100 দিনর কাজ প্রকল্পে বাংলার ঘরে ঘরে চাকরির, 10 লক্ষ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ | WB MGNREGA Prakalpa Recruitment 2023

এইমাত্র কিছুদিন আগেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৩০ হাজার শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের সংবাদ পাওয়া গেছে। আর এরই মধ্যে আবারও নতুন করে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্য জুড়ে ১০ লক্ষ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের সুসংবাদ মিলল। কোনো নির্দিষ্ট দপ্তরে নয় বিশেষ এক প্রকল্পের আওতায় এইসব কর্মীদের নিয়োগ করা হবে বলে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই এই ১০ লক্ষ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চায় রাজ্য সরকার, এমনটাই সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে। আর সবচাইতে বড় কথা হল এই ১০ লক্ষ শূন্যপদে কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই কর্মী নিয়োগ করা হবে। এক্ষেত্রে শর্ত কেবল একটাই আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তাহলে কি সেই বিশেষ প্রকল্প যার অধীনে একসঙ্গে এতো বিপুল সংখ্যক শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার? চিন্তা নেই সবকিছু পরিস্কার ভাবে জানতে পারবেন তার জন্য আমাদের চ্যানেলের তরফ থেকে পরিবেশিত এই প্রতিবেদনটি একটু মন দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।

       ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমবারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পটি চালু করা হয়েছিল। তখন এই প্রকল্পের নাম ছিল National Rural Employment Guarantee Act(NREGA)। তারপর ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে এই প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় Mahatma Gandhi National Rural Employment Guarantee Scheme(MGNREGS)। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বিশেষ এই প্রকল্প চালু করার উদ্দেশ্য হল আমাদের দেশের প্রত্যন্ত গ্ৰাম গুলিতে বসবাসকারী প্রতিটি দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের দৈনিক আয় সুনিশ্চিত করা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্ৰামের দরিদ্র শ্রেণীর পরিবার গুলি থেকে একজন করে সদস্যকে জব কার্ড দেওয়া হয়। আর এইসব জব কার্ড হোল্ডারদের রাস্তা তৈরি, রাস্তা মেরামত, খাল নিকাশী সহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি প্রকল্পে কাজ দেওয়া হয়। 

      তবে বর্তমানে এই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকে কেন্দ্র করে আমাদের রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দিচ্ছে। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারের অভিযোগ হল এই যে গত ১ বছর যাবৎ নাকি কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে এই ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প বাবদ অর্থ সাহায্য করা পুরোপুরি ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে আমাদের রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় যে সব শ্রমিকেরা কাজ করেন তাদেরকে শত অর্থ সংকট থাকা সত্ত্বেও কষ্টেশিষ্টে রাজ্য সরকারের তহবিল থেকেই মজুরি দিতে হচ্ছে। তাই রাজ্য সরকার পাকাপাকিভাবে এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছে যে এবার থেকে আর কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে কোনো রকম সাহায্যের প্রত্যাশা তারা করবে না অর্থাৎ এবার থেকে আমাদের রাজ্যের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের শ্রমিকদেরকে রাজ্য সরকারই বেতন দেবে।  এছাড়াও ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প ঠিকঠাকভাবে পরিচালনা করার জন্য বাংলার ঘরে ঘরে কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

    সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে যে, আগামী ২৮ শে মার্চ সিঙ্গুরে একটি জনসভা আয়োজিত হতে চলেছে। আর সেই জনসভাতেই আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে সারা রাজ্য জুড়ে মোট ১২ হাজার কিমি গ্ৰামীন সড়ক নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন। এর পাশাপাশি সেই রাস্তা নির্মাণের কাজে এরাজ্যের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতাধীন শ্রমিকদেরকে ই কাজে নিয়োজিত করবেন এমনটাও ঘোষণা করবেন বলে সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে। পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে এইসব গ্ৰামীন সড়ক নির্মাণ করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার তহবিল ও গঠন করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।

     রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় থাকা জব কার্ড হোল্ডারদের রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তরে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও ১০ লক্ষ শূন্যপদে নিয়োগ করা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।