সমগ্ৰ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলার বেকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এক দুর্দান্ত নিয়োগের ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যের জনগণকে আধার সংক্রান্ত যাবতীয় পরিষেবা প্রদান করার জন্য সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে নতুন করে আরও ১,৪৬১ টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (BSK) স্থাপন করছে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গের ২৩ টি জেলার বিভিন্ন স্থানে এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র গুলি স্থাপন করা হচ্ছে। আর এবারে এই ১,৪৬১ টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র তেই ৩,০০০ জন কর্মী নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। যেহেতু সারা রাজ্য জুড়ে এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র গুলি গড়ে তোলা হচ্ছে তাই পশ্চিমবঙ্গের ২৩ টি জেলার যে কোনো জায়গা থেকেই নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল শিক্ষিত বেকার চাকরিপ্রার্থীরা এখানে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বর্তমানে সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে গড়ে ওঠা মোট ৩,৫৪১ টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (BSK) সক্রিয় ভাবে রাজ্যবাসীদেরকে পরিষেবা প্রদান করে চলেছে। এবং বর্তমানে সেখানে পরিষেবা প্রদানকারী কর্মীর সংখ্যা হল ৭,১২০ জন। কিন্তু আধার কার্ড সংক্রান্ত যাবতীয় পরিষেবা সহ অন্যান্য সব সরকারি পরিষেবা রাজ্যবাসীদের আরও ভালোভাবে দেওয়ার জন্যই রাজ্য সরকার নতুন করে আরও ১,৪৬১ টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (BSK) গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে এবং সেখানে আধার কার্ড সংক্রান্ত যাবতীয় পরিষেবা প্রদান করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের ২৩ টি জেলায় নতুন করে গড়ে তোলা ১,৪৬১ টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মধ্যে যে জেলায় যতগুলি শূন্যপদ রয়েছে তা হল-
১) বাঁকুড়ায় ৭৮ টি।
২) আলিপুরদুয়ারে ৩৪ টি।
৩) বীরভূমে ৬৪ টি।
৪) কোচবিহারে ৪৮ টি।
৫) দার্জিলিঙে ৩৬ টি।
৬) হুগলীতে ৭৯ টি।
৭) হাওড়াতে ৬০ টি।
৮) জলপাইগুড়িতে ৩৫ টি।
৯) ঝাড়গ্ৰামে ৩৪ টি।
১০) মুর্শিদাবাদে ১০৭ টি।
১১) পশ্চিম মেদিনীপুরে ১০৩ টি।
১২)পূর্ব মেদিনীপুরে ১০১০ টি।
১৩) দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৫৯ টি।
১৪) উত্তর দিনাজপুরে ৪৫ টি।
১৫) কলকাতায় ৩০ টি।
১৬) কালিম্পঙে ২৯ টি।
১৭) মালদহে ৭২ টি।
১৮) উত্তর ২৪ পরগনায় ৮২ টি।
১৯) পশ্চিম বর্ধমানে ২৮ টি।
২০) পুরুলিয়ায় ৬৪ টি।
২১) নদিয়ায় ৭৭ টি।
২২) দক্ষিণ দিনাজপুরে ২৩ টি।
২৩) পূর্ব বর্ধমানে ৭৩ টি।
রাজ্য জুড়ে এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র গুলি গড়ে তুলে রাজ্য সরকার বিভিন্ন ধরনের সরকারি পরিষেবা গুলি রাজ্যের জনগণের হাতের মুঠোয় আনার ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বাংলার ৯ কোটির ও বেশি জনগণ এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র গুলি থেকে বিভিন্ন ধরনের সরকারি পরিষেবা লাভ করেছেন। রাজ্যের ৪০ টি সরকারি দপ্তর এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিষেবা প্রদান করে থাকে।
অনলাইনের মাধ্যমে আধার কার্ড সংশোধনের জন্য রাজ্যের জনগণের থেকে টাকা নেয় এমন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলির বিপক্ষে সরকার এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র গুলি গড়ে তুলেছে। এখানে যাবতীয় সরকারি পরিষেবা গুলি রাজ্যের প্রতিটি জনগনকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে। এমনকি এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক বিল জমা দিলেও প্রতিটি বিলের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ করে ছাড় পাওয়া যাবে।
বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজ্যের জনগণকে আধার পরিষেবা প্রদান করার ক্ষেত্রে কর্মী নিয়োগ করার জন্য নতুন এক প্রকল্প চালু করে বেকার যুবক যুবতীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই প্রকল্পের নাম হল পাইলট প্রকল্প। এই প্রকল্পটি রাজ্যের ১০০০ টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (BSK) তে চালু করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মার্চ মাসেই এই প্রকল্প লঞ্চ করবে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় বাংলার ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য আধার কার্ড তৈরির বিষয়টি ও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মোটের উপর বেশি দূরে না গিয়ে কোনো লম্বা লাইনে না দাঁড়িয়ে বাংলার প্রতিটি জনগণ যাতে হাতের মুঠোয় সুষ্ঠুভাবে নিখরচায় সমস্ত সরকারি পরিষেবা গুলি লাভ করতে পারে সেই কারণেই আমাদের রাজ্য সরকার রাজ্য জুড়ে এই বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (BSK) গুলি গড়ে তুলেছে।
এই খবরটি জনপ্রিয় পত্রিকা “বর্তমান পত্রিকা” থেকে সংগৃহীত করা হয়েছে। এই খবরের অনলাইনের পত্রিকার লিংকটি নিচে দেওয়া হল।