আমাদের দেশে এমন অনেক মেধাবী ছাত্র ছাত্রী আছে যারা তাদের পরিবারের আর্থিক দুরাবস্থার কারণে ঠিকঠাক মতো লেখাপড়া করতে পারে না। বা অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে এখন বাড়িতে বসে হয়েছে বা পড়াশোনা শেষ করেই বাড়িতে বসে রয়েছে। এইদিকে চাকরির কোন খোজ খবর নেই তাই এই সমস্ত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায় তার জন্যই নতুন এই প্রকল্প। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ার দরুন একটা সময়ের পর সেই সমস্ত মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ফলে তাদের উচ্চশিক্ষা লাভের আশা অর্থাৎ উচ্চশিক্ষিত হয়ে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তুলে নিজের পরিবারের মানুষজনের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্নটা স্বপ্নটা স্বপ্ন হয়েই থেকে যায় সারাটা জীবন। আবার অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে বেকার অবস্থায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চাকরির কোন খোঁজ খবর নেই। এই অবস্থায় সকলের জন্যই আর্থিক সহায়তার জন্য নতুন প্রকল্পের উদ্ভাবন করেছেন।
তবে এবার থেকে আর এমনটা হবে না। কারন এই সব দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ State Bank of India আমাদের দেশের ষষ্ট থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যায়নরত সব ছাত্র ছাত্রীদের বার্ষিক ১৫ হাজার টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সারা ভারতের যে কোনো প্রান্তের দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যায়নরত মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
স্কলারশিপ প্রদানকারী সংস্থার নাম ও টাকার পরিমাণ:- State Bank of India এর অন্তর্গত Corporate Social Responsibility Foundation এর Buddy for Study স্কিমের অন্তর্ভুক্ত এই স্কলারশিপের নাম হল SBI আশা স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে এখানে আবেদনকারী প্রত্যেক দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী মেধাবী ছাত্র ছাত্রীকে বার্ষিক ১৫,০০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হবে। যাতে এই অর্থ দিয়ে তারা ভালো করে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতে পারে।
আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:-১) এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে হলে আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীদেরকে অবশ্যই ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত যে কোনো শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় থাকতে হবে।
২) আবেদনকারী বর্তমানে যে শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় আছেন তার আগের ক্লাসের ফাইনাল পরীক্ষায় কমপক্ষে ৭৫% নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে হবে।
৩) আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
৪) আবেদনকারীর পরিবারের বার্ষিক আয় ৩ লক্ষ টাকার নীচে হতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি:- এখানে আবেদন করতে হলে আবেদনকারী ছাত্র ছাত্রীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং তার জন্য যা যা করতে হবে সেগুলি হল-
১) প্রথমে এই স্কলারশিপ স্কিমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট Buddy for Study তে যেতে হবে।
২) তারপর সেখানে কিছু নিয়ম-কানুন দেখানো হবে সেগুলি মন দিয়ে ভালো করে পড়ে Apply now Option এ ক্লিক করতে হবে।
৩) তারপর একটি Window Open হবে সেখানে আপনার নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
৪) রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে একটি User Id ও Password দেওয়া হবে সেটি দিয়ে Login করলেই SBI আশা স্কলারশিপ ২০২২ বলে একটি Option আসবে সেখানে ক্লিক করে Start application এ ক্লিক করতে হবে।
৫) এরপর সেখানে একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের ফর্ম আসবে সেখানে আপনার নিজের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, অভিভাবকের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেন্ডার, বয়স, ঠিকানা, পরিবারের বার্ষিক আয়, আধার নম্বর, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে ফর্ম টিকে ফিলাপ করে ফেলতে হবে।
৬) তারপর আপনার নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করে ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করে দিতে হবে এবং সিগনেচারের জায়গায় একটি সিগনেচার স্ক্যান করে ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করে দিতে হবে।
৭) সবশেষে আপনার নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি এই ফর্মের সঙ্গে লিঙ্ক করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আপনার অ্যাপ্লিকেশন হয়ে যাবে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:- আবেদন করার সময় আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি যুক্ত করতে হবে সেগুলি হল-
১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড অথবা বার্থ সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
২) আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড স্ক্যান করা।
৩) আগের ক্লাসের ফাইনাল পরীক্ষার মার্কসীট স্ক্যান করা।
৪) বর্তমান ক্লাসের ভর্তির রসিদ স্ক্যান করা।
৫) আবেদনকারীর নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
৬) পঞ্চায়েত বা মিউনিসিপ্যালিটি প্রদত্ত একটি ইনকাম সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৭) আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর নিজের বা বাবা অথবা মায়ের ব্যাঙ্কের পাসবুকের প্রথম পাতার জেরক্স স্ক্যান করা।
আবেদনের সময় সীমা:- এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই আবেদনের কোনো রুপ শেষ সময় সীমা ধার্য করা হয়নি। সুতরাং ছাত্র ছাত্রীরা নিজেদের সময় সুযোগ মতো যখন ইচ্ছা তখনই আবেদন করতে পারবে।