নতুন গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি কেনার জন্য সমস্ত বেকার যুবক যুবতী টাকা দেবে রাজ্য সরকার | WB Govt New Scheme 2023

পশ্চিমবঙ্গের বেকার যুবক যুবতীদের জন্য সুখবর। আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্য জুড়ে চালু হতে চলেছে আরেকটি নতুন কর্মমুখী প্রকল্প। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর পদ লাভ করার পর থেকেই আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য একে একে উৎকর্ষ বাংলা, যুবশ্রী, কর্মদিশা, ইত্যাদি প্রকল্প গুলি চালু করেছিলেন। আর এইসব প্রকল্প গুলির আওতায় এসে আমাদের রাজ্যের বহু বেকার যুবক যুবতী ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রকম ভাবে উপকৃত হয়েছেন। নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন। আর সেই কারণেই রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের আরও বেশি করে কর্মমুখী করে তোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে  এবারে আরও এক নতুন প্রকল্প চালু হতে চলেছে। যার মাধ্যমে রাজ্যের নিরক্ষর থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষিত পর্যন্ত সকল বেকার যুবক যুবতীরা খুব সহজেই বেকারত্বের বন্দি দশা থেকে মুক্তি লাভ করে নিজেদের কর্মসংস্থানের দিশা খুঁজে পাবেন। 

      মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হওয়া এই নতুন প্রকল্পের নাম হল গতিধারা প্রকল্প। এই প্রকল্প একেবারেই নতুন নয়। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার পর ই তিনি রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্প চালু করেছিলেন। সেই থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই প্রকল্প চলে আসছে। আমাদের রাজ্যের কিছু কিছু বেকার যুবক যুবতী এই প্রকল্পের নাম ও এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা গুলির বিষয়ে জানলেও এখনো পর্যন্ত এমন বহু বেকার যুবক যুবতী আছেন যারা এই প্রকল্পের বিষয়ে অবগত নন। আর সেই কারণেই খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রকল্পের নাম শুনে তাদের কাছে নতুন বলেই মনে হবে। সুতরাং আদতে এই প্রকল্পটি পুরনো হলেও যারা এই প্রকল্পের সন্বন্ধে এখনও পর্যন্ত কিছুই জানেন না তাদের কাছে যে এটি নতুন প্রকল্প হিসেবেই পরিচিত হবে তা বলাই বাহুল্য। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, আবেদন পদ্ধতি, আবেদনের সময়সীমা ইত্যাদির বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক। নীচে এই গতিধারা প্রকল্পের বিষয়ে বিশদে আলোচনা করা হল।

গতিধারা প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা কি?

গতিধারা প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য নাম নথিভুক্ত করতে হলে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের বেশ কিছু সাধারণ যোগ্যতা অবশ্যই থাকতে হবে। আর সেগুলি হল-

১) আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তবেই তিনি এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন নচেৎ নয়।

২) এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২০-৪৫ বছরের মধ্যে। তবে সরকারি নিয়ম মাফিক তপশিলী শ্রেনীর প্রার্থীরা ৩ বছর এবং অনগ্ৰসর শ্রেনীর প্রার্থীরা ৫ বছর পর্যন্ত বয়সের ছাড় পাবেন। 

৩) এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে অতি অবশ্যই আগে থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লেবার ডিপার্টমেন্টের এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নিজের নাম নথিভুক্ত করে রাখতে হবে।

৪) এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর পরিবারের মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকার নীচে বা তার মধ্যে হতে হবে।

৫) কোনো পরিবারের একজন সদস্য যদি আগে থেকেই এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করে থাকেন তাহলে সেই পরিবার থেকে আর দ্বিতীয় কেউ এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

গতিধারা প্রকল্পের মাধ্যমে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?

গতিধারা প্রকল্পের মাধ্যমে যে যে সুবিধা গুলি পাওয়া যাবে সেগুলি হল-

১) এই প্রকল্পের আওতায় থেকে যদি কেউ রাজ্যের যে কোনো গাড়ির শো রুম থেকে গাড়ি কেনেন তাহলে তিনি পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দপ্তরের সহায়তায় সেই গাড়ির পারমিট আনায় অগ্ৰাধিকার পাবেন।

২) এই প্রকল্পের আওতায় থাকা কোনো পুরুষ যদি রাজ্যের যে কোনো গাড়ির শো রুম থেকে  কোনো প্রকার বানিজ্যিক যানবাহন কেনেন তাহলে এক্স শো রুম মূল্যের ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লক্ষ টাকারও বেশি পরিমাণ ভর্তুকি পাবেন।

৩) অন্যদিকে এই প্রকল্পের আওতায় থাকা কোনো মহিলা যদি রাজ্যের যে কোনো গাড়ির শো রুম থেকে  কোনো প্রকার বানিজ্যিক যানবাহন কেনেন তাহলে এক্স শো রুম মূল্যের ৩৫ শতাংশ অর্থাৎ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি পাবেন।

গতিধারা প্রকল্পের শর্তগুলি কি কি?

