মাধ্যমিক অথবা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করলেই ১০,০০০ টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার | WB Madhyamik and HS Pass Apply Now

 

মাধ্যমিক পাশ হলেই 10হাজার টাকা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। যারা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন বা নতুন করে যারা মাধ্যমিক অথবা উচ্চ মাধ্যমিক পাস করবেন তারা সকলেই আবেদন করলে এই প্রকল্পের টাকা পেয়ে যাবেন। যে সকল পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপ স্কিমের আওতায় নাম নথিভুক্ত করবে তাদের প্রত্যেককে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১০,০০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হবে। রাজ্যের প্রতিটি আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র পরিবারের ছাত্র ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতেই এই স্কলারশিপ স্কিমের সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।  এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী নাগরিক হতে হবে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া এই স্কলারশিপের খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী সকল দরিদ্র শ্রেণীর পড়ুয়াদের মধ্যে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিশেষ হৈচৈ পড়ে গেছে। তবে সেইসঙ্গে এই স্কলারশিপের আওতায় কিভাবে আবেদন করতে হবে, তার জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে, কবে থেকে আবেদন শুরু হবে কবে শেষ হবে এই বিষয় গুলি নিয়ে রাজ্যের ছাত্র ছাত্রীদের মনে নানারকম প্রশ্ন জাগছে। আর সেই গুলির যথাযথ উত্তর দিতেই রইল আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। 

     আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এমন অনেক দরিদ্র শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরা রয়েছে যারা পরিবারের আর্থিক দুরাবস্থার কারনে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের পর লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। সেইসব ছাত্র ছাত্রীদেরকে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে আর্থিক সাহায্য দানের উদ্দেশ্যে আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর পদ লাভ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত একাধিক স্কলারশিপ স্কিম চালু চলেছেন। যেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ, মেরিট কাম মিনস এবং মাইনোরিটি স্কলারশিপ। প্রতি বছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্যের দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের আরও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে সাহায্য করার জন্য এইসব স্কলারশিপ গুলি দেওয়া হয়ে থাকে। 

      আর আজ আমরা রাজ্য সরকার কর্তৃক চালু হওয়া এমনই এক স্কলারশিপ স্কিমের বিষয়ে আলোচনা করতে চলেছি। যার নাম হল নবান্ন স্কলারশিপ। এ রাজ্যের অনেকে অবশ্য এই স্কলারশিপকে উত্তরকন্যা স্কলারশিপ বলেও জানেন। পশ্চিমবঙ্গের দুই প্রান্তে এটি দুই ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। উত্তর বঙ্গে এই স্কলারশিপকে উত্তরকন্যা স্কলারশিপ বলা হয় আর দক্ষিনবঙ্গে এই স্কলারশিপকে নবান্ন স্কলারশিপ বলা হয়। যদি ও এই স্কলারশিপ নতুন নয়। কয়েক বছর আগেই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এই স্কলারশিপের সূচনা করেছিলেন। সেই সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই স্কলারশিপ চলে আসছে। প্রতি বছরই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই স্কলারশিপ লাভ করে এ রাজ্যের বহু দরিদ্র পরিবারের ছাত্র ছাত্রীরা উপকৃত হয়। তবে এখনও পর্যন্ত আমাদের রাজ্যে এমন অনেক দরিদ্র পরিবারের ছাত্র ছাত্রীরা আছে যারা এই স্কলারশিপ স্কিমের নাম শুনে থাকলেও এর বিষয়ে সেভাবে বিশদে কিছু জানে না। তাই এই সুবিধা লাভ করা থেকে বঞ্চিত হয়। সেই সকল ছাত্র ছাত্রীদেরকে এই স্কলারশিপ স্কিমের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানতেই আমরা আজ এই প্রতিবেদন নিয়ে হাজির হয়েছি। নীচে এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।

নবান্ন স্কলারশিপ বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপে আবেদন করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

এই স্কলারশিপের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকা আবশ্যিক। যেমন-

১) আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

২) আবেদনকারীকে যদি মাধ্যমিকের পর আবেদন করে তাহলে তাকে মাধ্যমিকে কমপক্ষে ৫০-৬০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে হবে। সেইসঙ্গে বর্তমানে একাদশ শ্রেণীতে পাঠরত অবস্থায় থাকতে হবে বা সবেমাত্র ভর্তি হয়ে থাকলেও চলবে।

৩) আর আবেদনকারী যদি উচ্চমাধ্যমিকের পর আবেদন করে তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে উচ্চমাধ্যমিকে ৫০-৬০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে হবে। সেইসঙ্গে বর্তমানে স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষে পাঠরত অবস্থায় থাকতে হবে অথবা সবেমাত্র ভর্তি হয়ে থাকলেও চলবে।

