প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত পেনশন পেতে আজই কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন এই প্রকল্পে নাম লেখান | Govt Pension Scheme

 

আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার খুব কম সংখ্যক ই আছেন যারা সরকারি চাকুরিজীবী। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই হল খেটে খাওয়া মানুষ তাদের কোনো স্থায়ী রোজগার নেই। তারা হয় কোথাও দিন মজুরের কাজ করে অথবা কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দৈনিক বেতনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর বর্তমান যুগে জিনিস পত্রের যা আগুন দর তাতে করে সেই কাজ করে তারা যেটুকু টাকা উপার্জন করেন তা দিয়ে সংসার চালানো, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানো এগুলোই ঠিকঠাক মতো সামলে উঠতে পারছেন না তার উপরে আবার ভবিষ্যতের জন্য টাকা সঞ্চয় করে রাখা, কোথায় পাবেন তারা এতো টাকা? তবে একথাও ঠিক যে প্রতিটি মানুষেরই সময় থাকতে তাদের নিজেদের ও পরিবারের মানুষজনেদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করে রাখা উচিত। কিন্তু সব উচিত কাজই তো আর সব সময় করে ওঠা সম্ভব নয়। এতো দুর্মূল্যের বাজারে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের পক্ষে সংসারের দায়-দায়িত্ব পালন করে ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করে রাখা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু চিন্তার বিষয় যে একটা আছে সেটাও তো আর অস্বীকার করা যায় না। কারন যতদিন পর্যন্ত তাদের বয়স কম আছে তারা শারীরিক ভাবে সক্ষম রয়েছেন ততদিন পর্যন্ত তারা খেটে রোজগার করে সংসার চালাতে পারবেন কিন্তু যখন তাদের বয়স বেড়ে যাবে তারা শারীরিক ভাবে অক্ষম হয়ে পড়বেন তখন কি হবে? তখন তাদের সংসার কিভাবে চলবে? এই সব বিষয়ে চিন্তা করেই আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ লাভ করার পর থেকেই আমাদের দেশের খেটে খাওয়া দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার স্বার্থে ইতিমধ্যেই অটল পেনশন যোজনা, মানধন যোজনা প্রকল্পের মতো বেশ কিছু প্রকল্প চালু করেছেন। আর সেইসব প্রকল্প গুলির আওতায় এসে আমাদের দেশের বহু দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ ইতিমধ্যেই নিজেদের বৃদ্ধ বয়সের জীবন সুরক্ষিত করার দিশা খুঁজে পেয়েছেন। 

       

       ঠিক সেই ভাবেই আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে চালু হওয়া আরও একটি পেনশন প্রকল্পের বিষয়ে আমরা আজ কথা বলব। ৭৫ বছর পূর্তি হল আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই সময় থেকেই Public Provident Fund(PPF) নামে একটি পেনশন স্কিম আমাদের দেশে প্রচলিত রয়েছে। তাই আশা করি আপনারা সকলেই এই স্কিম এর সঙ্গে পরিচিত। আর এই স্কিমের অনুকরনেই আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষদের বৃদ্ধ বয়সের জীবনকে সুরক্ষিত করে তুলতে একটি নতুন পেনশন প্রকল্প চালু করেছেন, যার নাম জাতীয় পেনশন যোজনা প্রকল্প। যার মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর মানুষকে ৬০ বছর বয়স হওয়া মাত্রই প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা করে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে পেনশন দেওয়া হবে। তাহলে আসুন আর কথা না বাড়িয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্য পেনশনের পরিমাণ, আবেদন পদ্ধতি ইত্যাদির বিষয়ে বিশদে জেনে নেওয়া যাক।

জাতীয় পেনশন যোজনার সুবিধা কারা কারা পাবেন?

কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় পেনশন যোজনার দ্বারা আমাদের দেশের সেই সব মানুষদেরকেই ৬০ বছর বয়সের পর প্রতি মাসে পেনশন দেওয়া হবে যাদের নিম্মলিখিত যোগ্যতা গুলি আছে। আর সেগুলি হল-

১) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।

২) আবেদনকারীকে অবশ্যই একজন খেটে খাওয়া মানুষ হতে হবে অর্থাৎ তার কোনো স্থায়ী রোজগার থাকা চলবে না। 

৩) আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই সর্বনিম্ম ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে।

৪) আবেদনকারীর নিজের আধার কার্ড অবশ্যই থাকতে হবে।

৫) আবেদনকারীর নিজের নামে পোস্ট অফিসে বা ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।

৬) যে সমস্ত ভারতীয় নাগরিকেরা ভারত সরকারের অধীনে ট্যাক্স দিয়ে থাকেন তারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না।

৭) আবেদনকারীর পরিবারের বার্ষিক আয় অবশ্যই ২ লক্ষ টাকার নীচে হতে হবে।

জাতীয় পেনশন যোজনার মাধ্যমে প্রাপ্য পেনশনের পরিমাণ ও অন্যান্য সুবিধা গুলি কি কি?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই জাতীয় পেনশন যোজনা প্রকল্পে আবেদন করলে যে যে সুবিধা গুলি পাওয়া যাবে সেগুলি হল-

