রাজ্য জুড়ে আবারও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যবাসীর সার্বিক কল্যাণার্থে চালু করা হল আরও একটি নতুন জনমুখী প্রকল্প। সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে যে নতুন এই প্রকল্পের আওতায় যারা নাম নথিভুক্ত করবেন তাদেরকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এককালীন ৫০,০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। সম্প্রতি আলিপুর জজ কোর্টে ঋষি অরবিন্দের মূর্তি উন্মোচিত করার সময় এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষনাটি করছেন মুখ্যমন্ত্রী এমনটাই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। ১৮ বছরের উর্ধ্বে বয়স হলেই এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করা যাবে তবে আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তবেই তিনি এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন নচেৎ নয়। তবে এটাও ঠিক যে পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হলেই যে যে কেউ এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন এমনটা নয়, কারন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া বিশেষ এই প্রকল্প সব রাজ্যবাসীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। রাজ্যের বিশেষ এক শ্রেনীর নাগরিকদের জন্য এই বিশেষ প্রকল্পের সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক যে ঠিক কোন শ্রেনীর রাজ্য বাসীদের কল্যানার্থে নতুন এই প্রকল্পের সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নীচে এই বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আলোচনা করা হল।
২০১১ সালে প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীর সার্বিক কল্যাণের জন্য একের পর এক নতুন নতুন প্রকল্প চালু করে চলেছেন। সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তার উদ্যোগে চালু হওয়া মোট জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সংখ্যা হল ১০০ টির ও বেশি। তার মধ্যে রাজ্যের মহিলাদের জন্য চালু করা প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প, রাজ্যের পড়ুয়া ছাত্রীদের জন্য চালু করা প্রকল্প হল কন্যাশ্রী প্রকল্প, রাজ্যের বিবাহ যোগ্যা যুবতীদের জন্য চালু করা প্রকল্প হল রূপশ্রী প্রকল্প, রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের উদ্দ্যেশ্যে চালু করা প্রকল্প গুলি হল কর্মদিশা, কর্মতীর্থ, গতিধারা ইত্যাদি, রাজ্যের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ার সাহায্যার্থে চালু করা প্রকল্প হল স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড, সকল সাধারণ মানুষের কল্যানার্থে চালু করা প্রকল্প গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী ইত্যাদি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্প গুলির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যের বহু নাগরিক বিভিন্ন রকম ভাবে উপকৃত হয়েছেন।
আর আজ আমরা তার উদ্যোগে চালু হওয়া যে নতুন প্রকল্পটির বিষয়ে আপনাদেরকে জানাতে চলেছি সেটি তিনি একান্ত ভাবেই আমাদের রাজ্যের আইনজীবীদের জন্য চালু করেছেন। তবে এই প্রকল্প নতুন নয়। কোভিড চলাকালীন ই এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই থেকে এই প্রকল্প চলে আসছে। তবে এবার থেকে এই প্রকল্পের আওতায় দুটি নতুন সুবিধার সংযোজন ঘটতে চলেছে। আর সেগুলি হল-
এই প্রকল্পের সূচনা লগ্ন থেকেই আমাদের রাজ্যের আইনজীবীদের পরিবারের কোনো সদস্য যদি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতেন তাহলে তার পরিবারকে ৫০,০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছিল রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। তবে সম্প্রতি আলিপুর জজ কোর্টে ঋষি অরবিন্দের মূর্তি উন্মোচিত করার সময় এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রদান করা সুবিধার সঙ্গে আর কিছু নতুন সুবিধার সংযোজন ঘটানোর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন যে আগে যেমন আইনজীবীদের পরিবারের কোনো সদস্য কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার পরিবারকে ৫০,০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হতো আগামী দিনেও তা দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়েছেন যে এবার থেকে রাজ্যের অন্যান্য নাগরিকদের মতো এ রাজ্যের আইনজীবীরা ও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন এবং তার দরুন ৫ লক্ষ টাকার বীমার সুবিধা লাভ করতে পারবেন। এই উদ্যোগকে কার্যকর করার জন্য খুব শীঘ্রই রাজ্য জুড়ে একটি বিশেষ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে এবং টানা ৩ দিন ধরে সেই ক্যাম্প চলবে। সুতরাং আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সকল আইনজীবী ও তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই ৩ দিন ধরে হওয়া ক্যাম্পে গিয়ে অনায়াসেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়েছেন যে আগামী দিনে আলিপুর আদালতে ১ কোটি পর্যন্ত মূল্যের মামলা দায়ের করা যাবে। যা আগে করার নিয়ম ছিল না। এতো দিন পর্যন্ত কেবলমাত্র ব্যাঙ্কশাল এবং শিয়ালদহ কোর্টেই এতো বিপুল পরিমাণ অর্থের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এবার থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া অনুমতি অনুযায়ী এই দুটি কোর্টের সাথে সাথে আলিপুর জজ কোর্টে ও এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মামলা দায়ের করতে পারবেন সাধারণ রাজ্যবাসী। এছাড়াও ওইদিন ওই মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে আলিপুর ক্রিমিনাল কোর্টের অবস্থার উন্নতির জন্য ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাহায্য করার সিদ্ধান্তের কথাও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।