পশ্চিমবঙ্গের বেকার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য রাজ্য বন দফতরের তরফ থেকে বিশাল সুসংবাদ। অবশেষে দীর্ঘ ২৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে খুব শীঘ্রই। দীর্ঘদিন পর রাজ্য বন দফতরে প্রচুর সংখ্যক শূন্যপদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই ১৯৯৭ সাল নাগাদ শেষ বারের মতো রাজ্য বন দফতরে এই ধরনের নিয়োগ হয়েছিল। তারপর থেকে দীর্ঘ ২৬ টা বছর পার হয়ে গিয়েছে এই ধরনের কোনো নিয়োগ হয়নি। তবে সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ফের বন দফতরে প্রচুর সংখ্যক শূন্যপদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সুতরাং রাজ্য সরকারের তরফে নেওয়া এই ধরনের নিয়োগের সিদ্ধান্ত যে রাজ্যের বেকার চাকরিপ্রার্থীদের কাছে অত্যন্ত আনন্দের হতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
পশ্চিমবঙ্গের তিনটি বিখ্যাত জাতীয় উদ্যান হল বক্সা, জলদাপাড়া এবং গরুমারা। এগুলির সঙ্গে আশা করি আপনারা সকলেই পরিচিত। বর্তমানে এই তিন জাতীয় উদ্যানে মোট ১১৩ টি কুনকি হাতি রয়েছে। এদের দেখাশোনা করার জন্যই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ২২৬ টি স্থায়ী পদে পাতাওয়ালা ও মাহুথ নিয়োগ করা হবে।
১৯৯৭ সালের পর থেকে সুদীর্ঘ ২৬ বছর এই ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার কারণে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে গত ১৪ ই এপ্রিল থেকে ১৭ ই এপ্রিল পর্যন্ত টানা চার দিন রাজ্য জুড়ে অস্থায়ী আন্দোলন শুরু করেন মাহুথ ও পাতাওয়ালা কর্মী সম্প্রদায়। মূলত চারটি দাবিকে কেন্দ্র করে তারা এই আন্দোলনে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। যেগুলি হল-
প্রথমত, দীর্ঘদিন হয়ে গিয়েছে তারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অন্যান্য সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের নিয়ম মেনে বেতন বৃদ্ধি করা হলেও দীর্ঘ ২৬ বছরে এই মাহুথ ও পাতাওয়ালা সম্প্রদায়ের কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়নি। সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত ২০২৩ সালে দাঁড়িয়েও মাত্র ৭,২৪০ টাকা বেতনে তারা কাজ করে চলেছেন। বর্তমান অগ্নিমূল্যের বাজারে যা দিয়ে সংসার চালানো কেবল কঠিন নয় দুঃসাধ্য ব্যাপার ও বটে।
দ্বিতীয়ত, এছাড়াও এই মাহুথ ও পাতাওয়ালা সম্প্রদায়ের কর্মীদের আরেকটি দাবি হল এই যে তারা কোনো রকম ভাবে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কেবলমাত্র তাদের বীমার সুবিধা প্রদান করা হয়।
তৃতীয়ত, তারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগও করেছেন যে কোনো রকমের দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যদি কোনো মাহুথ বা পাতাওয়ালার মৃত্যু হয় তাহলে তার মৃত্যুর পর তার পরিবারের কাউকে কোনো চাকরি দেওয়া হয় না। অথচ অন্যান্য সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে।
চতুর্থত, তাদের চতুর্থ ও প্রধান দাবি হল ১৯৯৭ সালের পর থেকে দীর্ঘ ২৬ বছর পার হয়ে গেছে কিন্তু আজ পর্যন্ত মাহুথ ও পাতাওয়ালা পদে নতুন করে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রকম কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি।
এই চারটি দাবিকে সামনে রেখেই তারা গত ১৪-১৭ ই এপ্রিল পর্যন্ত নিজেদের কাজও বন্ধ রেখে রাজ্য জুড়ে অস্থায়ী আন্দোলন করেছিলেন। সুতরাং টানা চার দিন মাহুথেরা নিজেদের কাজ বন্ধ রাখার কারণে খুব স্বাভাবিক ভাবেই হাতি সাফারি ও বন্ধ ছিল। যার ফলস্বরূপ পর্যটকদের খুবই অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। শুধু তাই নয় যে সব পর্যটকেরা অগ্ৰিম টিকিট কেটে রেখেছিলেন তাদের সকলকে টিকিট মূল্য ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য বন দফতর।
এছাড়াও এই কর্মবিরতিতে সবথেকে বড়ো সমস্যা যা দেখা দিয়েছে তা হল বক্সা, জলদাপাড়া এবং গরুমারা জাতীয় উদ্যানের কুনকি হাতি গুলিকে প্রতিদিন ২ কুইন্টাল খাবার ও ১০০ লিটার জলের যোগান দিতে হয়। আর ক’দিন ধরে প্রচন্ড হারে গরম বাড়ার ফলে এই জলের চাহিদা আরও বেড়েছে। এছাড়াও এত গুলি হাতির জন্য স্নানের জলের ব্যাবস্থা করা। এইসব দায়িত্ব মাহুথেরাই পালন করেন। তাই এই মাহুথেরা নিজেদের কাজ বন্ধ রাখার কারণে খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই সব কাজে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছিল।
আর সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকার ২৩৬ টি স্থায়ী পদে নতুন করে মাহুথ ও পাতাওয়ালা নিয়োগ করার জন্য খুব শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্ত মন্তব্য করেছেন যে, গত মাস ছয়েক ধরে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই নিয়োগের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। তাই এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই যে, মাহুথ ও পাতাওয়ালা সম্প্রদায়ের কর্মীদের আন্দোলনে ভীত হয়ে রাজ্য সরকার এহেন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ঠিক কবে নাগাদ এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে সেই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। অর্থ দফতরের কাছে এই বিষয়ে অনুমতি চেয়ে আবেদন পত্র পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেয়ে গেলেই খুব শীঘ্রই এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
OFFICIAL WEBSITE: CLICK HERE
MORE JOB NEWS: CLICK HERE
খাদ্য দপ্তরের তরফে বিরাট বড় কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জানা গিয়েছে সব…
প্রাইমারি টেট পরীক্ষার্থীর জন্য বিশাল বড় একটি সুখবর। অবশেষে যারা যারা প্রাইমারি টেট পাস করে…
দীপাবলীর আগেই সরকারি কর্মীদের DA ও পেনশন দুটোই দ্বিগুণ বাড়তে চলেছে। সরকারি কর্মী ও পেনশন…
এতদিন পর্যন্ত আমাদের রাজ্যের সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যার…
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে আবারো নতুন করে রাজ্যে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল। এ…
Home Guard Recruitment : আমাদের রাজ্যে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে শিক্ষিত বেকারত্বের হার। সরকারের…