এই প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার পিছনে রাজ্য সরকারের বেশ কিছু শর্ত রেখেছে। আর সেগুলি হল-

১) এই প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দপ্তরের সহায়তায় গাড়ির পারমিট পাওয়ার জন্য এবং উপরিউক্ত পরিমাণ ভর্তুকির টাকা পাওয়ার জন্য এই প্রকল্পে নিজের নাম নথিভুক্ত করার এক মাসের মধ্যেই আপনাকে গাড়ি কিনে সেটিকে রেজিস্ট্রার করতে হবে।

২) এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের আবেদনকারীকে তার নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী একজন গাড়ির ডিলার নির্বাচন করে তাকে দিয়ে আবেদন ও অন্যান্য সব প্রসেসিং এর কাজ করাতে হবে।

৩) এই প্রকল্পে নিজের নাম নথিভুক্ত করার পর আবেদনকারীকে এই প্রকল্পের মাধ্যমে গাড়ি কেনার জন্য প্রয়োজনীয় লোন পেতে হলে একজন ফাইন্যান্সার নির্বাচন করতে হবে।

কিভাবে আবেদন করতে হবে?

গতিধারা প্রকল্পের সুবিধা লাভ করার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য যা যা পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে সেগুলি হল-

১) আপনি যদি এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য যোগ্য হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে আপনার নিকটবর্তী যে গাড়ির ডিলার এই প্রকল্পের এজেন্সি নিয়ে তার হয়ে পরিষেবা প্রদান করছেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

২) তারপর সেখান থেকে আপনি যে গাড়িটি কিনতে ইচ্ছুক সেই ডিলার ওই গাড়িটির কোটেশন আপনাকে দেবে সেটি আপনি যত্ন করে নিজের কাছে রেখে দেবেন।

৩) এরপর https://earnmoneybangla.online/wp-content/uploads/2023/09/Gatidhara-form.pdf এই ওয়েবসাইটে গিয়ে সেখান থেকে এই প্রকল্পের আবেদন পত্রটি ডাউনলোড করে নিয়ে একটি সাদা A4 সাইজ পেপারে এর একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিতে হবে।

৪) তারপর সেখানে নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে ফর্ম টিকে ফিলাপ করে ফেলতে হবে।

৫) এরপর সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর এক কপি করে জেরক্স বের করে নিতে হবে।

৬) এরপর এই সবকিছু একসাথে খামে ভরে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম এর অফিসে গিয়ে জমা দিয়ে আসতে পারলেই আবেদন প্রক্রিয়া শেষ।

কি কি ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে?

আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি যুক্ত করে জমা দিতে হবে সেগুলি হল-

১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে বার্থ সার্টিফিকেট/ ভোটার কার্ড/ আধার কার্ড এর দুই কপি জেরক্স।

২) ঠিকানার প্রমান পত্র এর দুই কপি জেরক্স।

৩) আধার কার্ড এর দুই কপি জেরক্স।

৪) ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতার জেরক্স দুই কপি।

৫) আবেদনকারীর নাম এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নথিভূক্ত থাকার প্রমাণ পত্রের দুই কপি জেরক্স।

৬) পারমিটের আবেদন পত্রের অরিজিনাল কপি।

৭) Self declaration সার্টিফিকেট এর দুই কপি জেরক্স।

৮) ইনকাম সার্টিফিকেট এর জেরক্স দুই কপি।

৯) গতিধারা প্রকল্পের সুবিধা প্রদানকারী ডিলার কর্তৃক প্রদত্ত গাড়ির জন্য কোটেশন।

১০) ৬ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।

কিভাবে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে?

গতিধারা প্রকল্পে আবেদনকারী প্রার্থীদের আবেদন পত্র জমা পড়ার পর সেগুলি খতিয়ে দেখে যাদেরকে যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে তাদেরকে আবেদন পত্রে লেখা ফোন নাম্বারে একটি সিলেকসান মেসেজ পাঠানো হবে। তারপর থেকেই আপনি এই প্রকল্পের মাধ্যমে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা লাভ করতে পারবেন।

কত দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে?

এই প্রকল্পে আবেদন পত্র জমা নেওয়া এখন চলছে। এবং এর কোনো রকম শেষ সময় সীমা ধার্য্য করা হয়নি। তাই আপনারা আপনাদের সময় সুবিধা মতো আবেদন করতে পারবেন। তবে ভালো কাজ বেশিদিন ফেলে না রেখে যত শীঘ্র সম্ভব করে ফেলাই ভালো।


More News: CLICK HERE


নিত্য নতুন এই ধরনের প্রকল্প সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।
TELRGRAM CHANNEL:  CLICK HERE

Leave a Comment