32 হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে নতুন আপডেট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের, প্রাইমারি নতুন চাকরিপ্রার্থীদের জন্য সুখবর | WB PRIMARY TET 2023

বারংবার একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার ন্যায় বিচার করে শুধুমাত্র আমাদের রাজ্যেরই নয় বরং সারা দেশের মানুষের কাছে  দুর্নীতি বিনাশের এক ও অভিন্ন প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী। এতদিন ধরে আমাদের রাজ্যে ঘটে চলা বিভিন্ন নিয়োগ দুর্নীতি গুলি এক এক করে টেনে বের করে সেগুলির বিরুদ্ধে ন্যায্য রায় প্রদানের মাধ্যমে তিনি পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা দেশের প্রতিটি মানুষের মনে এই বিশ্বাস জাগিয়ে তুলেছেন যে সাধারণ মানুষ হোক বা কোনো ক্ষমতাশালী নেতা মন্ত্রী, অন্যায়টা অন্যায়ই। অন্যায় করলে তার যোগ্য সাজা সকলকেই ভোগ করতে হবে। তাহলে হঠাৎ করে এমন কি ঘটল যে ন্যায়ের প্রতীক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্বয়ং নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলা বাতিল করে দিলেন? এর পিছনে কি কারণ নিহিত রয়েছে? এই প্রশ্ন সকলের মনেই অনবরত ঘুরপাক খাচ্ছে। 

        

       গত এক মাস আগেই ২০১৬ সালে প্রাইমারীতে শিক্ষক নিয়োগকে ঘিরে হওয়া চরম দুর্নীতির প্রতিবাদে সেই সময় বেআইনি ভাবে শিক্ষক পদে নিযুক্ত হওয়া ৩২ হাজার প্রাইমারী শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী। তার নির্দেশানুযায়ী বেআইনি ভাবে নিযুক্ত হওয়া ওই ৩২ হাজার প্রাইমারী শিক্ষককে আগামী টানা চার মাস যাবৎ স্থায়ী পদ থেকে সরে এসে প্যারা টিচার হয়ে কাজ করতে হবে। এমনকি সেই সময় তারা নিজেদের প্রাপ্য বেতনও পাবেন না। এই চার মাস তাদেরকে প্যারা টিচারদের বেতনে চাকরি করতে হবে। সেইসঙ্গে তিনি পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে আদেশ দিয়েছেন যে ২০১৪ সালের টেটের মাধ্যমে যে সকল শিক্ষকেরা নিযুক্ত হয়েছিলেন তাদের আবারও নতুন করে টেট পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে বাছাই করে চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে।

      তবে এবারের টেট পরীক্ষায় যারা B.ED/D.EL.ED কোর্স করেছেন তারাই কেবলমাত্র অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এবং সৎ পথে নিজেদের যোগ্যতায় একের পর এক ধাপ অতিক্রম করে যারা শেষ পর্যন্ত সফল হবেন তাদেরই কেবলমাত্র চাকরি বজায় থাকবে। বাকি যারা অযোগ্য বলে প্রমাণিত হবেন তাদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। বিচারপতির এইরুপ কঠোর নির্দেশের কারণ হল দুটি প্রথমত, ২০১৬ সালে প্রাইমারী শিক্ষক পদে যে ৪২ হাজার শিক্ষক নিযুক্ত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৩২ হাজার শিক্ষকের B.ED/D.EL.ED কোর্স করা ছিল না। তা সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে তাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছিল। আর দ্বিতীয় কারনটি হল প্রাইমারীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইন্টারভিউ এর সঙ্গে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নেওয়ার নিয়ম থাকা সত্ত্বেও তা নেওয়া হয়নি। 

      বিচারপতির এই নির্দেশের পাল্টা অভিযোগ জানাতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও চাকরি হারানো কিছু সংখ্যক শিক্ষক হাইকোর্টে যান। সেখানে তারা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালে সেখানকার বাকি বিচারকেরা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে কিছুটা হলেও সায় দিলেও সম্পূর্ণ ভাবে তা মেনে নেননি। তারা নতুন করে নিয়োগ কার্যের মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগ করার বিষয়টি মেনে নিলেও প্যারা টিচারদের সমান বেতন দেওয়ার বিষয়টিতে একেবারেই সায় দেননি। তারা এই নির্দেশ বাতিল করেছেন। তারা জানিয়েছেন যে যতক্ষন না সেই সকল শিক্ষকেরা শিক্ষকতা করার ক্ষেত্রে অযোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছেন ততক্ষন পর্যন্ত তাদের পাওনা বেতন থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা চলবে না। 

       এহেন পরিস্থিতিতে ২০১২ সালের টেট দুর্নীতির শিকার হওয়া একজন পরীক্ষার্থী বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে ন্যায় বিচারের দাবিতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু বিচারপতি তার সেই মামলা বাতিল করে দেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে ১০ বছর পাড় হয়ে গেছে এতদিন পর কেন তিনি মামলা দায়ের করছেন? যদি তিনি দুর্নীতির শিকারই হয়েছিলেন তাহলে তিনি এতদিন হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন কেন? অন্যান্য আইনবিদ রাও তার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। কারন এত দীর্ঘ সময় পাড় হয়ে যাওয়ার পর কোনো কারনে মামলা করলে তার বিচার করা সত্যিই দুঃসাধ্য ব্যাপার। তাই তাদের মতে বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা একেবারেই যথার্থ।

MORE NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় ও নিত্যনতুন এই ধরনের আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment