দেওয়া হয় সেগুলি হল-

১) সেইসব ব্যাক্তি যারা কোন উৎপাদন ভিত্তিক ছোটোখাটো কারখানা করতে চাইছেন তাদেরকে এই স্কিমের আওতায় ঋন দেওয়া হয়।

২) এছাড়াও যারা ফুলের ব্যাবসা, মুদির দোকান, শব্জি ব্যাবসা, মাছের ব্যাবসা, সেলুন, বিউটি পার্লার, কম্পিউটার সেন্টার, জিম সেন্ট্রার, দর্জি দোকান, কৃষিকাজ, কাপড় জামার দোকান ইত্যাদি ধরনের ব্যাবসা করতে চান তাদেরকেও এই যোজনার মাধ্যমে ঋন দেওয়া হয়।

৩) তবে আবেদন করার আগে অবশ্যই আবেদনকারীকে যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তার ব্যাবসার প্ল্যানিং পেপার সহ বাকি যাবতীয় তথ্য মনোনয়ন করিয়ে নিতে হবে।  এক্ষেত্রে পুরো ব্যাবসা সংক্রান্ত যাবতীয় সবকিছু সেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মারফতেই করতে হবে।

এই যোজনার আওতায় কোন ধরনের ব্যাবসায়ীকে কত টাকা করে ঋন দেওয়া হবে?

এই যোজনার আওতায় নাম নথিভুক্ত করা প্রার্থীদের তাদের ব্যাবসার পরিধি অনুযায়ী ঋন প্রদান করা হবে। যেমন-

১) ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের এই যোজনার আওতায় ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋন দেওয়া হবে।

২) মাঝারি ব্যাবসায়ীদের এই যোজনার আওতায় ৫০,০০০-৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋন দেওয়া হবে।

৩) এবং বড়ো মাপের ব্যাবসায়ীদের এই যোজনার আওতায় ৫,০০,০০০-১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঋন দেওয়া হবে। 

কিভাবে আবেদন করতে হবে?

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ঋন পাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য এই স্কিমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://portal.udyamimitra.in এ গিয়ে সেখানে অনলাইন আবেদন পত্র সঠিক ভাবে তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে। তারপর নিজের সম্পর্কিত ও ব্যাবসা সম্পর্কিত যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে। অ্যাপ্লিকেশন হয়ে যাওয়ার পর সেই অ্যাপ্লিকেশন ফর্মের একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিজেদের কাছে রেখে দেবেন। 

আবেদনের সময় কি কি ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে?

অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি আপলোড করতে হবে সেগুলি হল-

১) ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং প্যান কার্ড স্ক্যান করা।

২) আবেদনকারী যে ধরনের ব্যাবসার জন্য ঋন নিতে চাইছেন তার যাবতীয় প্রমান পত্র স্ক্যান করা।

৩) আবেদনকারীর গত তিন বছরের ইনকাম ট্যাক্স জমা দেওয়ার রিসিপ্ট কপি স্ক্যান করা।

৪) যে সব আবেদনকারী আগে থেকেই কোনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের সেই ব্যাবসার গত তিন বছরের ব্যালেন্স শীট স্ক্যান করা।

কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?

এক্ষেত্রে আবেদনের জন্য কোন প্রকার শেষ সময়সীমা ধার্য্য করা হয়নি। আপনারা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী এখানে আবেদন করতে পারবেন।


MORE JOB NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় ও নিত্যনতুন এই ধরনের আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment