এই কথা আমাদের কারোরই অজানা নয় যে বর্তমান যুগে দাঁড়িয়ে বেকারত্বের দিক থেকে আমাদের দেশ ভারতবর্ষ বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তাই ভারতের এই দুর্নাম ঘুচিয়ে ভারতকে বিশ্বের অন্যান্য দেশ গুলির তুলনায় আর্থিক দিক থেকে উন্নত করে তুলে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দেশ বানানোর জন্য আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একের পর এক উদ্দ্যোগ নিয়েই চলেছেন। শুধুমাত্র এই কারনেই তিনি ইতিমধ্যেই বহু জনকল্যাণ মুখী প্রকল্প এবং বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের দ্বারা চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছেন। এমনকি সম্প্রতি তিনি রোজগার মেলা নামে এক কর্মমুখী মেলার সূচনা করে সেই মেলার মাধ্যমে বহু বেকার যুবক যুবতীদের হাতে কোনো রকম কোনো উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই সরাসরি চাকরিতে প্রবেশের নিয়োগ পত্রও স্বয়ং নিজে তুলে দিয়েছেন।
আর আজ আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের এমনই এক অভিনব প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করতে চলেছি। আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকার আবিষ্কৃত এই নতুন প্রকল্পের নাম করন করা হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্ৰামীন কৌশল্য যোজনা। কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য সব প্রকল্পের তুলনায় এই প্রকল্প হচ্ছে একেবারেই অভিনব। তাহলে এই প্রকল্পের বিশেষত্ব কি? কি এমন অধিক সুবিধা পাওয়া যাবে এই মাধ্যমে এই সমস্ত জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই আমাদের প্রতিবেদনটি একটু ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
কেন্দ্রীয় সরকার আবিষ্কৃত এই নতুন প্রকল্পের বিশেষত্ব হলো এইটাই যে এই প্রকল্পের মাধ্যমে অতি সামান্য শিক্ষাগত যোগ্যতাতেও শুধুমাত্র প্রশিক্ষণের দানের মাধ্যমে কয়েক হাজার শূন্যপদে কর্ম সংস্থানের সুযোগ পাওয়া যাবে। এবং চাকরিতে নিযুক্ত হওয়ায় পর প্রতি মাসে উচ্চহারে বেতনও মিলবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। এই রকম সুযোগ কিন্তু বারবার আসে না তাই কোনো ভাবেই এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।
এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স সীমা:-
এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের দ্বারা চাকরি পেতে আবেদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই যে কোনো সরকার স্বীকৃত স্কুল থেকে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাস করে থাকতে হবে। তবে যারা মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাস করেছেন তাঁরাও এখানে সমান ভাবে আবেদন করার জন্য যোগ্য। এই প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। এবং এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮-৩৫ বছরের মধ্যে। তবে প্রতিবন্ধী শ্রেনীর প্রার্থীরা এবং মহিলা প্রার্থীরা আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সের কিছুটা ছাড় পাবেন অর্থাৎ তারা এখানে ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন পদ্ধতি:- এই দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্ৰামীন কৌশল্য যোজনা প্রকল্পে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং সেই জন্য যা যা করতে হবে সেগুলি হল-
১) প্রথমে আপনাকে এই প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট kaushalpanjee.nic.in/ddugky/ekaushal এ যেতে হবে।
২) সেখানে আপনার নিজের যাবতীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
৩) রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের ফর্ম আসবে সেখানে আপনার নিজের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, অভিভাবকের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেন্ডার, বয়স, ঠিকানা, আধার নম্বর, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে ফর্ম টিকে ফিলাপ করে ফেলুন।
৪) এরপর আপনার নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করে ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করে দিন এবং সিগনেচারের জায়গায় একটি সিগনেচার স্ক্যান করে আপলোড করে দিন।
৫) সবশেষে আপনার নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে ফর্মের সঙ্গে যুক্ত করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিলেই আপনার অ্যাপ্লিকেশন হয়ে যাবে।
আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:-
আবেদন করার সময় আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি যুক্ত করে সাবমিট করতে হবে সেগুলি হল-
১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড স্ক্যান করা।
২) আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং রেশন কার্ড স্ক্যান করা।
৩) সমস্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্টস স্ক্যান করা।
৪) আপনার নিজের অথবা আপনার পরিবারের কারও জব কার্ড স্ক্যান করা।
৫) কাস্ট সার্টিফিকেট স্ক্যান করা (যদি থাকে)।
৬) একটি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
৭) আপনার নিজের যাবতীয় তথ্য দিয়ে বানানো একটি বায়োডাটা স্ক্যান করা।
নির্বাচন পদ্ধতি:- অনলাইনে আবেদন পত্র জমা করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে সেখানে একটি window open হবে সেখানে ভারতের সমস্ত রাজ্য ও জেলার নাম দেখতে পাবেন সেখান থেকে আপনি যে রাজ্য ও জেলার বাসিন্দা সেখানে ক্লিক করলেই আপনার নিকটবর্তী ট্রেনিং সেন্টার গুলির নাম দেখতে পাবেন সেখান থেকে আপনি যে ট্রেনিং সেন্টারে ট্রেনিং করতে চান সেটি সিলেক্ট করলেই সেই নির্বাচিত সেন্টারের ঠিকানা, ফোন নাম্বার ইত্যাদি দেখতে পাবেন । এরপর সেই ফোন নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করে সেখানে ট্রেনিং এর জন্য ভর্তি হয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ট্রেনিং করলেই ট্রেনিং শেষে আপনাদের সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।
আবেদন করার শেষ তারিখ:- এই প্রকল্পে মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য আবেদন পত্র জমা পড়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই আবেদন পত্র জমা দেওয়ার কোনো শেষ সময় সীমা নেই তাই যারা আবেদন করতে চান তারা আর দেরি না করে দ্রুত আবেদন করে ফেলুন। এমন সুযোগ কোন ভাবেই হাতছাড়া করবেন না।