৪) আবার আবেদনকারী যদি স্নাতক ডিগ্রি পাস করার পর আবেদন করে তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে স্নাতক স্তরে ৫৩-৫৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে হবে। সেইসঙ্গে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রথম বর্ষে পাঠরত অবস্থায় থাকতে হবে অথবা সবে মাত্র ভর্তি হয়ে থাকলেও চলবে।

৫) তবে কোনো পড়ুয়া যদি ইতিমধ্যেই স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ বা অন্য যে কোনো রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকার প্রদত্ত স্কলারশিপের সুবিধা লাভ করে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে সেই পড়ুয়া এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে না।

৬) এক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনস্থ যে কোনো স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে হবে তবেই সে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে নচেৎ নয়।

৭) আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় অবশ্যই ২.৫ লক্ষ টাকা বা তার নীচে হতে হবে।

নবান্ন স্কলারশিপ বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপের মাধ্যমে কত টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়?

নবান্ন স্কলারশিপ বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপের আওতায় থাকা প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীকে বছরে ১০,০০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্কলারশিপ প্রদান করা হয়।

নবান্ন স্কলারশিপ বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে?

এক্ষেত্রে অনলাইন আবেদনের কোনো রুপ ব্যাবস্থা নেই তাই ইচ্ছুক ও যোগ্য পড়ুয়াদেরকে সম্পূর্ণ ভাবে অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য নিম্নলিখিত ধাপ গুলি অনুসরণ করে আবেদন করতে হবে-

১) প্রথমে এই স্কলারশিপ স্কিমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট http://wbcmo.gov.in এ প্রবেশ করতে হবে।

২) তারপর সেখান থেকে নবান্ন স্কলারশিপ বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপ ২০২৩ এর আবেদন পত্রটি ডাউনলোড করে নিয়ে সাদা A4 সাইজ পেপারে এর একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিতে হবে।

৩) তারপর সেখানে নির্দিষ্ট স্থান অনুযায়ী প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে ফর্মটিকে ফিলাপ করে ফেলতে হবে।

৪) তারপর যাবতীয় প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্টস সহ অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর এক কপি করে জেরক্স বের করে নিতে হবে।

৫) সবশেষে এই সবকিছু একসাথে খামে ভরে পোস্টের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে দিতে পারলেই আবেদন হয়ে যাবে।

আবেদন করার সময় কি কি ডকুমেন্টস সহ আবেদন পত্র জমা দিতে হবে?

অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় তার সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ জমা দিতে হবে সেগুলি হল-

১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেট এর এক কপি জেরক্স।

২) ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড এর এক কপি জেরক্স।

৩) আবেদনকারী বর্তমানে যে স্তরে লেখাপড়া করছেন তার আগের স্তরের ফাইনাল পরীক্ষার মার্কসীট ও সার্টিফিকেটের এক কপি করে জেরক্স।

৪) বর্তমানে আবেদনকারী যে স্তরে লেখাপড়া করছেন তার ভর্তির রসিদের এক কপি জেরক্স ‌

৫) MIA অথবা MP রেকমেন্ডেশন লেটার এর এক কপি জেরক্স ‌‌।

৬) সেলফ ডিক্লিয়ারেশন সার্টিফিকেট এর প্রিন্ট করা কপি।

৭) পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রমান পত্র অর্থাৎ ইনকাম সার্টিফিকেট এর অরিজিনাল কপি।

৮) ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতার জেরক্স।

৯) দুই কপি রিসেন্ট তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।

১০) Rank সার্টিফিকেটের এর এক কপি জেরক্স।

কত দিনের মধ্যে আবেদন পত্র জমা দিতে হবে?

এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন করার জন্য কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। প্রতি বছর মাধ্যমিক/ উচ্চমাধ্যমিক/স্নাতক ডিগ্রি পাস করার পর যে কোনো পড়ুয়া এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন পত্র পাঠানোর ঠিকানা কি?

 উত্তরকন্যা স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারী ছাত্র ছাত্রীরা অর্থাৎ উত্তরবঙ্গের ছাত্র ছাত্রীরা আবেদন পত্র পোস্টের মাধ্যমে নিম্নলিখিত ঠিকানায় পাঠাবেন 👇

       Department of CMFF Scholarships,

      Office Of the Chief Minister’s mini 

      Secretariat ‘Utterkanya’, New Satellite

      Township Fulbari, Near NJP Station,

      Jalpaiguri.

নবান্ন স্কলারশিপের জন্য আবেদনকারী ছাত্র ছাত্রীরা অর্থাৎ দক্ষিনাবঙ্গের ছাত্র ছাত্রীরা আবেদন পত্র পোস্টের মাধ্যমে নিম্নলিখিত ঠিকানায় পাঠাবেন 👇

       Department of CMRF Scholarships,

      Chief Ministers Office, ‘Nabanna’, 

      14th Floor, 325 Sarat Chatterjee Road,

      Howrah-711102.



APPLICATION FORM 1: CLICK HERE
APPLICATION FORM 2: CLICK HERE


MORE NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় ও নিত্য নতুন এই ধরনের আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment