রাজ্যের বেকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দুর্দান্ত নিয়োগের সুখবর। খুব শীঘ্রই সারা রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন দপ্তরে মোট ৩০০০ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে যত শীঘ্র সম্ভব এই শূন্যপদ গুলিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চায় রাজ্য সরকার। সম্প্রতি গত সোমবার রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তরে রাজ্যের একাধিক বিভাগের মন্ত্রীদের নিয়ে সংঘটিত হওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে একথা পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি এও জানিয়েছেন যে এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের শিক্ষা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য বিভিন্ন দপ্তরে কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে যে দুর্নীতি চলছিল এবারে সম্পূর্ণ রুপে তার অবসান ঘটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং দায়িত্ব নিয়ে একেবারে স্বচ্ছ ভাবে এই ৩০০০ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া এহেন সিদ্ধান্তের কথা শুনে খুব স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরা কিছুটা হলেও যে আশার আলো দেখতে পেলেন তার আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
তা সে কেন্দ্র হোক বা রাজ্য উভয় সরকারের ই নিজ নিজ গদিতে টিকে থাকার অর্থাৎ ভোটে জেতা বা হারার মূল হাতিয়ার হল একটি রাজ্য বা দেশের জনগণ। তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের রাজ্য সরকারের ভোট ব্যাঙ্কের চাবিকাঠি টিও লুকিয়ে আছে রাজ্যের অগনিত মহিলা থেকে শুরু করে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হাতে। দীর্ঘদিন ধরে যেভাবে আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে শুরু করে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যা যা অরাজকতা সৃষ্টি হতে দেখা যাচ্ছে তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজ্যের রাজ্যের অগনিত মহিলা থেকে শুরু করে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যদি একবার সরকারের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ই যে রাজ্য রাজনীতি থেকে তৃনমূল সরকারের পাঠ উঠে যাবে সেই নিয়ে যথেষ্ট ভয়ের মধ্যে রয়েছে তৃণমূল সরকার।
সম্প্রতি সাগরদিঘি উপনির্বাচনে যা ঘটে গেল তার পরে হারে হারে সেঁক পাচ্ছে এ রাজ্যের শাসক দল। তাহলে কি এবারে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে এমনি একটি আশঙ্কা করছে রাজ্যের শাসক দল। আর আশঙ্কা হবে নাই বা কেন? সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলাফলই তো তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। তার উপরে আবার আবার সামনেই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই এবারে আর কোনো ভাবেই ঝুঁকি নিতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সরকারকে অনিবার্য পতনের হাত থেকে বাঁচাতে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগেই রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন দপ্তরে মোট ৩,০০০ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
গত সোমবার রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তরে রাজ্যের একাধিক বিভাগের মন্ত্রীদের নিয়ে সংঘটিত হওয়া বৈঠকে এই ৩০০০ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্তে সরকারি সিলমোহর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন যে এই ৩০০০ শূন্যপদের মধ্যে ১৭২৯ জনকে নিয়োগ করা হবে মাদ্রাসা শিক্ষক পদে। আর বাকি ৭২৮ জনকে সরকারি গ্ৰন্থাগার গুলিতে নিয়োগ করা হবে। এর পাশাপাশি বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় গড়ে ওঠা একলব্য মডেল স্কুল গুলিতে বিভিন্ন শূন্যপদে ৭৪ জনকে নিয়োগ করা হবে। এছাড়াও ঝাড়গ্ৰামে মাওবাদী আক্রমনের শিকার হওয়া পরিবার গুলি থেকে ২২ জনকে হোমগার্ড পদে এবং ৪৪ জনকে ঝাড়গ্ৰাম ও কালিম্পং এর সমবায় সমিতিতে এবং বাকি ১২২ জনকে কৃষি দফতরে নিয়োগ করা হবে বলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ওইদিন জানানো হয়েছে।
তবে কবে নাগাদ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই সব শূন্যপদ গুলিতে কর্মী নিয়োগ করার জন্য অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদন পত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সুখবর মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।