পশ্চিমবঙ্গের সকল কর্মহীন বেকার যুবক যুবতীদের জন্য দুর্দান্ত একটি সুখবর। রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের কথা চিন্তা ভাবনা করে রাজ্য সরকারের এক নতুন ও অভিনব প্রকল্প। যার আওতায় রাজ্যের প্রতিটি বেকার যুবক যুবতীকে ১.৫ লক্ষ টাকা করে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে। সব থেকে বড় কথা হলো এই প্রকল্পে আবেদন করলে আবেদনকারীর কোনরকম শিক্ষাগত যোগ্যতার দরকার নেই, যে কেউ এখানে আবেদন জানাতে পারবে না। নামসই যোগ্যতা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার বেকার যুবক যুবতীদেরকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেবে রাজ্য সরকার। এখন থেকে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে হবে কর্মসংস্থান। আর কেউ থাকবে না বেকার। রাজ্যের ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের হারকে যত শীঘ্র সম্ভব আয়ত্ত্বে আনতেই রাজ্য সরকারের এই মহান উদ্যোগ।
রাজ্য সরকার রাজ্যবাসীর জন্য একের পর এক নতুন নতুন প্রকল্পের সূচনা করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- উৎকর্ষ বাংলা, কর্মদিশা, কর্মতীর্থ ও কর্মসাথী। তবে এগুলি ছাড়াও রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের রোজগারের পথ প্রশস্ত করতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আরও একটি বিশেষ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। যার নাম হল “গতিধারা”। এই প্রকল্পের বিষয়েই আমরা আজ আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলেছি।
তবে এই “গতিধারা” প্রকল্প নতুন নয়। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই বিশেষ প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের ২০ উর্ধ্ব বেকার যুবক যুবতীদের গাড়ি কেনার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়ে থাকে। ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত রাজ্যের বহু বেকার যুবক যুবতী ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের আওতায় এসে উপকৃত হয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত এমন অনেকে আছেন যারা এই প্রকল্পের বিষয়ে অবগত নন বা জানলেও সেভাবে বিশদে কিছু জানেন না। সেই কারণে এই প্রকল্পের আওতায় আবেদনও করতে পারেন না । সেইসব বেকার যুবক যুবতীদের এই “গতিধারা” প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানাতেই রইল আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। নীচে এই প্রকল্পের বিষয়ে যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য বিশদে বুঝিয়ে বলা হল।
গতিধার প্রকল্পে আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:-
এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে আবেদনকারীর যুবক বা যুবতীর নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকতে হবে-
* আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
* আবেদনকারীর পরিবারের মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকার নীচে হতে হবে।
* আবেদনকারীর বয়স ২০-৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে SC, ST, OBC প্রার্থীরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বয়সের ছাড় পাবেন।
* রাজ্যের যে কোনো এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে আবেদনকারীর নাম নথিভুক্ত থাকতে হবে।
* আবেদনকারীর নিজের নামে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
গতিধারা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্য সুবিধা:-
এই প্রকল্পের মাধ্যমে যে যে সুবিধা গুলি প্রদান করা হয়ে থাকে সেগুলি হল-
* এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত থাকলে আপনি যদি কোনো গাড়ি কেনেন তাহলে সেই গাড়ির মোট ক্রয়মূল্যের ৩০% রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হবে।
* এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুদান পাওয়া যাবে।
* এই প্রকল্পের মাধ্যমে আপনি যদি গাড়ি কেনেন তাহলে খুব সহজেই গাড়ির পারমিট পাওয়া যাবে।
গতিধারা প্রকল্পের আবেদন পদ্ধতি:-
এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন করতে হলে নিম্নলিখিত ধাপ গুলি অনুসরণ করে আবেদন করতে হবে। যেমন-
* সবার আগে আপনাকে আপনার নিকটবর্তী এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের অফিসে গিয়ে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হবে।
* তারপর আপনি যে জায়গা থেকে গাড়ি কিনতে চান সেই জায়গাটিকে নির্বাচন করতে হবে।
* এরপর গতিধারা প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.transport.wb.gov.in এ প্রবেশ করতে হবে।
* তারপর সেখান থেকে এই প্রকল্পের তিনটি আবেদন পত্র ডাউললোড করে সাদা A4 সাইজ পেপারে প্রিন্ট আউট বের করে নিতে হবে।
* এরপর সেগুলি যথাযথ তথ্য দিয়ে ভালোভাবে পূরণ করে ফেলতে হবে।
* এরপর এক এক করে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর এক কপি করে জেরক্স বের করে নিতে হবে।
* সবশেষে এই সবকিছু একসাথে খামে ভরে নিকটবর্তী পরিবহন পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে। তাহলেই আবেদন প্রক্রিয়া শেষ।
প্রয়োজনীয় নথীপত্র:-
আবেদন পত্র জমা দেওয়ার সময় তার সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় নথীপত্র গুলি যুক্ত করে জমা দিতে হবে সেগুলি হল-
* বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে বার্থ সার্টিফিকেট/মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডের দুই কপি জেরক্স।
* ফটো আইডি প্রুফ হিসেবে আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড এর দুই কপি জেরক্স।
* স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেটের দুই কপি জেরক্স।
* ইনকাম সার্টিফিকেটের দুই কপি জেরক্স।
* আবেদনকারীর নাম এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের অফিসে রেজিস্টার্ড থাকার প্রমাণ পত্রের দুই কপি জেরক্স।
* ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাস বুকের প্রথম পাতার দুই কপি জেরক্স।
* পারমিটের জন্য আবেদন করার আবেদন পত্রের দুই কপি জেরক্স।
* যে জায়গা থেকে গাড়ি কিনবেন সেই জায়গার ডিলারের দেওয়া কোটেশন নাম্বার লেখা প্রমান পত্রের দুই কপি জেরক্স।
* আবেদনকারীর নিজের ছয় কপি রিসেন্ট তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
এই প্রকল্পে আবেদন করলে কারা কারা টাকা পাবেন
এই “গতিধারা” প্রকল্পের আওতায় আবেদন করার পর সবকিছু ডকুমেন্টস খতিয়ে দেখে যাদেরকে যোগ্য বলে মনে করা হবে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্য টাকা ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে।
MORE JOB NEWS: CLICK HERE
পশ্চিমবঙ্গের প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য রয়েছে বিশাল বড় সুখবর। যারা ২০২২ এ প্রাইমারি টেট…
পশ্চিমবঙ্গ সরকার পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ জনসাধারণের জন্য একের পর এক নতুন নতুন বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে…
খাদ্য দপ্তরের তরফে বিরাট বড় কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জানা গিয়েছে সব…
প্রাইমারি টেট পরীক্ষার্থীর জন্য বিশাল বড় একটি সুখবর। অবশেষে যারা যারা প্রাইমারি টেট পাস করে…
দীপাবলীর আগেই সরকারি কর্মীদের DA ও পেনশন দুটোই দ্বিগুণ বাড়তে চলেছে। সরকারি কর্মী ও পেনশন…
এতদিন পর্যন্ত আমাদের রাজ্যের সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। যার…