সকল দেশবাসীর কল্যানার্থে ভারতীয় ডাকবিভাগ নিয়ে এসেছে একটি আকর্ষনীয় ও লাভজনক স্কিম। দেশের যে কোনো প্রান্তের যে কোনো পোস্ট অফিসে এই স্কিমের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতি মাসে মাসে সাধ্য মতো কিছু কিছু করে টাকা জমা রাখলে ৫ বছর পর মেয়াদ শেষে মাসিক ৯,০০০ টাকা করে পেনশন পাওয়া যাবে। এতদিন ধরে আপনারা পোস্ট অফিস ও বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক গুলির পক্ষ থেকে চালু করা যেসব ডিপোজিট স্কিম গুলির বিষয়ে জেনেছেন তার চেয়ে বহুগুণ বেশি লাভজনক হল এই স্কিম। সুতরাং আর বেশি দেরি না করে চটপট এই স্কিমের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলুন আর সাধ্য মতো অর্থ বিনিয়োগ করে মেয়াদ শেষে ঘরে বসে মাসিক ৯,০০০ টাকা করে পেনশনের সুবিধা লাভ করুন। বিনিয়োগ করতে আগ্রহী থাকলে শেষ পর্যন্ত এই প্রতিবেদনটি পড়ুন।
আমরা সকলেই নিজেদের সাধ্য মতো কম বেশি অর্থ ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখতে চাই। তবে সেই অর্থ ঠিক কোথায় বিনিয়োগ করলে অধিক মাত্রায় লাভবান হওয়া যাবে সেটাই আমরা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারি না। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন ইন্সিওরেন্স কোম্পানি গুলি তাদের একাধিক স্কিম নিয়ে হাজির হয়েছে। এবং তারা কে কত বেশি লাভ দিতে পারবে সেই নিয়ে তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগীতা লেগেই রয়েছে। এর পাশাপাশি আমাদের দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক গুলির তরফেও একাধিক লাভজনক ডিপোজিট স্কিম চালু করা হয়েছে। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক গুলি হোক বা বিভিন্ন ইন্সিওরেন্স কোম্পানি গুলি যে যতই লাভজনক স্কিমের সম্ভার নিয়ে হাজির হোক না কেন দেশের সাধারণ মানুষকে অধিক মাত্রায় লাভ প্রদান করে অর্থনৈতিক ভাবে সুদৃঢ় করে তুলতে ভারতীয় ডাকবিভাগের জুড়ি মেলা ভার।
বিগত কয়েক বছর যাবত ভারতীয় ডাকবিভাগ দেশের প্রতিটি সাধারণ মানুষের কল্যানার্থে একের পর এক ধামাকাদার স্কিম নিয়ে হাজির হচ্ছে। আর আজ ভারতীয় ডাকবিভাগের তরফে চালু হওয়া এমনই এক স্কিমের বিষয়ে আমরা আপনাদের জানাবো। যার নাম হল “মাসিক ইনকাম স্কিম”। এই স্কিমের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ বিনিয়োগ করলে মোট বিনিয়োগ করা অর্থের উপর বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে দাঁড়িয়েও ৭.৪ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যায়। আপনি যদি এই স্কিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ৯,০০০ টাকা করে পেনশন লাভ করতে চান তাহলে আপনাকে এই স্কিমের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলে ১৫ লক্ষ টাকা জমা রাখতে হবে। এই টাকা আপনি এককালীন ও জমা দিতে পারেন আবার প্রতি মাসে মাসেও জমা রাখতে পারেন। পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করবে। এক্ষেত্রে কোনো বাঁধা ধরা নিয়ম নেই। এই স্কিমের আওতায় বিনিয়োগ করা অর্থের উপর কেন্দ্রীয় সরকার প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর সুদ দিয়ে থাকে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই স্কিমের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুবিধা, স্কিমের শর্তাবলী, আবেদন পদ্ধতি ইত্যাদির বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।
“মাসিক ইনকাম স্কিমের” আওতায় কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
এই স্কিমের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ বিনিয়োগ করলে নিম্নলিখিত সুবিধা গুলি পাওয়া যাবে। যেমন-
১) মোট জমানো টাকার উপর ৭.৪% হারে সুদ পাওয়া যাবে। যা সাম্প্রতিক সময়ের আর অন্য কোনো স্কিম থেকে পাওয়া যাবে না।
২) এই স্কিমের নির্ধারিত অর্থ আপনি এককালীন ও জমা দিতে পারবেন আবার প্রতি মাসে মাসে ধাপে ধাপে ও জমা রাখতে পারবেন।
৩) এই স্কিমের আওতায় কমপক্ষে ৫ বছরের জন্য অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। তবে মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগেই যদি কোনো বিনিয়োগকারীর প্রয়োজন পড়ে তাহলে তিনি তার বিনিয়োগ করা অর্থ মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগেই তুলে নিতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে তাকে সামান্য কিছু টাকা পেনাল্টি চার্জ দিতে হবে।
৪) এই স্কিমের আওতায় বিনিয়োগ করা অর্থ পুরোপুরি ভাবে কর মুক্ত। এই স্কিমের মেয়াদকাল নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ বছর । তবে কোনো বিনিয়োগকারী যদি চান তাহলে তিনি ৫ বছর পর ম্যাচিওর হওয়া অর্থ পুনরায় ৫ বছরের জন্য বিনিয়োগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রাপ্য সুদের পরিমাণ আগের তুলনায় বাড়তে থাকবে। এবং প্রতি মাসে বিনিয়োগকারী সেই সুদের টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবেন।
৫) মাত্র ১০০০ টাকা দিয়ে এই “মাসিক ইনকাম স্কিমের” আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
“মাসিক ইনকাম স্কিমের” শর্তগুলি কি কি?
এই স্কিমের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে যে যে শর্তগুলি পালন করতে হবে সেগুলি হল-
১) ১৮ বছর বয়স হলেই যে কোনো ব্যাক্তি এই স্কিমের আওতায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। তবে ১৮ বছরের নীচেও অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে সেক্ষেত্রে সেই নাবালকের অ্যাকাউন্টটি তার নিজের নামে খোলা যাবে না। তার বাবা মা বা অন্য যে কোনো অভিভাবকের নামে খুলতে হবে।
২) এই স্কিমের আওতায় অর্থ বিনিয়োগ করার ৬-১২ মাসের মধ্যে যদি কোনো বিনিয়োগকারী তার জমানো টাকা তুলে নেন তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে এই স্কিমের মাধ্যমে দেওয়া সুদের সুবিধা প্রদান করা হবে না। তিনি সাধারণ সেভিংস এর নিয়মেই সুদ পাবেন।
৩) এই স্কিমের আওতায় সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট খুললে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা রাখা যাবে। তবে কোনো ব্যাক্তি যদি জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খোলেন তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে পারবেন।
“মাসিক ইনকাম স্কিমের” আওতায় কিভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে?
এই স্কিমের আওতায় অর্থ বিনিয়োগ করতে আগ্রহী ব্যাক্তিকে তার নিকটবর্তী যে কোনো পোস্ট অফিসে গিয়ে এই স্কিমের বিষয়ে ভালো করে সবকিছু জেনে নিতে হবে। তারপর সেখানেই আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট সাইজের ফটো, প্যান কার্ড, স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট ইত্যাদি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তারপর অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে।
কত দিন পর্যন্ত আবেদন করা যাবে?
“মাসিক ইনকাম স্কিমের” আওতায় টাকা বিনিয়োগ করার জন্য যে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে তার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। আপনারা আপনাদের সুবিধা অনুযায়ী যেদিন খুশি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।