১) কোনো ব্যাক্তির বয়স যদি ১৮-৬০ বছরের মধ্যে হয় আর সে যদি এই প্রকল্পে নিজের নাম নথিভুক্ত করে প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে অ্যাকাউন্টে জমা রাখেন তাহলে যখন তার ৬০ বছর বয়স হবে তখন তার মোট জমানো টাকার পরিমাণ দাঁড়াবে ৫ লক্ষ ৪ হাজার টাকা। তখন থেকে তাকে আর কোনো টাকা জমা দিতে হবে না উল্টে তার মোট জমানো টাকার যে সুদ হয় তার উপরে সরকার আরও সুদ যোগ করে প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত তাদের পেনশন দেবেন।

২) এই মোট জমানো টাকার ১০% আপনি প্রতি বছর রিটার্ন পাবেন।

৩) এক্ষেত্রে যে ব্যাক্তির নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হবে সে যদি কোনো কারণে মারা যান তাহলে সে মারা যাওয়ার পর যে সেই অ্যাকাউন্টের নমিনি থাকবেন তাকে সুদ সহ মোট জমানো টাকা একবারে ফেরৎ দিয়ে দেওয়া হবে।

৪) এই প্রকল্পের মাধ্যমে জমানো টাকার জন্য কোনো রকম ট্যাক্স দিতে হবে না।

এই প্রকল্পে কিভাবে আবেদন করতে হবে?

১) জাতীয় পেনশন যোজনার সুবিধা পেতে হলে আপনাকে সবার প্রথমে আপনার নিকটবর্তী পোস্ট অফিস বা ব্যাঙ্কে একটি নিজের নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

২) এরপর সেই ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস যেখানে আপনি অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন সেখানে গিয়ে এই প্রকল্পের একটি ফর্ম তুলে সেখানে নিজের যাবতীয় তথ্য লিখে ফর্ম টিকে ফিলাপ করে তার সঙ্গে নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলির এক কপি করে জেরক্স যুক্ত করে ওই ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসেই জমা করে আসতে হবে।

৩) তারপর ৬০ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে ওই অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হবে।

আবেদন পত্রের সঙ্গে কি কি ডকুমেন্টস জমা করতে হবে?

আবেদন করার সময় আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলির এক কপি করে জেরক্স জমা দিতে হবে সেগুলি হল-

১) আধার কার্ডের জেরক্স।

২) ভোটার কার্ডের জেরক্স।

৩) ইনকাম সার্টিফিকেটের জেরক্স।

৪) স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেটের জেরক্স।

৫) ব্যাঙ্কের পাস বইয়ের প্রথম পাতার জেরক্স।

৬) আবেদনকারীর নিজের এক দু কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো।

প্রার্থী বাছাই করা হবে কিভাবে?

এই প্রকল্পে আবেদন পত্র জমা করার পর আবেদনকারী প্রার্থীদের আবেদন পত্র গুলি ভালো করে খতিয়ে দেখে যারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদের ৬০ বছর বয়স হওয়া মাত্রই প্রতি মাসে অ্যাকাউন্টে সরাসরি সরকারের তরফ থেকে  পেনশনের টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

আবেদন করার শেষ তারিখ:-

কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় পেনশন যোজনার জন্য আবেদন পত্র জমা নেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এই আবেদনের কোনো রুপ শেষ সময় সীমা নেই। তাই আপনারা আপনাদের সময় সুযোগ মতো এখানে আবেদন করতে পারবেন। 


MORE JOB NEWS: CLICK HERE
চাকরির সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL: CLICK HERE

bengalpravakar.com

Recent Posts

নতুন করে শুরু হলো স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপে আবেদন, আবেদন করলে টাকা

SVM Scholarship 2024 : দিনের পর দিন রাজ্যে কমছে শিক্ষিত পড়ুয়াদের হার। আমাদের পশ্চিমবঙ্গে এমন…

2 days ago

পশ্চিমবঙ্গের রূপশ্রী প্রকল্পে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও অ্যাকাউন্টেন্ট পদে কর্মী নিয়োগ | Ruposhree prakalpa recruitment

রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নতুন করে একটি চাকরির সুখবর। যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরির সন্ধান…

2 days ago

ভারতের সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন পর্ব – 5। WB India General knowledge question Answer Practice set – 5

আজ আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চলেছি ভারতের কিছু অজানা তথ্য বা ভারতের কিছু সাধারণ…

2 weeks ago

উচ্চ মাধ্যমিক পাশেই রাজ্য দূরদর্শন কেন্দ্রে প্রচুর কর্মী নিয়োগ | Kolkata Doordarshan Kendra Job Recruitment

 চাকরি প্রার্থীদের জন্য আরও একটি নতুন চাকরির খবর নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি। এবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি…

1 year ago

৫,০০০ হাজারের বেশি শূন্য পদে স্বাস্থ কর্মী নিয়োগ | WB Health Recruitment

 চাকরিপ্রার্থীদের জন্য দারুণ সুখবর, রাজ্যে পুনরায় ৫,০০০ হাজারের বেশি শূন্য পদে স্বাস্থ কর্মী ( WB…

1 year ago

পশ্চিমবঙ্গের গ্রুপ সি পদে প্রচুর কর্মী নিয়োগ | WB Group-C Recruitment

 চাকরি প্রার্থীদের জন্য আরও একটি নতুন চাকরির খবর নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে…

1 year ago