এখন থেকে স্টেট ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকলেই প্রত্যেক অ্যাকাউন্ট হোল্ডার পাবেন ১৫ লক্ষ টাকা। স্টেট ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যেই দেশের নাগরিকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন ধরনের জনকল্যাণমূলক স্কিমের সুবিধা প্রদান করা হয়। তবে এবারের এই স্কিমের মাধ্যমে সকলকে নয়, কেবলমাত্র যেসব অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের পরিবারে কন্যা সন্তান রয়েছে কেবলমাত্র তাদেরকেই ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। সুতরাং আপনি যদি এই স্কিমের সম্পর্কে কিছু না জেনে থাকেন তাহলে আমাদের এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন। আর তারপর যদি আপনার পরিবারে কন্যা সন্তান থেকে থাকে অথচ স্টেট ব্যাঙ্কে আপনার কোনো অ্যাকাউন্ট না থেকে থাকে তাহলে অতি সত্ত্বর আপনার নিকটবর্তী স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার যে কোনো ব্রাঞ্চে যান। এবং সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলুন আর ১৫ লক্ষ টাকার সুবিধা পাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যান।
আমাদের দেশ তথা রাজ্যের কন্যা সন্তানদের সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বাঁচিয়ে রাখতে তাদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করে তুলতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বহু প্রকল্প চালু করা হয়েছে। যেমন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেশের কন্যা সন্তানদের সার্বিক কল্যাণের জন্য চালু করা প্রকল্প গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল “বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও”। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের কন্যা সন্তানদের সার্বিক কল্যাণের জন্য চালু করা প্রকল্প গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কন্যাশ্রী ও রূপশ্রী। রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা এই প্রকল্প গুলির আওতায় এসে ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ তথা রাজ্যের ঘরে ঘরে বহু কন্যা সন্তানেরা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রকম ভাবে উপকৃত হয়েছে।
আর আজ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা এমনই এক প্রকল্পের বিষয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করব। যে প্রকল্পের মাধ্যমে একমাত্র আমাদের দেশের কন্যা সন্তানেরাই স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারবেন। ২০১৫ সালের ২২ শে জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এই বিশেষ প্রকল্পটি চালু করা হয়েছিল যার নাম হল “সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা”। সম্প্রতি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার হেড অফিস থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে যে “সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা” প্রকল্পের সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু অধিক সুবিধা দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। আর আজ সেই গুলির বিষয়েই আমরা আপনাদের জানাতে চলেছি। তাহলে চলুন আর দেরি না করে চটপট এই সুবিধা গুলির সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। নীচে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
“সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা” প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা গুলি কি কি?
এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করলে যে যে সুবিধা গুলি পাওয়া যাবে তা হল-
১) এই যোজনা প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ২৫০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তারপর বছর বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করলে মেয়াদ শেষে ১৫ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে।
২) এই স্কিমের আওতায় টাকা জমা রাখার মেয়াদকাল হল ২১ বছর বয়স পর্যন্ত কিন্তু কেউ যদি ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত টাকা জমা রাখার পর কোনো কারনে টাকা জমা করা বন্ধ করে দেন তাহলেও তিনি সেই সময় পর্যন্ত হিসেব করে যেই সুদ দাঁড়াবে তা পেয়ে যাবেন।
৩) এক্ষেত্রে কন্যা সন্তানের যখন ১৫ বছর বয়স হবে তখন টাকা তুলে নিলে মোট বিনিয়োগ করা টাকার ৫০ শতাংশ তোলা যাবে। এবং ২১ বছর বয়সের পর তুললে পুরোপুরি ১৫ লক্ষ টাকাই পাওয়া যাবে।
৪) এই প্রকল্পের আওতায় বার্ষিক ৭.৬% করে সুদ পাওয়া যাবে।
“সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা” প্রকল্পের শর্তগুলি কি কি?
এই যোজনা প্রকল্পের অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হবে সেগুলি হল-
১) এক্ষেত্রে কন্যা সন্তানকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
২) কন্যা সন্তানের বয়স অবশ্যই ১০ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে।
৩) এক্ষেত্রে একমাত্র কন্যার আইনি বাবা অথবা মা বা অন্য যে কোনো আইনি অভিভাবক এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং সেক্ষেত্রে তার আইনি কাগজ পত্র জমা দিতে হবে।
৪) এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করলে বছরে ন্যুনতম ২৫০ টাকা জমা রাখতে হবে।
৫) এই প্রকল্পের আওতায় জমা রাখা মোট টাকার পরিমাণ হল ১ লক্ষ ৫০ হাজার।
৬) একটি পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুজন কন্যা সন্তানের নামে এই যোজনার অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে।
কিভাবে আবেদন করতে হবে?
এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে যে কন্যার নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হবে তার বার্থ সার্টিফিকেট এবং আবেদনকারীর নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও ঠিকানার প্রমান পত্র সঙ্গে করে নিয়ে নিকটবর্তী স্টেট ব্যাঙ্ক সহ যে কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে গিয়ে এই প্রকল্পের বিষয়ে আরও বিস্তারিত ভাবে জেনে সেখান থেকেই আবেদন করতে হবে।
কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
এই যোজনা প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করা বর্তমানে চলছে এবং এর জন্য কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। আপনারা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী যেদিন খুশি আবেদন করতে পারবেন।