ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিটি বেকার চাকরিপ্রার্থীর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে আবারও নতুন করে একটি বড়সরো নিয়োগের সুখবর রয়েছে। এই সবেমাত্র কিছুদিন আগেই ভারতীয় রেল বিভাগের তরফ থেকে ৭,৯১৪ টি শূন্যপদে গ্ৰুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল। শুধু তাই নয় এই মাত্র ১ মাস আগে স্টাফ সিলেকসান কমিশনের পক্ষ থেকে CGL পরীক্ষার মাধ্যমে সারা দেশ জুড়ে ৪,৫০০ হাজার গ্ৰুপ ‘সি’ শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের জন্য এবং মাস দুয়েক আগে নাগাদ ২৫,০০০ GD কনস্টেবল পদে কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আর এরই মধ্যে আবারও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেশ জুড়ে বিরাট বড়ো নিয়োগের সুখবর। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ স্টাফ সিলেকসান কমিশনের তরফ থেকে আবারও সারা দেশ জুড়ে ন্যুনতম মাধ্যমিক পাস যোগ্যতায় ১১,০০০ শূন্যপদে বিভিন্ন ধরনের গ্ৰুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল। আর যেহেতু সারা দেশ জুড়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে তাই সারা দেশের যে কোনো জায়গার সকল নারী পুরুষ উভয় মাধ্যমিক পাস বেকার চাকরিপ্রার্থীরা এখানে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে যারা আরও উচ্চশিক্ষার অধিকারী তারাও এখানে সমান ভাবে চাকরির জন্য আবেদনের যোগ্য। নীচে এই নিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
নিয়োগকারী দপ্তর ও শূন্যপদ গুলির নাম:-
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ স্টাফ সিলেকসান কমিশন(SSC) মাধ্যমে সারা দেশ জুড়ে ১১,০০০ শূন্যপদে গ্ৰুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আবেদন পত্র জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে যে শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করা হবে সেগুলি হল-
• Multi Tasking Staff (Non Technical)
• Havaldar
শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা ও বেতনের পরিমাণ:-
SSC তরফ থেকে প্রকাশিত Multi Tasking Staff এবং Havaldar উভয় শূন্যপদেই চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে অবশ্যই কোনো সরকার স্বীকৃত বোর্ড থেকে নুন্যতম মাধ্যমিক পাস করে থাকতে হবে।
উভয় পদের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রেই আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১/০১/২০২৩ অনুযায়ী ১৮-২৫ বছরের মধ্যে। তবে উভয় শূন্যপদের ক্ষেত্রেই এমন কিছু পদ আছে যেগুলিতে আবেদন করার জন্য নির্ধারিত বয়সসীমা হচ্ছে ১/০১/২০২৩ অনুযায়ী ১৮-২৭ বছরের মধ্যে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই SC, ST প্রার্থীরা ৫ বছর, OBC প্রার্থীরা ৩ বছর, PwBD রা ১০-১৫ বছর এবং Ex-Serviceman এ দের ক্ষেত্রে ৩-৮ বছর পর্যন্ত বয়সের ছাড় দেওয়া হবে।
উভয় পদের ক্ষেত্রেই নির্বাচিত প্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগ করার পর শুরুতেই প্রতি মাসে ২৬,৫৫৯-৩০,৭৪৯ টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে। তারপর ধীরে ধীরে এই বেতনের পরিমাণ আরও বাড়বে।
আবেদন পদ্ধতি:-
স্টাফ সিলেকসান কমিশনের তরফ থেকে প্রকাশিত উপরিউক্ত শূন্যপদ দুটিতে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে সম্পূর্ণ ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তার জন্য যা যা পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে সেগুলি হল-
১) একবারে শুরুতে এই বিজ্ঞপ্তির নীচে দেওয়া অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লেখাটিতে ক্লিক করে অথবা মোবাইল বা ল্যাপটপ এর google search box এ SSC এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট www.ssc.nic.in লিখে search করতে হবে।
২) এরপর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রেজিস্ট্রেশন এর জন্য দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। তবে যাদের আগে থেকেই রেজিস্ট্রেশন করা রয়েছে তাদেরকে আর নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না।
