সারা ভারতের সকল শ্রেণীর নাগরিকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বিরাট বড়ো সুখবর। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেশের প্রতিটি সাধারণ মানুষের কল্যানার্থে আবারও ছয়টি নতুন জনকল্যাণ মূলক প্রকল্প চালু করা হল। কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই খুব সাধারণ কয়েকটি যোগ্যতা থাকলেই সারা ভারতের যে কোনো সাধারণ নাগরিকেরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং এই প্রকল্পের আওতাধীন যাবতীয় সুবিধা লাভ করতে পারবেন। তবে তাকে অবশ্যই ভারতের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। তাহলে চলুন এবারে এই বিশেষ ছয়টি প্রকল্পের নাম, প্রকল্প গুলির মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা, আবেদন পদ্ধতি ইত্যাদির বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ লাভ করার পর থেকেই আমাদের দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের জনগণের মঙ্গলার্থে একাধিক প্রকল্প চালু করেছেন যেগুলির অবদান প্রতিটি ভারতবাসীর জীবনে সত্যিই অনস্বীকার্য। দেশের দরিদ্র কৃষক শ্রেনীর মানুষদের মঙ্গলার্থে তিনি চালু করেছেন মানধন যোজনা ও কৃষক সন্মান নিধি। দেশের দরিদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মঙ্গলার্থে চালু করেছেন অটল পেনশন যোজনা। দেশের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের মঙ্গলার্থে চালু করেছেন বিভিন্ন ধরনের ন্যাশানাল স্কলারশিপ। দেশের বেকার যুবক যুবতীদের মঙ্গলার্থে চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা নামক কর্মমুখী প্রশিক্ষণ এবং রোজগার মেলা। এছাড়াও দেশের শিক্ষিত ও অশিক্ষিত প্রতিটি বেকার মহিলাদের মঙ্গলার্থে তাদেরকে ফ্রি তে একটি করে সেলাই মেশিন দেওয়া চালু করেছেন।
উপরিউক্ত এইসব প্রকল্প গুলির সঙ্গে আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি নাগরিকই পরিচিত। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্প গুলির আওতায় এসে আমাদের দেশের বহু জনগন ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রকম ভাবে উপকৃত হয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত আমাদের দেশে এমন বহু দরিদ্র পরিবারের মানুষজন রয়েছেন যারা এইসব প্রকল্প গুলির বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে না জানার কারণে এইসব প্রকল্প গুলির মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা গুলি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই যারা জানেন না তাদের এই প্রকল্প গুলির বিষয়ে যাবতীয় তথ্য ভালোভাবে জানিয়ে দিতে রইল আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। নীচে এই প্রকল্প গুলির বিষয়ে আলোচনা করা হল।
পেনশন যোজনা:-
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে দেশের প্রতিটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা শ্রমিক শ্রেণীর মানুষদের অটল পেনশন যোজনার মাধ্যমে মাসিক ৩০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া হয়। তবে তার জন্য তাদেরকে ১৮ বছরের উর্ধ্বে বয়স হলেই এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করে প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হয়। তবে কোনো ব্যাক্তির যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে তিনি আরও বেশি পরিমাণ টাকা জমা রাখতে পারেন। অর্থাৎ যে ব্যাক্তি যত বেশি টাকা জমা রাখতে পারবেন তিনি তত বেশি পরিমাণ টাকা প্রতি মাসে পেনশন হিসেবে পাবেন।
কৃষক শ্রেনীর জন্য চালু করা প্রকল্প:-
ভারতের দরিদ্র কৃষক শ্রেনীর জন্য তার চালু করা প্রকল্প গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- কৃষক সন্মান বিধি। যার মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিটি দরিদ্র কৃষককে বছরে তিনটি ধাপে ২০০০ টাকা করে অর্থাৎ এক বছরে মোট ৬০০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়। এছাড়াও রয়েছে মানধন যোজনা প্রকল্প। যার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর কৃষককে তাদের ৬০ বছর বয়স হওয়া মাত্রই প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া হয়।
কর্মমুখী প্রকল্প:-
ভারতের প্রতিটি বেকার যুবক যুবতীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু করা হয়েছে রোজগার মেলা। যার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ মোট ৩৮ টি দপ্তরে বিভিন্ন যোগ্যতায় মোট ৭৫ হাজার বেকার যুবক যুবতীকে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগে দেশের বেকার যুবক যুবতীদের জন্য চালু করা আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হল “প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা”। যার মাধ্যমে দেশের ন্যুনতম মাধ্যমিক পাস বেকার যুবক যুবতীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষণ শেষে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ করে দেওয়া হয়।
স্কলারশিপ:-
আমাদের দেশে এমন বহু মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা আছে যাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতটাই দুর্বিসহ যে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর আরও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার ইচ্ছা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তারা বাধ্য হয় লেখাপড়া ছেড়ে দিতে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা ন্যাশানাল স্কলারশিপের মাধ্যমে এইসব দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। তবে এক্ষেত্রে তাদেরকে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অন্তত পক্ষে ৭৫% নম্বর পেয়ে থাকতে হবে। এছাড়াও ১ম শ্রেনী থেকে ১০ ম শ্রেনী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের ও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের ফাইনাল পরীক্ষায় ৫০% নম্বর থাকতে হবে।
রেশন কার্ড এর ভিত্তিতে দেওয়া প্রকল্প:-
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে আমাদের দেশের বি পি এল রেশন কার্ড হোল্ডার দের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য যদি মারা যান তাহলে সেক্ষেত্রে তার পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ২০,০০০ টাকা করে দেওয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির পরিবারের যে সদস্যকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০,০০০ টাকা বীমা দেওয়া হবে সেই মৃত ব্যক্তির বয়স অবশ্যই ১৮-৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এই প্রকল্পের নাম হল “জাতীয় পরিবার সহায়তা প্রকল্প”।
জনধন যোজনা প্রকল্প:-
কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে চালু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের দেশের দরিদ্র শ্রেণীর মানুষেরা বিনামূল্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার এবং সেই অ্যাকাউন্ট থেকে মাসে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত তোলার সুবিধা লাভ করেন।