পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত অশিক্ষিত সকল বেকার মহিলাদের জন্য বিরাট সুখবর। বাংলার ঘরে ঘরে প্রতিটি বেকার মহিলাকে আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু করা হল আরও একটি নতুন প্রকল্প। ইতিমধ্যেই এ রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক দিক থেকে কিছুটা হলেও স্বনির্ভর করে তুলতে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তার স্বপ্নের প্রকল্প “লক্ষীর ভান্ডার” চালু করেছেন। তবে তার উদ্যোগে চালু হওয়া নতুন এই প্রকল্প যেটির সম্পর্কে আমরা আজ আপনাদের জানাতে চলেছি সেটি লক্ষীর ভান্ডারের চেয়েও বড়ো একটি প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করলে বাংলার মহিলারা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে পাওয়া ভাতার চেয়েও অনেক গুন বেশি পরিমাণ ভাতা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে লাভ করতে পারবেন। এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করতে হলে কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হলেই এবং ১৮ বছরের উর্ধ্বে বয়স হলেই রাজ্যের যে কোনো মহিলা এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ভাতা লাভ করতে পারবেন। এই ভাতা পেতে হলে কিভাবে আবেদন করতে হবে, কত টাকা করে পাওয়া যাবে, কারা কারা আবেদন করতে পারবেন এই সব কিছুর বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নীচে দেওয়া হল।
আমাদের রাজ্যের পুরুষদের মতোই প্রতিটি নারীকেও আর্থিক ভাবে কিছুটা হলেও স্বাবলম্বী করে তুলতে ২০২১ সালে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার স্বপ্নের প্রকল্প “লক্ষীর ভান্ডার” চালু করেছিলেন। যাতে সেই প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া টাকা দিয়ে এ রাজ্যের সকল বেকার মহিলারা ছোটোখাটো কোনো ব্যাবসা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হন। এবং মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী তা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভবও হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাওয়া ৫০০/১০০০ টাকা কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই আমাদের রাজ্যের বহু মহিলা আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হয়ে পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংসারের হাল ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
তবে আজ আমরা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা যে নতুন প্রকল্পটির বিষয়ে আপনাদের জানাতে চলেছি সেটির মাধ্যমে এ রাজ্যের মহিলারা আরও অধিক মাত্রায় উপকৃত হতে চলেছেন। নতুন এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করলে রাজ্যের মহিলারা ৫০০/১০০০ টাকা করে নয় বরং এক এক বারে ৫০০০ টাকা করে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ভাতা লাভ করতে পারবেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হওয়া নতুন এই প্রকল্প যার বিষয়ে আমরা এতক্ষণ ধরে কথা বলে চলেছি তার নাম হল “জাগো প্রকল্প”। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ঘরে ঘরে সকল বেকার মহিলাদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই মহান উদ্যোগ।
“জাগো প্রকল্প” চালু করার উদ্দেশ্য:-
এই প্রকল্প চালু করার পিছনে রাজ্য সরকারের যে উদ্দেশ্য রয়েছে তা হল-
১) জাগো প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের সকল স্তরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি মহিলাকে বছরে ৫০০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হল এইটাই যে রাজ্য জুড়ে আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলা।
২) এছাড়াও বর্তমানে চলা প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে আরও বেশি করে উৎসাহ প্রদান করা।
৩) আপাতত বাংলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ১০ লক্ষ মহিলাকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর এই পরিকল্পনা যদি ঠিকঠাক ভাবে কার্যকর হয় তাহলে খুব শীঘ্রই এ রাজ্যের মহিলারাই রাজ্যের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের হাতিয়ার হয়ে উঠবে।
“জাগো প্রকল্পে” আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:-
এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করতে হলে নিম্নলিখিত যোগ্যতা গুলি থাকলে তবেই করা যাবে নচেৎ নয়। যেমন-
১) আবেদনকারী মহিলাকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২) আবেদনকারী মহিলাকে অবশ্যই রাজ্যের যে কোনো স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একজন সদস্য হতে হবে।
৩) এক্ষেত্রে আবেদনকারী মহিলা যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বয়স অন্তত পক্ষে ১ বছর হতে হবে।
৪) স্বনির্ভর গোষ্ঠীটির অ্যাকাউন্ট অতি অবশ্যই ৬ মাসের পুরনো হয়ে থাকতে হবে।
৫) এবং সেই অ্যাকাউন্ট খুব কম করে হলেও ৫,০০০ টাকা ব্যালেন্স থাকতে হবে।
৬) এই প্রকল্পের আওতায় কেবলমাত্র সেইসব স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত মহিলারাই নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন যাদের গোষ্ঠি পূর্বে কোনো ক্যাশ ক্রেডিট লিমিট বা কোনো শর্তসাপেক্ষ লোন নিয়েছে।
“জাগো প্রকল্প” এর আবেদন পদ্ধতি:-
জাগো প্রকল্পের সুবিধা লাভ করতে হলে আলাদা করে কোনো আবেদন করার প্রয়োজন নেই। উপরিউক্ত যোগ্যতা গুলির সব গুলি যোগ্যতা ঠিকঠাক মতো থাকলেই প্রতিটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে ৫০০০ টাকা করে সরাসরি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গোষ্ঠীর অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবে।
MORE NEWS: CLICK HERE