৩) রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে দেওয়া User Id ও Password দিয়ে Login করতে হবে। যাদের আগে থেকেই রেজিস্ট্রেশন করা রয়েছে তারা আগের বারের দেওয়া User Id ও Password দিয়েই Login করবেন।
৪) Login করা হয়ে গেলে একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের ফর্ম আসবে সেখানে নিজের নাম, অভিভাবকের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেন্ডার, বয়স, ঠিকানা, আধার নম্বর, জন্ম তারিখ, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি দিয়ে ফর্ম টিকে ফিলাপ করে Next Button এ ক্লিক করতে হবে।
৫) এরপর এক এক করে সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করে আবারো Next Button এ ক্লিক করতে হবে।
৬) সবশেষে আবেদন মূল্য হিসেবে জেনারেল ক্যাটাগরির প্রার্থীরা ১০০ টাকা করে অনলাইনের মাধ্যমে জমা দিয়ে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান প্রসেস সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে সংরক্ষিত শ্রেনীর প্রার্থী ও মহিলা প্রার্থীদের কোনো রকম আবেদন মূল্য জমা দিতে হবে না।
প্রয়োজনীয় নথীপত্র:-
অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট করতে হবে সেগুলি হল-
১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বা বার্থ সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।২) দেশের স্থায়ী নাগরিকত্বের প্রমান হিসেবে আধার কার্ড স্ক্যান করা।
৩) মাধ্যমিক পাসের মার্কসীট ও সার্টিফিকেট স্ক্যান করা। তবে কারোর যদি আরও বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে তাহলে তাকে সেই সব কিছুর মার্কসীট ও সার্টিফিকেট ও স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
৪) কাস্ট সার্টিফিকেট যদি থাকে তাহলে তা স্ক্যান করা।
৫) এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।
৬) আবেদনকারীর নিজস্ব সিগনেচার স্ক্যান করা।
প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া:-
অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর আবেদনকারী প্রার্থীদের প্রথমে একটি ১২০ নম্বরের MCQ টাইপ কম্পিউটার বেসড প্রিলিমিনারী পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এই পরীক্ষার জন্য সময় দেওয়া হবে ৪৫ মিনিট। এই পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদেরকে শর্টলিস্ট করে দ্বিতীয় ধাপের ১৫০ নম্বরের মেইন পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এতেও সময় দেওয়া হবে ৪৫ মিনিট। এই দুটি ধাপেই যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদেরকে শর্টলিস্ট করে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হবে। এখানে ও যারা যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদেরকে বাছাই করে মেডিকেল টেস্টের জন্য ডাকা হবে। এই চারটি ধাপ হয়ে যাওয়ার পর মোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একটি মেরিট লিস্ট তৈরী করে সেই অনুযায়ী যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদেরকে বাছাই করে জয়েনিং লেটার পাঠিয়ে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।
পরীক্ষা কেন্দ্র:-
সারা দেশ জুড়েই এই পরীক্ষার অসংখ্য কেন্দ্র রয়েছে। আবেদনকারীরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী অফিসিয়াল নোটিফিকেশন দেখে পরীক্ষা কেন্দ্র বেছে নিয়ে আবেদন করবেন।
আবেদনের সময়সীমা:-
স্টাফ সিলেকসান কমিশনের তরফ থেকে প্রকাশিত MTS ও Havaldar পদের জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা নেওয়া আজ অর্থাৎ ১৮/০১/২০২৩ থেকে শুরু হল এবং এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী টানা এক মাস অর্থাৎ ১৭/০২/২০২৩ পর্যন্ত। তাই যারা যারা আবেদন করতে চান তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করে ফেলবেন কারণ সময়সীমা পেরিয়ে গেলে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে।