সারা ভারতে এখনো পর্যন্ত এমন বহু দুঃস্থ পরিবারের বেকার যুবক যাবতীয় বা মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা রয়েছে যারা পরিবারের অর্থাভাবের কারনে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের পর আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে না বা পড়াশোনা বাদ দিয়ে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেইসব মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদেরকে নিজেদের লেখাপড়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে আমাদের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে একাধিক স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে। প্রত্যেক বছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর এইসব স্কলারশিপ গুলি দেওয়া হয়ে থাকে। আর মাঝে মধ্যেই আমরা আমাদের চ্যানেলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সেইসব স্কলারশিপ গুলির আপডেট দিয়ে থাকি। আজ আমরা সেই রকমই একটি স্কলারশিপের আপডেট দিতে চলেছি। সারা দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে সকল দুঃস্থ পরিবারের মেধাবী পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে। নীচে এই স্কলারশিপটির বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
আজ আমরা যে স্কলারশিপের সন্বন্ধে জানাতে চলেছি তার নাম হল “প্রগতি স্কলারশিপ”। All India Council for Technical Education (AICTE) এর পক্ষ থেকে প্রতি বছর এই স্কলারশিপটি দেওয়া হয়। এই স্কলারশিপ স্কিমের আওতায় সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে। এই স্কলারশিপ প্রধানত বিভিন্ন ধরনের টেকনিক্যাল কোর্সে পাঠরত পড়ুয়াদের দেওয়া হয়ে থাকে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই স্কলারশিপের আবেদন পদ্ধতি, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, প্রাপ্য অনুদানের পরিমাণ ইত্যাদির বিষয়ে বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
“প্রগতি স্কলারশিপ” এর জন্য আবেদন করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?
এই স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়ার নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকা আবশ্যিক। যেমন-
১) আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই একজন মহিলা হতে হবে।
২) আবেদনকারীকে AICTE স্বীকৃত যে কোনো টেকনিক্যাল কলেজে ডিগ্ৰি অথবা ডিপ্লোমা কোর্সের প্রথম বর্ষে পাঠরত অবস্থায় থাকতে হবে।
৩) আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার নীচে হতে হবে।
৪) এক একটি পরিবার থেকে সর্বাধিক ২ জন করে মহিলা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
“প্রগতি স্কলারশিপ” এর আওতায় বছরে সর্বাধিক কত জন পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দেওয়া হয়?
এই স্কলারশিপ স্কিমের আওতায় প্রতি বছর টেকনিক্যাল ডিপ্লোমা কোর্সের প্রথম বর্ষে পাঠরত মোট ৫,০০০ জন মহিলাকে এবং টেকনিক্যাল ডিগ্ৰি কোর্সের প্রথম বর্ষে পাঠরত মোট ৫,০০০ জন মহিলাকে স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে। উভয় ক্ষেত্রেই প্রত্যেক রাজ্য থেকে সর্বনিম্ন ৫০ জন থেকে সর্বাধিক ৭০০ জন মহিলাকে এই স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। সারা দেশ মিলিয়ে প্রতি বছর মোট ১০,০০০ জন টেকনিক্যাল কোর্সের প্রথম বর্ষে পাঠরত মহিলাকে এই স্কলারশিপটি দেওয়া হয়ে থাকে।
“প্রগতি স্কলারশিপ’ এ সংরক্ষিত শ্রেনীর পড়ুয়াদের জন্য কতগুলি আসন থাকে?
সরকারি চাকরির মতো এই স্কলারশিপের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মাফিক সংরক্ষিত শ্রেনীর প্রার্থীদের জন্য আসন সংরক্ষিত রয়েছে। বার্ষিক ১০,০০০ টি আসনের মধ্যে SC দের জন্য ১৫ শতাংশ, ST দের জন্য ৭.৫ শতাংশ ও OBC দের জন্য ২.৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে।
“প্রগতি স্কলারশিপ” পাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে?
প্রগতি স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য নিম্নলিখিত স্টেপ গুলি ফলো করতে হবে-
১) সর্বপ্রথম আবেদনকারীকে AICTE এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.aicte-india.org তে প্রবেশ করতে হবে।
২) তারপর একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার সহ বাকি সব প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
৩) তারপর সংশ্লিষ্ট সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া User Id ও Password দিয়ে Login করে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর ছবি তুলে আপলোড করতে হবে।
৪) সবশেষে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে।
আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কোন ডকুমেন্টস আপলোড করতে হবে?
প্রগতি স্কলারশিপের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সময় নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস গুলি আপলোড করতে হবে-
১) আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড স্ক্যান করা।
২) মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এর মার্কসীট ও সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৩) কাস্ট সার্টিফিকেট যদি থাকে তাহলে তা স্ক্যান করা।
৪) টেকনিক্যাল ডিপ্লোমা/টেকনিক্যাল ডিগ্ৰি কোর্সের প্রথম বর্ষে ভর্তির রসিদ স্ক্যান করা।
৫) আবেদনকারীর নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রথম পৃষ্ঠা স্ক্যান করা।
৬) পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রমান পত্র অর্থাৎ ইনকাম সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।
৭) আবেদনকারীর নিজের রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
প্রতি বছর উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন পত্র জমা নেওয়া শুরু হয়। এই বছরেও তাই হবে।
MORE JOB NEWS: CLICK HERE