করোনার পর থেকে সরকারি হোক বা বেসরকারি সাম্প্রতিককালে চাকরির বাজারের হাল খুবই শোচনীয়। সেই কারণেই যত দিন যাচ্ছে ততই আমাদের দেশ তথা রাজ্যের বেকারত্বের হার ক্রমশ বেড়েই চলেছে। আর তা নিয়ে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার উভয়েই খুবই চিন্তার মধ্যে রয়েছে। তাই যত শীঘ্র সম্ভব এই ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের হারকে আয়ত্ত্বে আনতে উভয় পক্ষই তৎপর হয়ে উঠেছে । সারা দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বেকারত্ব দূরীকরণ অভিযান। প্রায়শই কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ছোটো বড়ো সংস্থার পক্ষ থেকে কম বেশি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হচ্ছে। যদিও সেগুলির মধ্যে বেশিরভাগই চুক্তি ভিত্তিক চাকরি। সেইসঙ্গে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা গুলিতেও মাঝে মধ্যে অল্প স্বল্প কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু এতসব করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। কারন চাকরির সুযোগ কম আর বেকারের সংখ্যা বেশি। তাই এই চুক্তি ভিত্তিক পদের চাকরি গুলি নিয়েও চলছে হাড্ডাহাড্ডি কম্পিটিশন। আর সেই কম্পিটিশনে যারা জয়ী হচ্ছেন তারাও যে পরিমাণ মাস মাইনে পাচ্ছেন তা দিয়ে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে গিয়েছে।
ফলত সাম্প্রতিককালে অনেকেই চাকরি করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ফাঁকা সময়কে কাজে লাগিয়ে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে অথবা যে সব বেকার যুবক যুবতীরা হাজার চাকরির চেষ্টা করেও কোনো ভাবেই চাকরি জোগাড় করে উঠতে পারছেন না তারা বিভিন্ন ধরনের ছোটোখাটো ব্যাবসাকে নিজেদের জীবিকা নির্বাহের পথ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু শুধুমাত্র ব্যাবসা করার পরিকল্পনা করলেই তো আর চলবে না তার জন্য সবার আগে যা প্রয়োজন তা হল পুঁজি। শুরুতেই একটা মোটা অংকের টাকা সেখানে বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু সবার পক্ষে তো আর তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই পুঁজির অভাবে অনেকেই ব্যাবসা করার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তা করতে পারেন না।
তবে আজ আমরা এমন কয়েকটি ব্যাবসার সন্বন্ধে আপনাদের জানাতে চলেছি যেগুলি শুরু করার জন্য কোনো মোটা অংকের পুঁজির প্রয়োজন নেই। মাত্র ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে নিজের বাড়িতেই কোনো একটা জায়গায় আপনি অনায়াসেই এই ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন। এবং যেহেতু এখন অনলাইনের যুগ তাই অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমেও আপনি এইসব জিনিসপত্র গুলি বিক্রি করে মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সেইসব ব্যাবসা গুলির সন্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।
মোমবাতির ব্যাবসা:-
আমাদের সকলের বাড়িতেই কমবেশি মোমবাতির ব্যাবহার রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে বর্তমান কালেও আমাদের সকলের বাড়িতে কারেন্ট চলে গেলে বা ঠাকুর ঘরে মোমবাতি জ্বালানোর রেওয়াজ রয়েছে। তার উপর কোন জন্মদিন বা বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও কেক কাটার সময় মোমবাতি জ্বালানো হয়ে থাকে। তাই মাত্র ১০-২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে যদি আপনি মোমবাতি তৈরির ব্যাবসা শুরু করতে পারেন তাহলে তা বিক্রি হওয়া নিয়ে আপনাকে সমস্যায় পড়তে হবে না। বর্তমান যুগে এর যা চাহিদা তাতে এই ব্যাবসা শুরু করলে প্রতি মাসে আপনি মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
খাম তৈরির ব্যাবসা:-
বিভিন্ন অফিসিয়াল চিঠি জরুরি কাগজপত্র আদান প্রদান করতে ও আরোও অন্যান্য ক্ষেত্রে খামের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। খুব কম খরচেই নানান রঙের কাগজ ও কার্ড বোর্ড দিয়ে খুব সহজেই খাম তৈরি করা যায়। মাত্র ১০-২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে এই ব্যাবসা শুরু করে তার থেকে আপনি মাসে মাসে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
টিপ তৈরির ব্যাবসা:-
তা সে বিবাহিতা হোক বা অবিবাহিতা প্রতিটি নারীরই প্রসাধনের মূখ্য দ্রব্য হল টিপ। কপালে টিপ ছাড়া নারী যেন অসম্পূর্ণ। তাই সারা বিশ্বের বাজারেই টিপের চাহিদা খুব বেশি। তাই মাত্র ১০-১২ হাজার টাকা খরচ করে এই টিপের ব্যাবসা শুরু করে সেই টিপ বাজারে খুচরো ও পাইকারি মূল্যে বিক্রি করে সেখান থেকে আপনি মোটামুটি ভালো অংকের টাকাই ইনকাম করতে পারবেন ।
চক তৈরির ব্যাবসা:-
যতই অনলাইন ক্লাসের যুগ আসুক না কেন এখনো পর্যন্ত গ্ৰামের পাঠশালা থেকে শুরু করে বড়ো বড়ো বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চকের ব্যাবহার আজও সমান ভাবে রয়েছে। চক তৈরির মূল উপাদান হল প্লাস্টার অফ প্যারিস। তার সঙ্গে জিপসাম, এক ধরনের পাউডার মিশিয়ে তা ছাঁচে ফেলে চক তৈরি করা হয়। আর রঙিন চক তৈরির ক্ষেত্রে এইসব উপাদান গুলির সাথে রঙ মেশানো হয়। মাত্র ১০-১২ হাজার টাকা দিয়ে এই চক তৈরির ব্যাবসা শুরু করলে বাজারে এখনো পর্যন্ত চকের যা চাহিদা তাতে করে অনায়াসেই আপনি ভালো অংকের টাকা এই চকের ব্যাবসা থেকে উপার্জন করতে পারবেন।
সুতরাং চাকরি পাচ্ছেন না বলে আফসোস করবেন না। এদিক ওদিক ছুটে বেরিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। যত শীঘ্র সম্ভব এই ব্যাবসা গুলির মধ্যে নিজের পছন্দ মতো একটি ব্যাবসা শুরু করুন। আর নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়ে উঠুন।
MORE NEWS: CLICK HERE