সর্বনাশ! 30 হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকি, বিপদের মুখে শিক্ষকেরা | WB Primary Teacher Updates

হাইকোর্টের নতুন বিচারপতি অর্থাৎ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় হঠাৎ ই যেন পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতির শিকার হওয়া বেকার চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ঈশ্বরের এক দূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।  হাইকোর্টের বিচারপতির ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি এক এক করে রাজ্যের প্রাইমারী শিক্ষক ও হাইস্কুলের শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে হওয়া সমস্ত বেআইনির দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটিয়ে রাজ্যের সৎ ভাবে শিক্ষক পদে চাকরি করতে ইচ্ছুক বেকার চাকরিপ্রার্থীদের ন্যায় পাইয়ে দিতে অত্যন্ত তৎপর হয়ে উঠেছেন।

         প্রাইমারীতে শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির শিকার হওয়া কিছু চাকরিপ্রার্থীর হাইকোর্টে করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার যে শুনানি হওয়ার কথা ছিল সেই শুনানিতে ২০১৬ সালে দুর্নীতিগত ভাবে প্রাইমারীতে নিযুক্ত হওয়া ৩০ হাজার শিক্ষককে যত শীঘ্র সম্ভব চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দেওয়ার জন্য কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ওইদিন এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে অবিলম্বে এই প্রাইমারী শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে সমস্ত দুর্নীতি বন্ধ করা না হলে এরপর বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি থেকে বাতিল করে দেওয়া হবে।

         ২০১৪ সালের প্রাইমারী টেট এর ফলাফল অনুযায়ী ২০১৬ সালে ৩০ হাজার জনকে বেআইনি ভাবে প্রাইমারী শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু এমন বহু চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন যারা সেই বছর খুব ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও নিয়োগ তালিকায় তাদের নাম আসেনি‌। তাদেরই মধ্যে থেকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার টেট দুর্নীতির শিকার হওয়া একজন বেকার চাকরিপ্রার্থী প্রিয়াঙ্কা নস্কর সহ আরও  ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে কেন ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও তাদের নাম নিয়োগ তালিকায় কেন নেই সেই বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে জানতে চাইলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে তারা কোনো রকম D.Ed বা D.El.Ed প্রশিক্ষণ ছাড়াই প্রাইমারী টেট পরীক্ষা দিয়েছেন বলে নাকি তাদের নাম নিয়োগ তালিকায় তোলা হয়নি।

       আর এই কথা শোনা মাত্রই তারা অবাক হয়ে যান সাথে সাথে প্রচন্ড রেগেও যান। তারা তখন স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে এই প্রশ্ন তোলেন যে সেই সময়ের নিয়ম অনুযায়ী D.Ed বা D.El.Ed প্রশিক্ষণ না নেওয়া প্রার্থীদের ও চাকরিতে নিয়োগ করা হতো। এমনকি সেই সময় বিনা প্রশিক্ষণে টেট পরীক্ষা দেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৩২ হাজার জন ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পত্রও পেয়েছেন। তাহলে তারা কি দোষ করেছেন? যে ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ নেওয়া নেই বলে তাদেরকে নিয়োগ পত্র দেওয়া হল না। তারা আরও বলেন যে এমন অনেক পরীক্ষার্থী কে নাকি ২০১৬ সালে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছিল যারা মামলাকারী প্রার্থীদের থেকে কম নম্বর পেয়েছেন। 

        মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে করা এইসব দুর্নীতির অভিযোগ গুলি শুনে গত মঙ্গলবার  হাইকোর্টে প্রাইমারী টেট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত হওয়া শুনানিতে সেখানকার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে এই হুঁশিয়ারি ই দেন যে কিছু দিনের মধ্যেই ২০১৬ সালে দুর্নীতিগত ভাবে নিয়োগ পত্র পেয়ে প্রাইমারী শিক্ষক পদে নিযুক্ত হওয়া ৩০ হাজার  শিক্ষককে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যদি চাকরি থেকে বরখাস্ত না করে দেয় তাহলে এরপর তিনি নিজেই এর যথাযোগ্য ব্যাবস্থা নেবেন। ওইদিন উনি এজলাসে উপস্থিত থাকা প্রিয়াঙ্কা নস্কর সহ আরও ১৪০ জন মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের এই ২০১৬ সালে বেআইনি ভাবে প্রাইমারী শিক্ষক পদে নিযুক্ত হওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু শক্তিশালী তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর তার দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী এই সব তথ্য প্রমান যদি কোনো প্রকারে একবার জোগার করতে পারে মামলাকারীরা তাহলে যে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া ৩০ জন প্রাইমারী শিক্ষকের চাকরি আর বেশিদিন বহাল থাকবে না খুব শীঘ্রই তাদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।


MORE JOB NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment