বিশেষ এক স্কলারশিপ স্কিমের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের সকল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস পড়ুয়াকে ১০,০০০ টাকা করে স্কলারশিপ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তের আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা পরিবারের পড়ুয়ারা যারা মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর পরিবারের অর্থাভাবের কারনে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় তাদেরকে উচ্চশিক্ষা লাভের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতেই প্রতি বছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে সম্প্রতি এই স্কলারশিপ প্রদানের ক্ষেত্রে একটি দুর্দান্ত পরিবর্তন এনেছে রাজ্য সরকার। যার ফলে এবার থেকে রাজ্যের আরও বেশি সংখ্যক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস পড়ুয়া আরও বেশি সহজে এই স্কলারশিপের আওতায় ১০,০০০ টাকা করে লাভ করতে পারবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক যে, এই স্কলারশিপ প্রদানের ক্ষেত্রে ঠিক কি পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এতদিন পর্যন্ত আমাদের রাজ্যের যে সকল পড়ুয়ারা মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬০% এর নীচে অথচ ৫০% এর উপরে নম্বর পেতেন তাদেরকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ১০,০০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হতো। কিন্তু গত মঙ্গলবার নবান্নে অনুষ্ঠিত হওয়া এক বৈঠকে এই স্কলারশিপ প্রসঙ্গে একটি দুর্দান্ত খুশির বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন যে, খুব শীঘ্রই এক নতুন নিয়ম চালু হতে চলেছে। আর এই নিয়ম চালু হওয়ার পর এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারী পড়ুয়াকে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকে ৫০% এর উপর নম্বর না পেলেও চলবে। যেসব পড়ুয়ারা ৫০% বা তার নীচে নম্বর পাবেন তারাও এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং স্কলারশিপ পাবেন।
এতক্ষণ ধরে আমরা আপনাদের যে স্কলারশিপ স্কিমের বিষয়ে বলে চলেছি তার নাম হল নবান্ন স্কলারশিপ। পশ্চিমবঙ্গের ভিন্ন ভিন্ন স্থানে এই স্কলারশিপ ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন উত্তরবঙ্গের পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপকে উত্তরকন্যা স্কলারশিপ বলে জানেন। দক্ষিনবঙ্গের পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপকে নবান্ন স্কলারশিপ বলে জানেন। এছাড়াও যেহেতু এই স্কলারশিপ মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে দেওয়া হয় তাই সারা পশ্চিমবঙ্গে এই স্কলারশিপ মুখ্যমন্ত্রী ত্রান তহবিল বৃত্তি নামেও পরিচিত। আর বেশি কথা না বাড়িয়ে এবারে এই স্কলারশিপের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, আবেদন পদ্ধতি ইত্যাদির বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
নবান্ন স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে?
যে সকল পড়ুয়ারা নবান্ন স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে চান তাদের নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকতে হবে। যেমন-
১) আবেদনকারী পড়ুয়াকে অন্তত পক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক/ডিপ্লোমা ও স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে হবে। তবেই তিনি এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন নচেৎ নয়।
২) এক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়াকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
৩) আবেদনকারীকে অতি অবশ্যই একাদশ শ্রেণীতে/ডিপ্লোমা বা স্নাতক ডিগ্রির প্রথম বর্ষে/স্নাতকোত্তর ডিগ্রির প্রথম বর্ষে পাঠরত অবস্থায় থাকতে হবে।
৪) কোনো পড়ুয়া যদি ইতিমধ্যেই স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ বা অন্য কোনো রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে সেই পড়ুয়া এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে না।
৫) এক্ষেত্রে আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় হতে হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মধ্যে।
নবান্ন স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করতে হবে?
নবান্ন স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক ও যোগ্য পড়ুয়ারা অনলাইন ও অফলাইন দুই রকম ভাবেই আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনের মাধ্যমে যেভাবে আবেদন করতে হবে তা হল-
১) আবেদনের শুরুতে এই স্কলারশিপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://wbcmo.gov.in এ গিয়ে সেখান থেকে এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার আবেদন পত্রটি ডাউনলোড করে সাদা A4 সাইজ কাগজে তার প্রিন্ট বের করে নিতে হবে।
২) তারপর সেই আবেদন পত্রের নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে ফর্মটিকে নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে।
৩) তারপর সেই পূরন করা আবেদন পত্র, প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কসীট ও সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে একসাথে একটি ফাইল তৈরি করে cmo@wb.gov.in এই ই-মেইল অ্যাড্রেসে পাঠিয়ে দিলেই আবেদন হয়ে যাবে।
অন্যদিকে, অফলাইনের মাধ্যমে যেভাবে আবেদন করতে হবে তা হল-
১) উপরিউক্ত নিয়মে আবেদন পত্রের প্রিন্ট আউট বের করে তা পূরণ করতে হবে।
২) তারপর প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কসীট ও সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর এক কপি করে জেরক্স বের করে নিতে হবে।
৩) এবং সবশেষে এই সবকিছু একসাথে একটি খামে ভিতর ভরে নির্দিষ্ট ঠিকানায় গিয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে।
আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কোন ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?
অনলাইন ও অফলাইন আবেদন উভয় ক্ষেত্রেই আবেদনকারী প্রার্থীদের নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস গুলি জমা দিতে হবে। যেমন-
১) আবেদনকারী বর্তমানে যে শ্রেনীতে পাঠরত অবস্থায় রয়েছেন তার আগের শ্রেনীর ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট।
২) নতুন ক্লাসে ভর্তির রসিদ।
৩) BDO বা SDO অফিসের তরফ থেকে দেওয়া পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রমান পত্র অর্থাৎ ইনকাম সার্টিফিকেট।
৪) আবেদনকারী পড়ুয়া যে এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সেখানকার MLA এর সুপারিশ পত্র।
৫) সেলফ ডিক্লিয়ারেশন সার্টিফিকেট।
কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?
নবান্ন বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপে আবেদন করার কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। প্রতি বছর মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক বা স্নাতক ডিগ্রি পাস করার পর পড়ুয়ারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কোন ঠিকানায় আবেদন পত্র জমা দিতে হবে?
উত্তরবঙ্গের পড়ুয়াদের আবেদন পত্র জমা দিতে হবে নিম্নলিখিত ঠিকানায়-
Uttarkanya Office, Jalpaiguri,
734015.
দক্ষিনবঙ্গের পড়ুয়াদের আবেদন পত্র জমা দিতে হবে নিম্নলিখিত ঠিকানায়-
Nabanna Office, Howrah,
711102.
MORE JOB NEWS: CLICK HERE
পশ্চিমবঙ্গের প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য রয়েছে বিশাল বড় সুখবর। যারা ২০২২ এ প্রাইমারি টেট…
পশ্চিমবঙ্গ সরকার পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ জনসাধারণের জন্য একের পর এক নতুন নতুন বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে…
খাদ্য দপ্তরের তরফে বিরাট বড় কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জানা গিয়েছে সব…
প্রাইমারি টেট পরীক্ষার্থীর জন্য বিশাল বড় একটি সুখবর। অবশেষে যারা যারা প্রাইমারি টেট পাস করে…
দীপাবলীর আগেই সরকারি কর্মীদের DA ও পেনশন দুটোই দ্বিগুণ বাড়তে চলেছে। সরকারি কর্মী ও পেনশন…
এতদিন পর্যন্ত আমাদের রাজ্যের সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যার…