পোস্ট অফিসের নয়া স্কিমে ৫০ টাকা বিনিয়োগ করে পান ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা | Post Office New Scheme 2023

আমাদের সকলেরই উচিত যতদিন পর্যন্ত পরিশ্রম করে উপার্জন করতে পারছি সেই সময়ের মধ্যে নিজের ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করে রাখা। যাতে করে বৃদ্ধ বয়সে যখন আমাদের আর পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করার ক্ষমতা থাকবে না তখন বা যখন আমরা আর এই পৃথিবীতে থাকব না তখন এই সঞ্চয় করে রাখা অর্থ দিয়ে যাতে জীবনযাত্রা অতিবাহিত করা যায়। কিন্তু সব উচিত কাজই তো আর সব সময় আমাদের পক্ষে করে ওঠা সম্ভব হয় না। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার খুব কম সংখ্যক ই আছেন যারা সরকারি চাকুরিজীবী। বেশিরভাগ মানুষই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সরকারি চাকুরিজীবি দের তো নাহলে ভবিষ্যত নিশ্চিত। কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বা দিন মজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা মানুষদের ভবিষ্যৎ কিভাবে সুনিশ্চিত হবে? বর্তমানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের যে পরিমাণ অর্থ বেতন দেওয়া হয় তা দিয়ে এই অগ্নিমূল্যের বাজারে সংসার চালানো, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো এগুলোই ঠিকঠাক মতো মানুষ সামলে উঠতে পারছেন না তার উপরে আবার ভবিষ্যতের জন্য টাকা সঞ্চয় করে রাখা, কোথায় পাবেন তারা এতো টাকা? আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বর্তমানে ব্যাঙ্ক গুলিতে অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলেই কমকরে ৫০০-১,০০০ টাকা প্রয়োজন। যা সবার পক্ষে জোগাড় করা  সম্ভব হয় না। তাছাড়া ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুললে সেখানে তো আর ৫০/১০০ টাকা করে জমা দেওয়া যাবে না একটু বেশি পরিমাণ অর্থ ই জমা করতে হবে। আর সবথেকে বড়ো সমস্যা হল যত দিন যাচ্ছে ব্যাঙ্ক গুলিতে সুদের হারও ক্রমশ কমছে। তাই মানুষ কষ্টশিষ্ট করে সেখানে কিছু পরিমাণ অর্থ জমালেও তার থেকে তেমন ভাবে লাভবান হতে পারছেন না। 

     আর সেই কারণে এই সব মানুষের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই ভারতীয় ডাক বিভাগের তরফ থেকে একাধিক ইনভেস্টমেন্ট মূলক স্কিম চালু করা হয়েছে। যেখানে খুব কম পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে তার থেকে অনেক গুন বেশি পরিমাণ অর্থ ফেরত পাওয়া যায়। সবথেকে বড়ো বিষয় হল এইসব ইনভেস্টমেন্ট মূলক স্কিম গুলিতে অর্থ বিনিয়োগ করার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে কোনো টাকা লাগে না। এখানে মানুষ নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ সঞ্চয় করে রাখতে পারেন। ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফ থেকে চালু করা বেশ কিছু ইনভেস্টমেন্ট মূলক স্কিম এর বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যেই আপনাদের জানিয়েছি। আজ আবারও এমনই এক স্কিমের বিষয়ে আমরা আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলেছি। যার নাম হল “গ্ৰাম সুরক্ষা যোজনা”। ১৯৯৫ সালে এই স্কিম চালু হলেও আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত এমন বহু মানুষ আছেন যারা এই স্কিমের বিষয়ে জানেন না। তাই তাদের জন্য আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি খুবই উপকারী হতে চলেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। তাহলে চলুন আর সময় নষ্ট না করে এই  “গ্ৰাম সুরক্ষা যোজনার” বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নেওয়া যাক। নিম্নে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।

“গ্ৰাম সুরক্ষা যোজনা” থেকে কি কি সুবিধা পাওয়া যায়?

ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফ থেকে চালু করা এই স্কিমের মাধ্যমে যে যে সুবিধা গুলি পাওয়া যায় সেগুলি হল-

১) এই স্কিমে ১৯ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত দৈনিক ৫০.৫০ টাকা করে অর্থাৎ মাসে ১,৫১৫ টাকা করে জমা রাখলে নির্দিষ্ট সময়ের পর  এককালীন ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া যায়।

২) এই “গ্ৰাম সুরক্ষা যোজনা” স্কিমে বছরে ১০,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়। 

৩) এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী ব্যাক্তি কত বছর বয়স থেকে এই স্কিমে টাকা জমানো শুরু করছেন এবং মাসে মাসে কত টাকা করে জমা দিচ্ছেন তার উপরই নির্দিষ্ট সময়ের পর তার ফেরত পাওয়া টাকার পরিমাণ নির্ভর করছে।

৪) এই স্কিমে বিনিয়োগকারীরা ৮০ বছর বয়স হওয়ার পর তারা যে সময় থেকে জমানো শুরু করেছিলেন তখন থেকে ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত  জমানো আসলের সঙ্গে সুদ মিলিয়ে মোট যে পরিমাণ অর্থ দাঁড়ায় সেই পরিমাণ অর্থ ফেরত পাবেন। তবে এই ব্যাক্তি যদি ৮০ বছর বয়সের আগেই মারা যান তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি যাকে নমিনি রেখেছিলেন তাকে ওই সম পরিমাণ অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।

৫) কোনো স্কিমের আওতায় থাকা কোনো বিনিয়োগকারীর যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তিনি এই স্কিমের থেকে ঋন ও নিতে পারেন।

৬) এমনকি এই স্কিমে টাকা বিনিয়োগ করা শুরু করার পর কোনো ব্যাক্তি যদি মাঝপথে আর টাকা জমা দিতে না পারেন তাহলে তিনি ৩ বছর পর সারেন্ডার করতে পারেন।

৭) এক্ষেত্রে প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার নির্ধারিত দিন যদি কোনো কারণে মিস হয়ে যায় তাহলেও চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়

   “গ্ৰাম সুরক্ষা যোজনা” স্কিমে নাম নথিভুক্ত করার জন্য কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

এই স্কিমে নিজের নাম নথিভুক্ত করে টাকা জমানোর জন্য কোনো রকম যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র ব্যাক্তিকে ভারতের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং তার বয়স ১৯-৫৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। 

এই স্কিমে অর্থ বিনিয়োগ করতে হলে কিভাবে করতে হবে?

“গ্ৰাম সুরক্ষা যোজনা” স্কিমে টাকা জমানোর জন্য আপনাকে আপনার নিকটবর্তী পোস্ট অফিসে গিয়ে সেখানকার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে এই স্কিমের বিষয়ে আরও বিস্তারিত ভাবে কিছু জানার থাকলে তা জেনে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা দিয়ে দৈনিক বা মাসিক হিসেবে টাকা জমা রাখতে হবে।

কি কি ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?

এই স্কিমের মাধ্যমে অর্থ বিনিয়োগ করা শুরু করতে হলে যে যে ডকুমেন্টস গুলি জমা দিতে হবে সেগুলি হল-

১) আধার কার্ডের জেরক্স।

২) ভোটার কার্ডের জেরক্স।

৩) রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।

৪) পঞ্চায়েত প্রদত্ত স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট।

কতদিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?

এখানে আবেদন করার কোনো রুপ শেষ সময় সীমা নেই। সব সময়ই আবেদন করা যায়। তাই আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী পোস্ট অফিস খোলা থাকাকালীন সময়ে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।


MORE JOB NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment