পশ্চিমবঙ্গের অস্থায়ী পার্শ্ব শিক্ষক(Para Teacher) দের জন্য সুখবর। দীর্ঘদিন ধরে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে অবতীর্ণ হওয়া পার্শ্ব শিক্ষক(Para Teacher) দের দাবি মেনে নিয়ে অবশেষে তাদেরকে ন্যায্য পরিমাণ বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই পার্শ্ব শিক্ষক(Para Teacher) দের দাবি অনুযায়ী তাদের বেতন বৃদ্ধি করা হবে। আর এই খবর শোনা মাত্রই যে আমাদের রাজ্যের প্রতিটি পার্শ্ব শিক্ষকের মনে সরকারের প্রতি জন্মানো সমস্ত ক্ষোভ দূর হয়ে গিয়ে এক মূহুর্তের মধ্যে তাদের মন খুশিতে ভরে উঠবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
বহু বছর আগেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্কুল কলেজের অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক পার্শ্ব শিক্ষকেরা তাদের প্রাপ্য বেতনের পরিমাণ বাড়ানোর দাবিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তখন ওই শিক্ষকদের কথায় কর্নপাত না করায় তৎকালীন তৃণমূল নেত্রী অর্থাৎ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সব পার্শ্ব শিক্ষকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি যদি কোনো দিন মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসেন তাহলে সেই মূহুর্তে ই তিনি রাজ্যের সকল পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী তাদের বেতনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেবেন।
কিন্তু ওই যে মানুষ ক্ষমতায় আসার আগে একরকম থাকে আর ক্ষমতায় এলে আরেক রকম হয়ে যায়। ক্ষমতায় আসার আগে সে কাকে কি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তখন আর সেই কথা সে মনে রাখে না। এক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই হল আমাদের রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকদের পূর্বে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বেতনের পরিমাণ বাড়ালেও সেভাবে বাড়াননি। তাই এই নিয়ে একাধিকবার তারা কলকাতায় আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন। এমনকি গত বছর বিকাশ ভবনের সামনে এই বেতন বৃদ্ধির দাবিতে একদল পার্শ্ব শিক্ষক যখন আন্দোলন করছিলেন তখন সেই আন্দোলনরত অবস্থায় বেশ কিছু পার্শ্ব শিক্ষিকা বিষপান করেন। তারপর যদিও করোনা অতিমারী পুনরায় ছড়িয়ে পড়ার কারণে তাদের সেই আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে।
বেশ কিছুদিন আগে বারাসাতের বর্তমান বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী এক জনসভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন যে স্কুল কলেজের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক বা পার্শ্ব শিক্ষকেরা হলেন হুবহু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসা জুনিয়র শিল্পীদের মতো। যাদের ছাড়া সবকিছু অসম্পূর্ণ হলেও যাদেরকে সারাজীবন অবহেলিত হয়েই জীবন কাটাতে হয়। বিধায়কের করা এই মন্তব্য যে খুব একটা ভুল নয় বরং যথার্থই তা বলাই বাহুল্য।
তবে যেহেতু সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন তাই নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখতে রাজ্য সরকার বিধায়কের এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী তাদের ন্যায্য বেতন দেওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই শুরু করে দেবেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।